অনুচ্ছেদ : ছাত্রজীবন

ছাত্রজীবন


শিক্ষার কোনো নির্দিষ্ট বয়স নেই। আমৃত্যু মানুষ শিক্ষালাভ করে থাকে। কিন্তু মানুষের সম্পূর্ণ জীবনটাকেই ছাত্রজীবন বলে না। ছাত্রজীবনের নির্দিষ্ট কতকগুলো ক্ষেত্র রয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের স্কুল কলেজে ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত জীবনকেই ছাত্রজীবন বলে। শিক্ষার্থীগণ যখন পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞানার্জনের জন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করে থাকে, তখন তাদের জীবনই হলো ছাত্রজীবন। ছাত্রজীবনই হলো মানুষের ভবিষ্যৎ গঠনের জন্য সর্বোত্তম সময়। তাই সমগ্র জীবন পরিসরে এই জীবনের মূল্য অত্যধিক। মানুষের জীবনটা যদি একটি বৃক্ষ হয় তাহলে ছাত্রজীবনটা হলো সেই বৃক্ষের মূল। মূল যত শক্ত হবে বৃক্ষও তত মজবুত হবে। ঝড়ে বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে সে গাছ উপড়ে পড়বে না। মানুষের জীবনও সেরূপ, ছাত্রজীবন যত উন্নত হবে ভবিষ্যৎ জীবনের ভিতও তত মজবুত হবে। সমাজের নানা বাধা-বিপত্তি তাকে টলাতে পারবে না। সুতরাং ছাত্রজীবনটাই সবচেয়ে মূল্যবান। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অধ্যয়নই হলো প্রধান তপস্যা। তাদের আহার-বিহার, কাজ-কর্ম সমস্তই এই বিশেষ উদ্দেশ্যে নিয়ন্ত্রিত হয়। কঠোর নিয়মের বন্ধনে শান্ত ও সংযম আবেষ্টনীর মধ্যে তাদের জীবন গড়ে ওঠে। গুরুজনের প্রতি বাধ্যতা, শ্রমশীলতা, নিয়মানুবর্তিতা প্রভৃতি গুণ থাকা তাদের অত্যন্ত জরুরি। এসব গুণ ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে আয়ত্ত করা বিশেষ কিছু নয়, কেবল অভ্যাস সাপেক্ষ। সংযম ছাত্রজীবনের বিশেষ গুণ। ভবিষ্যৎ জীবনে। মনুষ্যত্বের একটি সুনির্দিষ্ট আদর্শ সামনে রেখে অগ্রসর হতে গেলেই সংযম অভ্যাস করা দরকার। খেলাধুলা, ব্যায়াম প্রভৃতির প্রতি ছাত্র ছাত্রীদের যেমন অকৃত্রিম অনুরাগ থাকবে, তেমনই তার প্রকৃত কাজ যে জ্ঞান আহরণ সে কথাও মনে রাখতে হবে। আদর্শ ছাত্রের কর্তব্য বিনয়, নম্রতা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে বিদ্যা অনুশীলন করা। তা না হলে কখনো যথার্থ শিক্ষা লাভ সম্ভব নয়।


আরো দেখুন :
রচনা : ছাত্রজীবন / দেশ ও জাতি গঠনে ছাত্র সমাজের ভূমিকা
রচনা : ছাত্রজীবনে ত্যাগ ও সততার অনুশীলন

1 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post