বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা
বর্তমান সভ্যসমাজে শিক্ষা ব্যতীত বিকল্প কোনো পথ নেই। অন্তত একটা সাধারণ মানের শিক্ষা গ্রহণ করা প্রতিটি নাগরিকের কর্তব্য। বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। গণতন্ত্রের আসল কার্যকারিতা বুঝতে হলে আমাদের প্রত্যেকেরই অক্ষরজ্ঞান লাভ করতে হবে। তাই প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা একান্ত প্রয়োজন। একজন নাগরিককে সমাজজীবনে বাস করতে হলে ভাষা, শিক্ষা, দৈনন্দিন হিসাব পত্র, স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও জীবন সম্পর্কে যেসব প্রাথমিক জ্ঞান থাকা দরকার তাই প্রাথমিক শিক্ষা। এ শিক্ষা তার জ্ঞান, দৃষ্টিভঙ্গি, দক্ষতা ও মূল্যবোধের বিকাশে সহায়ক। সরকার ১৯৯২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তন করেন। সরকারের বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তনের এই আইনে বলা হয় বাংলাদেশে বসবাসরত প্রত্যেক অভিভাবককে তাদের বিদ্যালয়গামী শিশুকে অবশ্যই বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে হবে এবং পাঁচ বছর মেয়াদি প্রাথমিক শিক্ষা অবশ্যই শেষ করতে হবে। এই আইনে আরও বলা হয়েছে বিদ্যালয়গামী শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কেউ কোনোরূপ বাধার সৃষ্টি করতে পারবে না। বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নের জন্য সরকার দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিন্ডারগার্টেন ও অন্যান্য সমমানের বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে পাঠ্য পুস্তক সরবরাহ করছেন। তাছাড়া সরকার প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাকে অবৈতনিক ঘোষণা করেছেন। সরকার বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নের জন্য নানা রকম সাংগঠনিক ও পরীক্ষণ কর্মসূচিও হাতে নিয়েছেন। তার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন পর্যায়ে কমিটি গঠন এবং পর্যবেক্ষণ। সরকার বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষাকে আকর্ষণীয় করার জন্য পরিপূরক কর্মসূচি হিসেবে শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। যা ফলপ্রসূ হবে বলে আশা করা যায়। বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা আমাদের জন্য একটা অনন্য আশার আলো বয়ে এনেছে। আমাদের দেশকে নিরক্ষরতার অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে যাওয়ার এটাই একমাত্র পথ। অগ্রযাত্রার পথ অবারিত থাকুক, প্রশস্ত হোক এটাই আমাদের কাম্য।
আরো দেখুন :
রচনা : বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষাঅনুচ্ছেদ : প্রাথমিক শিক্ষা