কলেজে তোমার প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা কর।
কলেজে আমার প্রথম দিন কেটেছিল আনন্দ উচ্ছলতায়। স্কুল জীবনের দশ বছর পার করে
এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হওয়ায় পর থেকেই প্রথম দিনের ক্লাসে উপস্থিত থাকার
অপেক্ষায় ছিলাম। সপ্তাহখানেক সময়ের ব্যবধানে বহু প্রতীক্ষিত সেই দিন উপস্থিত হলো।
আমি আগেই জেনেছিলাম, ঐদিন অনানুষ্ঠানিক পরিচিতি অনুষ্ঠান হবে। সঙ্গে ক্লাস রুটিন,
নবীন ছাত্রদের আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেওয়ার ঘোষণা ছাড়া বিশেষ কোন ক্লাস হবে না।
হয়েছিলও তাই। আমার স্পষ্ট মনে আছে, সেদিন সকাল থেকে কলেজে যাওয়ার প্রস্তুতি
নিচ্ছিলাম। মনের আনন্দে ভালো জামা কাপড় পরে একটি নোটবুক নিয়ে কলেজের উদ্দেশ্যে
বের হলাম। কলেজের কাছাকাছি আসতেও দু একজন পরিচিত মুখ দেখলাম। সবাই কলেজের প্রথম
দিনে, প্রথম ক্লাসের অপেক্ষায় আছি। একটা বড় হলরুমে বিজ্ঞান, মানবিক, বাণিজ্য সব
বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত। প্রথম ক্লাস হবে বাংলা। কমন ক্লাস, সবাই করবে।
এটাই মূল উদ্দেশ্য নয়, মূল উদ্দেশ্য কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয় আমাদের উদ্দেশ্য বিশেষ
কিছু কথা বলবেন। অপেক্ষা করতে হলো না, অধ্যক্ষ সাহেব এলেন তাঁর সঙ্গে কয়েকজন নবীন
প্রবীণ শিক্ষক। তাঁদেরকে হলরুমে ঢুকতে দেখেই আমরা সবাই দাঁড়িয়ে গেলাম। তিনি হাত
ইশারা করে এবং মুখে আমাদের বসতে বললেন। তিনি স্থির হয়ে শিক্ষক মঞ্চে দাঁড়ালেন।
পুরো হলরুমে পিনপতন নীরবতা। তিনি বললেন, 'আজ তোমাদের কলেজের প্রথম দিন। তোমরা এ
কলেজের নবীন, তোমাদের আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেব। তাঁর আগে আজকে
অনানুষ্ঠানিকভাবে তোমাদের সঙ্গে কথা বলছি। স্কুলজীবন এবং কলেজ জীবনের মধ্যে কিছু
পার্থক্য আছে। কলেজ জীবনের আনন্দ ও স্বাধীনতা স্কুলজীবন অপেক্ষা অনেক বেশি, দায়দায়িত্ব সে কারণে অনেক বেশি। কলেজ জীবন নতুনন্ত্বের, বন্ধুর সাহচর্যে আনন্দের,
পাঠের বিশাল জগতে বিচরণের। তোমরা তরুণ। তোমরা তোমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে সেই
আনন্দের জগতে বিচরণ করবে, জ্ঞানের সমুদ্রে অবগাহন করে জীবন সার্থক করবে- এ
প্রত্যাশা করি।' তারপর একজন শিক্ষক রবীন্দ্রনাথের 'ঐক্যতান' কবিতা আবৃত্তি করলেন।
ব্যাখ্যা করে প্রকৃতির সুরের সঙ্গে আমাদেত জীবনের বন্ধন রচনা করলেন। আমরা
মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনলাম। সংক্ষিপ্ত পরিচিতি অনুষ্ঠানের পর, আমাদের প্রত্যেকের
হাতে ফুল এবং একটি করে সুন্দর কলম তুলে দেওয়া হলো। সেই কলমটি এখনও আমার উপহার
বক্সে সংরক্ষিত আছে।
Nice
ReplyDelete