খুদে গল্প : ধুমপানে বিষপান

‘ধুমপানে বিষপান' এই শিরোনামে একটি ক্ষুদে গল্প রচনা কর।

ধুমপানে বিষপান

ধুমপায়ী অমলের ক্যান্সার ধরা পড়ার পর বেশ অসুবিধা হয়। বিশেষ করে পরিবারের। অমলের চিকিৎসা খরচ শেষে আবার সংসার চালাতে অমলের স্ত্রী খুব হিমশিম খাচ্ছে। কতবার করে যে অমলকে সিগারেট খেতে না করেছে তবুও লোকটা কথা শোনেনি। এখন গোটা পরিবার উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে। অমলের স্ত্রী অদিতি জিজ্ঞেস করে— 'আচ্ছা কোন বয়স থেকে তোমার এ বদঅভ্যেস শুরু হয়েছিল বলোতো।' অমল এক গাল হেসে উত্তর দেয়— সেকি আর মনে আছে গো! তা ধরো পঁচিশ-ত্রিশ বছর আগে তো হবেই।' কথাটা শোনার পর অদিতি না হেসে পারে না। অনেক কষ্টর সেই হাসি। পরক্ষণেই সে মন ভার করে রাখে। ডাক্তার বলেছেন, অমলের ফুসফুসে বেশ কালো দাগ পড়েছে। সেগুলো ছোটখাটো কোনো ছিদ্রও হতে পারে। আর এ কারণেই অমলের মাঝে মাঝে শ্বাসকষ্ট হয়। অদিতির যেন চিন্তার শেষ নেই। পাশের ঘর থেকে অমল-অদিতির একমাত্র মেয়ে অন্বেষা মাকে জিজ্ঞেস করে- ‘মা, বাবার কী হয়েছে? বাবা অমন করে হাঁপিয়ে ওঠে কেন?’ মেয়ের এই প্রশ্নে অদিতির বুকটা যেন আবারো ধক করে উঠল। মেয়েকে বলে- ‘ও কিছু নয়। তোর বাবার কিছুই হয়নি। সব ঠিক হয়ে যাবে মা।' অন্বেষা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। তারপর কী মনে করে বাবার কাছে গিয়ে বসে। বাবা মেয়ের গালটা একটু টেনে দিয়ে বলে- কীরে মা, তোর লেখাপড়া কেমন হচ্ছে?’ মেয়ে বলে ওঠে- ‘কিছু হচ্ছে না বাবা। তুমি সুস্থ না হলে কিছুই হবে না।'

ক্যান্সারের কারণে অমলের শ্বাসকষ্টটা বেশ বেড়েছে। দ্রুত তাকে হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়। মাঝে মধ্যে রক্তবমিও করছে অমল। অবস্থা বেগতিক দেখে ডাক্তাররা তার চিকিৎসার জন্য একটা বোর্ড গঠন করে। হাসপাতাল রুমের বাইরে অদিতি ও অন্বেষা মুখ গুমরে কাঁদছে। অন্বেষা বারবার বলছে- ‘বাবা, কেন যে তুমি এই মরণ নেশা ধূমপান করতে? তুমি সুস্থ হয়ে এসো বাবা। তুমি তাড়াতাড়ি সুস্থ হও।' একজন ডাক্তার রুম থেকে বের হতেই অদিতি ছুটে যায়- ‘ডাক্তার সাহেব, কিছু বলুন।' ডাক্তার কোনো কথার জবাব না দিয়ে চলে যায়। একটু পর একের পর এক ডাক্তার রুম থেকে বের হতে থাকে। অদিতি ভয়ে ভয়ে রুমে ঢোকে। রুমে ঢোকার পর সে চিৎকার দিয়ে ওঠে। এরপর আর সে কিছু মনে করতে পারে না। জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যায় মেঝেতে। স্বামীর শোকে সেও অমলের সঙ্গী হয়। মেয়ে অন্বেষা অঝোরে কাঁদতে থাকে বাবা-মায়ের জন্য।

1 Comments

  1. এটা এত লাম্বা পড়া যাবে না ।পড়া গেলেও এটা অনুচ্ছেদ, রচনা নয় এত লাম্বা শিখব

    ReplyDelete
Post a Comment
Previous Post Next Post