↬ শিক্ষকের মর্যাদা
ভূমিকা : শিক্ষা হচ্ছে জাতির প্রধান চালিকাশক্তি। শিক্ষাহীন মানুষ পশুর
সমান। কারণ, শিক্ষা মানুষকে কর্মদক্ষ ও সচেতন নাগরিক হতে সাহায্য করে। পৃথিবীতে
যে জাতি যত শিক্ষিত, সে তত উন্নত। শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতিই মাথা উঁচু করে
দাঁড়াতে পারে না। আত্মশক্তি অর্জনের প্রধান উপায় শিক্ষা। আর এ কাজটি করেন
শিক্ষক। তাই শিক্ষকের মর্যাদা অনেক।
শিক্ষাগুরু : 'শিক্ষা' মানে অভ্যাসচর্চা প্রভৃতি দ্বারা আয়ওকরণ,
বিদ্যাচর্চা, অধ্যয়ন, আর 'গুরু' মানে উপদেশক, শিক্ষক, ওস্তাদ, মাননীয় ব্যক্তি
ইত্যাদি। মেরুদণ্ড ছাড়া যেমন কোনো প্রাণী উঠে দাঁড়াতে পারে না, তেমনি শিক্ষা
ছাড়া কোনো জাতির পক্ষেই পৃথিবীতে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো স নয়। নিরক্ষর মানুষ
সমাজের জন্য শুধু বোঝা নয়, দেশের অগ্রগতির পথেও বাধাস্বরূপ। শিক্ষাদানের মাধ্যমে
এই বোঝা ও বাধা দূর করার কাজটি যিনি করেন, তিনিই শিক্ষক বা শিক্ষাগুরু। জাতিকে
তিনি নিজের মেধা ও শ্রম দিয়ে মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলেন। তাই শিক্ষক বা
শিক্ষাগুরুর মর্যাদা অনস্বীকার্য।
শিক্ষাগুরুর সেবা : শিক্ষক বা শিক্ষাগুরুর সেবা করা প্রতিটি শিক্ষার্থীর
কর্তব্য। প্রসঙ্গক্রমে বলা যায়, দিল্লির বাদশাহ আলমগীরের পুত্রকে পড়াতেন একজন
শিক্ষক। একদিন সকালে শাহজাদা একটি পাত্র হাতে নিয়ে পানি ঢালছিল আর শিক্ষত সেই
পানিতে নিজের হাতে পা পরিষ্কার করছিলেন। এভাবে শাহজাদা আনন্দচিত্তে শিক্ষকের সেরা
দূর থেকে দেখেছেন বাদশাহ আলমগীর। এতে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না।
শিক্ষকের প্রতি বাদশাহ আলমগীরের অনুভূতি : বাদশাহ আলমগীর প্রত্যাশা
করেছিলেন, তাঁর সন্তান পানি ঢেলে নিজ হাতে শিক্ষকের ধুয়ে দেবে। তবেই না তাঁর
সন্তান নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও দেশপ্রেম নিয়ে দেশের একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে
উঠবে। বাদশাহ উপলব্ধি করেছিলেন, ছাত্র তাঁর শিক্ষককে যথাযথ মর্যাদা দিতে জাম
শিক্ষকের। সেবা করতে জানে না, সে কখনো পরিবার, সমাজ, দেশের উপযোগী মানুষ হিসেবে
গড়ে উঠতে পারে না। বাদশাহ আলমগীর তাই দূত পাঠিয়ে শিক্ষককে ডাকলেন।
শিক্ষকের মনোবল : বাদশাহর খাসকামরায় ডাক পেয়ে শিক্ষক প্রথমে ভাবছিলেন,
শাহজাদার হাতে-পায়ে পানি নেওয়ার কারণে আজ তাকে শাস্তি পেতে হবে। আবার তিনি
ভাবলেন, প্রাণ যায় যাবে, একজন শিক্ষকের প্রাণের চেয়ে মর্যাদা অনেক বড়। এই
মনোবল নিয়েই বাদশাহর কাছে হাজির হলেন শিক্ষক। কিন্তু বাদশাহ যা বললেন, তাতে
শিক্ষাগুরুর মর্যাদাই প্রতিষ্ঠিত হলো। বাদশাহ বললেন :
‘নিজ হাত যবে চরণ আপনি করেন প্রক্ষালন,
পুত্র আমার জল ঢালি শুধু ভিজাইছে ও চরণ।
নিজ হাতখানি আপনার পায়ে বুলাইয়া সযতনে
ধুয়ে দিল না'ক কেন সে চরণ, বড় ব্যথা পাই মনে।’
শিক্ষাগুরুর মর্যাদা : শিক্ষক সমাজের সবার চেয়ে শ্রেষ্ঠ। মর্যাদার দিক
থেকে আর কেউ তার সমকক্ষ নয়। ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতায়ও এভাবেই
শিক্ষকের মর্যাদার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। একজন আদর্শ শিক্ষকের কাছে সবাই
সমানভাবে শিক্ষা পায়। তাই সমাজে শিক্ষকের মর্যাদা সবার উপরে। তাই
‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতায় শিক্ষকের কাছে উচ্চারিত হয়েছে-
‘আজ হতে চির উন্নত হলো শিক্ষাগুরুর শির
সত্যই তুমি মহান উদার বাদশাহ আলমগীর।’
উপসংহার : শিক্ষা হলো একটি জাতির মেরুদণ্ড। আর শিক্ষক হলেন তার কাণ্ডারি।
তিল তিল করে নীরবে নিভৃতে শিক্ষক তার আদর্শ দ্বারা জাতীয় আকাঙ্ক্ষার উপযোগী
ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তোলেন। সমাজ ও দেশের জন্য শিক্ষকের অবদান অপরিসীম। তাই
সমাজে শিক্ষকের মর্যাদা সবার উপরে।
আরো দেখুন :
Best
ReplyDeleteThanks for the composition
ReplyDeleteThanks
ReplyDeletenice
ReplyDeletenice
ReplyDeleteThanks for this PDF
ReplyDelete