শিক্ষাঙ্গন সন্ত্রাসমুক্ত করার উপায় সম্পর্কে পরামর্শ জানিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশের উপযোগী একটি
পত্র লেখো।
২৭ই আগস্ট, ২০১৮
সম্পাদক
প্রথম আলো
১০০ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ
কারওয়ান বাজার, ঢাকা ১২১৫
মহাত্নন
পাঠাকপ্রিয়তা ধন্য দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা 'দৈনিক প্রথম আলো'য় প্রকাশের জন্য
শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস সম্পর্কিত কিছু কথা, ও এর থেকে মুক্তির উপায় শীর্ষক
প্রস্তাবনা নিম্নে প্রেরিত হলো। অনুগ্রহ করে পত্রটি প্রকাশ করে আপনার সাহসী
ভূমিকার পুনরাবৃত্তি ঘটাবেন বলে আশাকরি।
বিনয়াবত
ফারহানা ইশতিয়াক
শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস : শেষ কোথায়
শিক্ষাঙ্গন একটি পবিত্র স্থান। কিন্তু সন্ত্রাসের কারণে এই পবিত্র স্থান আজ
কুলষিত। প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনে আজ সন্ত্রাসের পদধ্বনি। গুটিকতক পেশীবাজ অশিক্ষিতের
দাপটে শিক্ষাঙ্গনের মতো পবিত্র তীর্থস্থান কলঙ্কের কালিমালিপ্ত। হাজার হাজার
নিরীহ মেধাবী মুখ আজ সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি। সন্ত্রাসের তান্ডবে প্রতিটি সচেতন
অভিভাবক আজ শঙ্কিত। তাদের মনে মুর্তিমান জিজ্ঞাসা,আমার সন্তান নিরাপদে বাড়ি ফিরবে
তো? হয়তো ফিরে কেউ কেউ, হয়তো কেউ বা রাজপথে হাজার কাগজ-কলম ফেলে রেখেই চিরনিদ্রায়
শায়িত হয়। অন্যদিকে নষ্ট রাজনীতির খপ্পরে পড়ে অনেক মেধাবী ছাত্র নিজেই হয়ে উঠেছে
সন্ত্রাসী। আমাদের রাজনৈতিক সংগঠনগুলো নিজেদের হীন স্বার্থ উদ্ধারের জন্য ব্যবহার
করছে ছাত্রদের। ফলে অনেক ছাত্র কলম ছেড়ে তুলে নিচ্ছে অস্ত্র। অধ্যায়ন ছেড়ে
ছাত্ররা জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে। আর শিক্ষাঙ্গন ভরে
উঠেছে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি আর মারামারিতে। ফলে শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম
ব্যাহত হচ্ছে। নকলবাজদের বাধা দিয়ে শিক্ষক হচ্ছেন প্রহৃত-লাঞ্চিত। ছাত্রীরা
হচ্ছে নানা গঞ্জনার শিকার। কখনও বা মেধাবী কোনো সুন্দরী ছাত্রীকে এসিডদগ্ধ করা
হচ্ছে। উচ্চশিক্ষার পাদপিঠ বিশ্ববিদ্যালয় সন্ত্রাস কবলিত হয়ে অনির্দিষ্টকালের
জন্য থাকছে বন্ধ। সেশন জটের জটিল-আবর্তে আটকে যাচ্ছে একজন শিক্ষার্থীর জীবনের
মূল্যবান সময়। সন্ত্রাসীরা অবাঞ্চিত ঘোষিত হোক শিক্ষার পবিত্র আঙ্গনে। সমাজ ওদের
বয়কট করুক। কিন্তু কিভাবে?
সন্ত্রাস নির্মূলে আমি নিম্নরূপ সুপারিশমালা পেশ করছি:
১. ছাত্র রাজনীতিকে দলীয় লেজুরবৃত্তি থেকে মুক্ত করে কল্যাণকর দৃষ্টিভঙ্গির
রাজনীতির চর্চা করতে হবে।
২. শিক্ষাঙ্গনকে সন্ত্রাসমুক্ত এলাকা বলে সরকারিভাবে ঘোষণা করতে হবে।
৩. আইনের ফাঁক গলিয়ে সন্ত্রাসীরা যাতে মুক্তি না পায় তার জন্যে কঠোর আইন প্রণয়ন
করতে হবে। শুধু প্রণয়ন নয়, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রেও আন্তরিক হতে হবে।
৪.জনমত সৃষ্টি করে সন্ত্রাসিদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।
৫. ছাত্র নামধারী কারোর সন্ত্রাসে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তার ছাত্রত্ব
বাতিল করে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করতে হবে।
আশাকরি উপরিউক্ত ব্যবস্থাদি গ্রহণের মাধ্যমে সন্ত্রাস চিরতরে নির্মূল হবে। এ
ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কামনা করি।
ফারহানা ইশতিয়াক
বনলতা ভবন, দেবিদ্বার, কুমিল্লা।