একটি গোয়েন্দা বিষয়ক (গুপ্তচর) খুদে গল্প রচনা করো।
গুপ্তচর
সেনাপতি কোনভাবে পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করেছেন। পাহাড়ি গিরিপথে হাঁপাতে হাঁপাতে
একটি গাছের ছায়ায় বসে পড়েছেন। পানির প্রচণ্ড পিপাসা পেয়েছে তার। কিন্তু
কোথাও পানির ছিটেফোঁটাও নেই। চোখ বন্ধ করে তন্দ্রাভাবে বসে থাকেন তিনি। এমন
সময় মিষ্টি কণ্ঠে— কোন এক নারী প্রশ্ন করলেন ‘পানি খাবেন’? চমকে ওঠে সেনাপতি!
কে আপনি? প্রশ্ন করতেই হাসে সে নারী। সেনাপতির চোখের পাতা পড়ে না। অপলক
দৃষ্টিতে তাকিয়ে উপভোগ করেন রূপের বাহার। এমন অপরূপা কখনো দেখেননি তিনি। কী এক
মধুর সুগন্ধ ভেসে আসে তার শরীর থেকে। সে ঘ্রাণ যেন পাগল করা ঘ্রাণ। হাত
বাড়িয়ে দেয় নারী। সেনাপতি সে হাত ধরে পিপাসার কথা ভুলেই যায়। রমনী সামনে
হাঁটে আর পিছে সেনাপতি।
পাহাড়ি টিলায় ছোট একটি কুঁড়ে ঘর। রমণী তাকে সেখানে নিয়ে বসায়। আদর
আপ্যায়ন করে। গ্লাসে শরাব ঢেলে দেয়। সেনাপতি সে শরাব পান করে মাতাল হয়ে
ওঠেন। চাওয়া পাওয়ার দোলাচলে তিনি নিজেকে স্মরণ করতে পারেন না। সুহাসিনী রমণী
সঁপে দেয় নিজেকে। সেনাপতি ভুলে গেছেন তিনি পালিয়ে এসেছেন। শত্রু তার পেছনে
লেগে আছে।
সেনাপতি আজগর। এক দুঃসাহসী বীর। চারিদিকে তার ব্যাপক খ্যাতি তবে তার ভয় হচ্ছে
এক জ্যোতিষী তাকে বলেছিল, তিনি ছুরির আঘাতে নিহত হবেন, সমর যুদ্ধে নয়। এবার
যুদ্ধ করতে এসে তার দলের কিছু অসাধু সৈনিকদের বিশ্বাসঘাতকতায় তাকে পরাজিত ও
পালিয়ে আসতে হয়। ঐদিকে শত্রু পক্ষ ঘোষণা করেছে যে আজগরের জীবিত অথবা মৃত লাশ
দিতে পারবে, তাকে রাজ্যের সম্পদের তিনভাগের এক ভাগ দেয়া হবে।
আজগর পালিয়ে যেন আপন নীড়ে ফিরে এসেছেন। সুন্দরী রমণীর সাহচর্যে তিনি নিজের
কোন বিপদ উপলব্ধি করতে পারেন না। আর এই সুযোগেই রমণী তার কার্য হাসিলের
উদ্দেশ্যে আজগরের শত্রুপক্ষের সেনাদের ডেকে নেয়। হতবাক হয়ে যান আজগর। তখন
সুন্দরী বলে উঠে, 'তোমাকে ধরিয়ে দেবার জন্যই এতদূর অনুসরণ করে এসেছি।' আজগর
বুঝতে পারেন সুন্দরী রমণী হচ্ছে শত্রুপক্ষের গুপ্তচর। যে কিনা এক-তৃতীয়াংশ
সম্পদের জন্য আজগরকে ফাঁদে ফেলে ধরিয়ে দিল।