'বন্ধুত্ব' বিষয়ে একটি খুদে গল্প রচনা করো :
বন্ধুত্ব
হোস্টেলের বিছানায় একা কাতরাতে থাকে সজীব। দুপুর থেকেই শরীরটা খারাপ লাগছিল।
সন্ধ্যার পর জ্বর যেন একেবারে জেঁকে বসেছে। সমস্ত শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা, আর
জ্বরে যেন গা পুড়ে যাচ্ছে। এদিকে পরীক্ষা শেষ বলে সবাই যে যার বাড়িতে চলে
গেছে। কিন্তু বাসে, ট্রেনে কোথাও তাৎক্ষণিক টিকিট পায়নি বলে বাধ্য হয়ে সজীবকে
শনিবার পর্যন্ত থাকতে হচ্ছে। এর মধ্যে হঠাৎ জ্বরটা যেন মহাবিপত্তি ঘটাল এই
জনমানবহীন হোস্টেলে। জ্বরের প্রভাবে এক সময় প্রায় অচেতন হয়ে পড়ে সজীব। হঠাৎ
তার চৈতন্য ফিরে আসে বন্ধু রাকিবের ডাকাডাকিতে। রাকিব এদিকে এসেছিল কী একটা
কাজে। সজীবের সাথে গল্প করতে এসে দেখে বিছানায় পড়ে আছে সে। বন্ধুর গায়ে হাত
দিয়ে উত্তাপের আধিক্যে অবাক হয়ে যায় রাকিব। উৎকণ্ঠিত গলায় বলে, 'একি অবস্থা
তোর! জ্বরে তো শরীর পুড়ে যাচ্ছে।' রাকিব আর কালবিলম্ব না করে বন্ধুর মাথায়
পানি ঢালার ব্যবস্থা করে। সেবা শুশ্ৰূষা করে একটু সুস্থ হবার পর তাকে নিয়ে
যায় ডাক্তারের কাছে। এরপর সারারাত আর ঘুমায়নি রাকিব। বন্ধুর মাথায় পানি
ঢেলেছে, ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিয়েছে, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী
নির্দিষ্ট সময় পরপর খাবার ও ওষুধ দিয়েছে। পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত
বন্ধুর সাথে হোস্টেলে থেকে যায় সে। বন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞতা আর ভালোবাসায়
আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে সজীব। সে ভাবে, যাকে কখনোই সে অতটা কাছের ভাবেনি, সেই
কিনা তার বিপদে এভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল। জীবনের বাস্তবতায় সজীব
উপলব্ধি করে, বিপদের সময় যাকে পাশে পাওয়া যায় সেই তো প্রকৃত বন্ধু। হয়ত
এজন্যই যুগে যুগে বন্ধুত্বের জয়গান ধ্বনিত হয়েছে।