'অতি চালাকের গলায় দড়ি' শিরোনামে একটি খুদে গল্প রচনা করো:
অতি চালাকের গলায় দড়ি
গ্রামের নাম হরিপুর। সেই গ্রামে জব্বার নামে এক কৃপণ বাস করতেন। তার টাকা-পয়সার
কোনো অভাব ছিল না। কিন্তু বাজার করতে গেলেই সবসময় কম দামের জন্য অপেক্ষা করতেন।
বাজারে সবজিওয়ালারা যখন জিনিসপত্র বিক্রি করতে করতে শেষের দিকে বাড়ি যাবার জন্য
তাড়াহুড়ো করতেন তখন জব্বার সাহেব কম দামে সবজি কিনতেন। এভাবে সন্ধ্যার পর মাছের
দামও কমে যেত। কারণ সেই সময় মাছ কেনার জন্য লোক থাকত না। মাছ রেখে দেবার জিনিস
নয় তাই একটু কম দাম পেলেও মাছওয়ালাকে মাছ বিক্রি করতেই হতো। জব্বার সেই সুযোগ
নিতেন।
একদিন বিকেলে জব্বার সাহেব বাজারে চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। সেদিন মাছ
কেনার কোনো পরিকল্পনা তার ছিল না। বসে বসে বাড়ি যাবার কথাই ভাবছিলেন জব্বার।
কিন্তু এর মধ্যেই স্ত্রীর কাছে থেকে ফোন আসে জব্বার সাহেবের। তার স্ত্রী বলে,
বাড়িতে মেহমান এসেছে। রান্না করার মতো তেমন কিছু নেই। তাই জরুরিভিত্তিতে মাছ
কিনে নিয়ে আসতে হবে।
জব্বার মাছের বাজারের দিকে যান। মাছওয়ালাদের মাছের দাম জিজ্ঞাসা করেন। কিন্তু
মাছের দাম হয়তো কমবে এই ভেবে অপেক্ষা করতে থাকেন জব্বার সাহেব। বিভিন্ন জায়গায়
ঘুরে ঘুরে মাছের দাম জিজ্ঞাসা করতে করতে সময় কাটান তিনি। স্ত্রী জরুরিভিত্তিতে
মাছ নিয়ে যেতে বললেও জব্বার বরাবরের মতো অপেক্ষা করতে থাকেন। ভাবতে থাকেন,
সন্ধ্যা হলেই আর মাছ কেনার লোক পাওয়া যাবে না। তখন এমনিতেই মাছের দাম কমে যাবে।
সন্ধ্যা হয়ে এলে আবার মাছের বাজারে ঢোকেন জব্বার। কিন্তু গ্রামের বাইরে থেকে
কিছু লোক মাছ কিনতে আসায় মাছের চাহিদা বেড়ে যায়। সাথে সাথে মাছের দামও বেড়ে
যায়। এদিকে জব্বার সাহেবের স্ত্রীও বারবার তাড়া দিচ্ছেন। প্রতিদিনের মতো দাম না
কমায় বাধ্য হয়ে জব্বার সাহেবকে বেশি দামে মাছ কিনতে হয়। সেজন্যই কথায় বলে,
‘অতি চালাকের গলায় দড়ি।’