প্রতিবেদন : পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব (পত্রিকার জন্য)

মনে করো, তুমি তাপস 'দৈনিক ইত্তেফাক' পত্রিকার একজন প্রতিনিধি। পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব বর্ণনা করে পত্রিকায় প্রকাশের জন্য একটি প্রতিবেদন তৈরি করো।


পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব


তাপস : দৈনিক ইত্তেফাক : প্রাচীন অস্তিত্ব ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গাছপালার কোনো বিকল্প নেই। গাছ প্রস্বেদন প্রক্রিয়া ও বাষ্পীভবনের মাধ্যমে আবহাওয়া বিশুদ্ধ রাখে, মাটির উর্বরতা বাড়ায়, মাটির ক্ষয়রোধ করে, ঝড় ঝঞ্চা থেকে রক্ষা করে প্রাকৃতিক, বন্যা প্রতিরোধ করে। অর্থাৎ মানুষের বসবাস উপযোগী ভারসাম্যপূর্ণ পৃথিবী বৃক্ষেরই অবদান।

একটি দেশের মোট ভূ ভাগের ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা প্রয়োজন। কিন্তু সরকারি হিসাব অনুযায়ী আমাদের বনভূমির পরিমাণ ১৮ শতাংশ। বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাংশ সুন্দরবনকে বাদ দিলে বন বলতে যা অবশিষ্ট থাকে তা ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউটের মতে, মাত্র ৫ শতাংশ। দিন দিন জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এ বনভূমির পরিমাণ আরও হ্রাস পাচ্ছে। 

বনভূমির এ আশঙ্কাজনক হ্রাস আমাদের পরিবেশে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে। বাতাস দূষিত হচ্ছে, ক্ষয় হচ্ছে মাটি। পর্যাপ্ত বনভূমি  না থাকায় অনাবৃষ্টি দেখা দিচ্ছে। ফলে দ্রুত কমে যাচ্ছে ভূ গর্ভস্থ পানির স্তর। আমাদের নগর জীবন থেকে যেন ছায়াশীতল স্নিগ্ধতা একেবারেই হারিয়ে গেছে। এক্ষেত্রে পরিকল্পিত বনায়নের বিকল্প নেই। 

প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে দেশকে বাঁচানো ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বনায়নের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আর বনায়নের জন্য প্রয়োজন জনগণকে সচেতনতা ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। জাতীয় গণমাধ্যমগুলো এ ব্যাপারে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখতে পারে। আর গ্রামের দিকে তদারকি করার জন্য ওয়ার্ড মেম্বারের নেতৃত্বে শিক্ষক, সমাজকর্মী, মসজিদের ইমাম প্রমুখের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করতে হবে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও এ মহতী উদ্যোগের অংশীদার করতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস। 

জীবনের জন্য, জীবিকার জন্য বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। তাই বৃক্ষরোপণের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিবেচনায় এনে জাতীয়ভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post