‘বিপদে হাল ছেড়ো না' শিরোনামে একটি খুদে গল্প লেখো।
বিপদে হাল ছেড়ো না
আলতাফ রহমান আজ 'রিনি এন্ড কোং' কর্ণধার। বহু কষ্ট, বহু পরিশ্রমের পর আজ তিনি এই
অবস্থানে পৌঁছেছেন। অতীত জীবনের কথা মনে পড়লে আজও তিনি স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন।
ভুলতে পারেন না সেই সকল দিনের কথা, যে সকল দিনে তাকে আধপেট খেয়ে থাকতে হতো।
আলতাফ রহমান ভাবতে ভাবতে ফিরে গেলেন তার শৈশবের দিনগুলিতে। তিনি যখন ছোট ছিলেন
তখন তার বাবা মারা যান। অল্প বয়সেই বাবাকে হারিয়ে তার মা বিপদে পড়ে যায়। তেমন
কোনো অর্থও কড়িও ছিল না। বাবাও সঞ্চয় হিসেবে তেমন কিছু রেখে যাননি। মা অন্যের
বাড়িতে কাজ করে আলতাফকে পড়ালেখা শিখিয়েছেন। কখনো কখনো ঠিকমতো খেতেও পেত না।
মাকে সাহায্য করার জন্য এসএসসি পাশ করার পর থেকেই গ্রামের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের
পড়ানো শুরু করেন। অল্প অল্প যা টাকা পয়সা পেত তা দিয়েই নিজের পড়ার খরচ চালানো
শুরু করেন। বহু পরিশ্রমের পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। তখন
থেকেই তার জীবনের আরেক লড়াই শুরু হয়, লক্ষ্য ছিল একটাই নিজে ভালো থাকা, মাকে
ভালো রাখা। পড়ালেখা শেষ করে সবাই যখন চাকরির পিছনে ছুটছিলো তখন আলতাফ ঠিক করে
নিজের পায়ে দাঁড়াবে। আগে থেকে জমিয়ে রাখা কিছু অর্থ এবার ব্যবহার করা শুরু
করে। ছোট ব্যবসায় শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় সে। একটি দোকান খুলে সেখানে নিজের
পাশাপাশি আরো দুজন ছেলেকেও সাথে নেয়। ফলে আরো দুজন ছেলেরও কর্মসংস্থান হয়। আজ
তার সেই ছোট দোকানটি বড় কোম্পানীতে পরিণত হয়েছে। এই সাফল্য তার একদিনের আসেনি।
বহু ঘাত প্রতিঘাত পার হয়ে আজকে পর্যায়ে আসতে হয়েছে তাকে। জীবনে বহু
উত্থানপতনের মুখোমুখি হয়েছে আলতাফ। তবুও তিনি হাল ছাড়েননি। তিনি কোনোভাবেই ভেঙে
পড়েননি। আজ তিনি সফল ব্যক্তি। সন্তানদেরও তিনি তার সফলতার গল্প শোনান। তাদেরকে
তিনি বুঝিয়ে বলেন, জীবনে যত কষ্টই হোক না কেন বিপদে হাল ছাড়তে হয় না।
একাগ্রতার সাথে কাজে লেগে থাকলেই সফলতা আসে।