পত্রিকায় প্রকাশের জন্যে গাড়িতে ব্যবহৃত 'হাইড্রোলিক হর্ন' বিষয়ে একটি
প্রতিবেদন রচনা করো।
হাইড্রোলিক হর্ন
আবীর শুভ্র : ঢাকা : শব্দদূষণ একটি মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়কারী উপাদান।
শব্দ দূষণের বিষয়ে এ দেশের জনগণ বেশ সচেতন হয়ে উঠেছে। পত্রিকায় এক পাতায় লেখা হয়েছে, 'শব্দের মাত্রাতিরিক্ত দূষণ আমাদের শ্রবণেন্দ্রিয় ক্ষতি করাসহ
মস্তিষ্কের বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করতে পারে। হাইড্রোলিক হর্ন শব্দদূষণের অন্যতম
কারণ। এছাড়াও অডিও সেন্টারগুলোও এজন্যে কম দায়ী নয়। যত্রতত্র গড়ে ওঠা এসব দোকান
বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রচন্ড শব্দে গান বাজানো হয়।
উক্ত কলাম লেখকের ন্যায় বর্তমানে দেশের প্রায় লোক শব্দদূষণের অনেক কারণের
মধ্যে একটি প্রধান কারণ গাড়িতে ব্যবহৃত হাইড্রোলিক হর্ন। এজন্যে সুপ্রিম
কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ২৩শে এপ্রিল, ২০০২ তারিখে গাড়িতে হাইড্রোলিক হর্ন
ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে প্রতিপালনের জন্যে পুলিশ ও বিআরটি এর প্রতি
নির্দেশও দিয়েছেন। কিন্তু তারপর প্রায় দুই দশক পেরিয়ে গেছে, অথচ তার বাস্তব কোনো
প্রয়োগ পুরোপুরিভাবে ঘটে নি।
লক্ষ্যনীয় ব্যাপার এই যে, হাইড্রোলিক হর্ন যানবাহনে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ হলেও তা
অধিকাংশ ক্ষেত্রে মান্য করা হচ্ছে না। হর্ন গোপনে বাজানোর জিনিস নয়, এটা প্রকাশ্যে
বাজানো হয় এবং বাজানো হচ্ছেও রাজধানীতে এবং রাজধানীর বাইরে প্রায় সর্বত্র বিভিন্ন যানবাহনের চালকগণ প্রতিনিয়ত এ উচ্চমাত্রার শব্দ সৃষ্টি করে যাত্রী সাধারন
ও পথচারীদের শ্রবণেন্দ্রিয় ক্ষতিসাধন করছে। দূষনকারী শব্দ সকলেই শুনছে এবং শুনতে
পাচ্ছে; কেবল শুনতে পাচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তাঁদের উদ্দেশেই বলা হচ্ছে- হাইড্রোলিক হর্ন আমদানি সম্পূর্নভাবে নিষিদ্ধ করুন। উপরন্তু এ হর্ন ব্যবহারকারী
যানবাহনের মালিকদের বাধ্য করুন তাদের যানবাহন থেকে এ দূষণ যন্ত্রটি খুলে ফেলতে।
প্রয়োজনে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহারকারী যানবাহনের চালক ও মালিকের বিরুদ্ধে কঠোর
শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে।
হাইড্রোলিক হর্নের অত্যাচার থেকে সম্পূর্ন রেহাই বা মুক্তি পেলে বাংলাদেশে
শব্দদূষণের মাত্রা কিছুটা হলেও কমে আসবে। অবশ্য শব্দদূষণের মাত্রা সহনীয় পর্যায়
নিয়ে আসার জন্যে মাইক, লাউড স্পিকার ইত্যাদি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও যথাযথ বিধি-নিষেধ
আরোপ করে তা কার্যকর করতে হবে। অযথা হর্ন বাজানো থেকে বিরত থাকার জন্যে
যানবাহনের চালকদেরও উদ্বুদ্ধ করতে হবে। যে সমস্ত যানবাহন অতিরিক্ত শব্দ উৎপাদন
করে সেসব যানবাহনের চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে। সর্বোপরি সাধারণ
মানুষের মধ্যে শব্দদূষণ সম্বন্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।