দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য একটি মঞ্চ ভাষণ প্রস্তুত কর।
অথবা, দুর্নীতির কারণ ও প্রতিকার শীর্ষক আলোচনা সভার প্রধান বক্তা হিসাবে একটি ভাষণ তৈরি কর।
অথবা, “দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রয়োজন মূল্যবোধের পরিবর্তন” শীর্ষক সেমিনারের উদ্দেশ্যে একখানি মঞ্চ ভাষণ প্রস্তুত কর।
অথবা, দুর্নীতির কারণ ও প্রতিকার শীর্ষক আলোচনা সভার প্রধান বক্তা হিসাবে একটি ভাষণ তৈরি কর।
অথবা, “দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রয়োজন মূল্যবোধের পরিবর্তন” শীর্ষক সেমিনারের উদ্দেশ্যে একখানি মঞ্চ ভাষণ প্রস্তুত কর।
‘দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন’ শীর্ষক বক্তৃতা
‘দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন’ শীর্ষক আলোচনা সভার শ্রদ্ধেয় সভাপতি, সম্মানিত প্রধান
অতিথি, বিশেষ অতিথি ও সমবেত সুধীমণ্ডলী সবাইকে শুভেচ্ছা, অভিন্দন।
দুর্নীতি একটি সামাজিক ব্যাধি, জাতীয় উন্নতির প্রধান অন্তরায়। ফলে বাংলাদেশের
আর্থ-সামাজিক অবস্থা দুর্নীতির কারণে পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে। অ্যামনেস্টি
ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্টে বাংলাদেশ পরপর কয়েকবার বিশ্বে দুর্নীতির শীর্ষে
অবস্থান করেছে।
সুধীমণ্ডলী,
বাংলাদেশের অধিকাংশ অফিস-আদালত দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে। ঘুষ ছাড়া কোথাও কোনো কাজ
হয় না। মাসের পর মাস ফাইল আটকে রাখা হয় ঘুষের আশায়। শুধু সরকারি-বেসরকারি
কর্মকর্তা-কর্মচারী কেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও আজ
ঘুষ-দুর্নীতিতে মারাত্মকভাবে আসক্ত। দুর্নীতির কারণে থানায় আইনি সেবা পাওয়া
যায় না; আদালতের পাওয়া যায় না ন্যায়বিচার। তাই অপরাধীরা নির্বিঘ্নে চালিয়ে
যাচ্ছে তাদের অপরাধযজ্ঞ। অন্যদিকে আমরা যারা নিরীহ জনগণ, পাচ্ছি না সঠিক আইনি
সহায়তা, তদুপরি ঘুষ না দেওয়ার অপরাধে হয়রানির শিকার হচ্ছি।
বর্তমানে খাদ্যদ্রব্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের বাজারে বিরাজ করছে
দুর্নীতি। একদিকে ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে ইচ্ছানুযায়ী বাড়িয়ে চলছে পণ্যের দাম,
অন্যদিকে দোকানিরা ওজনে কম দিচ্ছে, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি করছে। খাদ্যদ্রব্য
বাজারজাতকরণে কোনো নীতিমালা না মেনে অধিক মুনাফার লোভে অর্থলিপ্সু ব্যবসায়ীরা
খাদ্যে ভেজাল দিয়ে দুর্নীতির চরম পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করে চলেছে।
প্রিয় সুধী,
বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রেও দুর্নীতি মারাত্মক আকার ধারণ করছে। স্কুল-কলেজে
ঠিকমতো লেখাপড়া করানো হয় না। শিক্ষকরা ক্লাসে সুষ্ঠুভাবে পাঠদান না করে
প্রাইভেট বা কোচিং ব্যবসায় মেতে উঠেছেন।
সরকারি সেবা সংস্থাগুলোতে দুর্নীতি ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ
শিল্পপতি তথা পুঁজিপতিরা সঠিক হারে আয়কর প্রদান করেন না। তারা আয়ের সঠিক হিসাব
গোপন করে লাখ লাখ টাকার আয়কর ফাঁকি দিচ্ছেন। তাদের এসব দুর্নীতিতে ঘুষের
বিনিময়ে সহায়তা করছেন একশ্রেণির দুর্নীতিবাজ আয়কর কর্মকর্তা।
উপর্যুক্ত দুর্নীতির করাল গ্রাসে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা আজ হুমকির মুখে।
এসব দুর্নীতি প্রতিরোধ করা না গেলে সমাজ তথা দেশের উন্নতি আদৌ সম্ভব নয়।
এক্ষেত্রে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সরকারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
আমাদেরও উচিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো।
তাই আর দেরি না করে আসুন আজই আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হই, দুর্নীতিমুক্ত
সমাজ গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলি।
অসাধারণ লিখে চেন । ধন্যবাদ
ReplyDelete