শুধু পড়াশোনাতে কিছু হয় না; বাজনার বোল লোকে, বেশ মুখস্ত বলতে পারে; হাতে আনা বড় শক্ত।
মূলভাব : কেবল মুখে মুখে সঙ্গীত রচনা করা সহজ হলেও হাতে-কলমে তার উপস্থাপনা বড়ই কঠিন। তেমনি কেবল পুঁথিগত বিদ্যা জাতির জন্য কোনো সুফল বয়ে আনে না যদি না তার কোনো ব্যবহারিক প্রয়োগ থাকে।
সম্প্রসারিত ভাব : বাস্তব পৃথিবী ও পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্কহীন পুঁথিগত বিদ্যা জীবনে সর্বতোভাবে ব্যর্থ। কাজেই দেশের শিক্ষা ব্যকথা হওয়া উচিৎ কর্মমুখী, বাস্তবভিত্তিক ও সৃজনশীল। শিক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের জাতীয় জীবনে চলছে এক ভয়াবহ মহামণ্ডূক। বিজাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় না ঘটে আমাদের আত্মার উদ্বোধন না ঘটে আমাদের প্রাণ ধারণের রুজি রোজগারের সম্মান। ইংরেজ সম্প্রদায় তার সম্রাজ্যবাদ ও বাণিজ্যিক স্বার্থে এদেশের সনাতন শিক্ষাব্যবস্থার ধ্বংস সাধন করে তার ওপর যে পাশ্চাত্য শিক্ষার ইমারত তৈরি করে, তা হলো প্রকৃতপক্ষে কেরানী গড়ার কারখানা। এ শিক্ষায় নেই আত্মিক জ্ঞানের উদ্বোধন, নেই অন্ন বস্ত্রের সংস্থান নেই নতুন সৃষ্টির সম্ভবনা। তাই এ যেন এক দুর্বহ বিজাতীয় বোঝা। এই বিজাতীয় বোঝা যেন জাতির বুকের ওপর চেপে বসে থাকা এক জগদ্দল পাষাণভার। আমাদের সমাজ ও জাতীয় জীবনের সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে সঙ্গতিহীন এই শিক্ষাকে আমাদের দেশের তরুণ সমাজ বিজাতীয় চাপে গলাধঃকরণ করছে, কিন্তু তা আত্মস্থ হয় নি; মুখস্থ করছে কিন্তু তা জীবনের কোনো কাজে লাগে নি। আমাদের শিক্ষাকে পুঁথির পাতা থেকে আমাদের জীবনের ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে, এবং সে শিক্ষা হবে প্রয়োজনানুপাতিক, বাস্তবভিত্তিক ও সৃজনশীল।
মন্তব্য : পুঁথিগত শিক্ষা নয় বাস্তব জীবনভিত্তিক শিক্ষাই হলো আসল শিক্ষা। এ শিক্ষা আমাদের সৃজনশীল ও ব্যবহারিক প্রয়োজনে কাজে আসবে।