সম্প্রতি অনুষ্ঠিত একটি বৃক্ষমেলার ওপর প্রতিবেদন লিখো।
নেত্রকোণায় সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষমেলা
তানজিরুল আজিম : নেত্রকোনা : গত ২০ শে অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর
পর্যন্ত নেত্রকোনায় বৃক্ষমেলা অনুষ্ঠিত হয়। বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে অনুষ্ঠিত এ
মেলায় ৫৫টি স্টল অংশগ্রহণ করে। এ মেলা সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া
জাগায়। দর্শকরা বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং বিভিন্ন বৃক্ষের চারা সম্পর্কে
অবহিত হন। মেলায় বিভিন্ন চারা বিক্রির ব্যবস্থাও ছিল।
মেলা উপলক্ষে আলোচনা সভা, মত বিনিময় সভা এবং সঙ্গীতানুষ্টানেরও আয়োজন করা হয়।
জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে গত ২০শে অক্টোবর অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি
হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী
জনাব ‘ক’ সাহেব। বিশেষ অতিথি ছিলেন, বন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ‘খ’। আলোচনায় অংশ
নেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক জনাব ‘গ’, পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের
সাধারণ সম্পাদক জনাব ‘ঘ’ নেত্রকোনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জনাব ‘ঙ’, আদর্শ
কৃষক জনাব ‘চ’। স্বাগত বক্তব্য দেন সদর উপজেলায় কৃষি অফিসার ‘ছ’।
প্রধান অতিথির ভাষণে বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী জনাব ‘ক’ বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য
রক্ষায় বৃক্ষ রোপণের বিকল্প নেই। বৃক্ষমেলা জনগণকে বৃক্ষরোপণ করতে ব্যাপকভাবে
উদ্বুদ্ধ করতে পারে। 'গাছ লাগান দেশ বাঁচান'- এই হচ্ছে স্লোগান। এ শ্লোগানকে
বাস্তব রূপ দিতে হবে। বেশি বেশি বনজ, ফলজ ওষধি গাছ রোপণ করতে হবে। পরিবেশের
ভারসাম্য রক্ষায় এবং সুস্থ জীবন যাপনের জন্যে এটি অপরিহার্য। তিনি বলেন,প্রতিটি
দেশে কমপক্ষে শতকরা ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা দরকার,সবচেয়ে ভালো শতকরা ২০ ভাগ বনভূমি
থাকলে। কিন্তু আমাদের দেশে মাত্র শতকরা ১২ ভাগ বনভূমি রয়েছে। পরিবেশ দূষণ রোধ
করতে হলে,দেশকে এবং দেশের মানুষকে বাঁচাতে হলে আমাদের দেশে শতকরা ৩০ভাগ বনভূমির
লক্ষমাত্রা পূরণ করতে হবে।
বন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব ‘খ’ বলেন- আমাদের নিশ্বাঃসের সঙ্গে রয়েছে সম্পর্ক।
প্রাণভরে শ্বাস নিতে হলে চাই বেশ বেশি বৃক্ষ এজন্যে বেশি বেশি বৃক্ষ রোপণ
করা দরকার। ‘এক একটি গাছ এক একটি অক্সিজেন ফ্যাক্টরি’- এটি শুধু কথায় কথা নয়;
বাস্তবেও সত্য। বৃক্ষ রোপণের মাধ্যমে সবুজ শ্যামল বাংলাদেশের নিসর্গের মহিমা
বাড়াতে হবে, সৃষ্টি করতে হবে পরিবেশ সহায়ক জনপদ, যেখানে আমরা সুস্থ সুন্দরভাবে
বাঁচব।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগে উপ-পরিচালক ‘গ’ বলেন- বৃক্ষমেলা জনগনের মধ্যে ব্যাপক সাড়া
জাগিয়েছে। জনগণ বৃক্ষ রোপণের ক্ষেত্রে বেশ উৎসাহী হয়ে উঠেছেন। দেশে আরো নার্সারির
সংখ্যা বাড়াতে হবে।
জনাব ‘ঘ’ বলেন- বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে বৃক্ষ
রোপণের কোন বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে বৃক্ষ মেলার একটি সূদুরপ্রসারী ভূমিকা পালন
করতে পারে।
জনাব ‘ঙ’ তাঁর বক্তব্যে বৃক্ষ মেলার সাফল্যের জন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে
বলেন, বৃক্ষ মেলার প্রয়োজনীয়তা এবং বৃক্ষ রোপণের জন্যে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে
দেশের গণমাধ্যম গুলো প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে আসছে। জনাব ‘চ’ তাঁর বেশ কয়েকটি
নার্সারি গড়ে তোলার কথা উল্লেখ্য করে বলেন, গাছ লাগিয়ে নিজে যেমন লাভবান হওয়া
যায়, দেশকেও সমৃদ্ধ করা যায়।
সভাপতির ভাষণে জেলা প্রশাসক জনাব ‘জ’ বৃক্ষ রোপণ অভিযানের উপর গুরুত্ব আরোপ করে
বর্তমান সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তার একটি চিত্র তুলে ধরেন। পরিবেশ সংরক্ষণে
বৃক্ষ রোপণের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষ একটি করে গাছ লাগালেও
১৪ কোটি গাছ হয়ে যাবে, যা আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ইতিবাচক ভূমিকা পালন
করবে।