যানজটের অভিজ্ঞতা

যানজটের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে লেখ।

গুলিস্তান থেকে উত্তরা যাব। দীর্ঘ পথ। বাসে গেলেই ভালো হয়। কিন্তু আজকে লাইনে দাঁড়িয়েও সিট পাচ্ছি না। কয়েকটা বাস মিস করলাম। অথচ আমাকে বারোটার মধ্যে বন্ধুর অফিসে পৌঁছাতে হবে। সিএনজি ড্রাইভার যেতে ইচ্ছুক না হওয়ায় বললাম মিটারে যা ভাড়া উঠবে তার উপর পঞ্চাশ টাকা বেশি দেব। এখন নয়টা বাজে। কাজেই পৌঁছাতে অসুবিধা হবে না। মধ্যবয়সী ড্রাইভার মনে মনে রুট ঠিক করে নিল। তারপর গাড়ি চালু করল। জিপিওর মোড়ে এসেই যানজটে পড়ল। গাড়ি সব ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে। নট নড়ন চড়ন। পেছনে ঘুরে অন্যদিকে যাওয়ারও সুযোগ নেই। কারণ পেছনেও জট। বিপদ কাকে বলে! প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তিদের কথা মনে পড়ল, 'বিপদে ধৈর্যহারা হয়ো না।' তথাস্তু কোনো টেনশন করব না, যা হয় হোক। যার যার সাথে কথা বলা দরকার, এক এক করে ফোন করতে শুরু করলাম। মিনিট বিশেক পর গাড়ি একটু একটু করে এগুতে শুরু করল। পল্টন মোড়ে এসে আবার থেমে গেল, অনেকক্ষণ ধরে একই অবস্থা। যাদের বেশি ভাড়া তারা ট্রাফিকের উদ্দেশে কটুক্তি শুরু করে দিয়েছে। দু-তিন মিনিট পর আবার চলতে শুরু করল। বিজয়নগর মোড় থেকে দীর্ঘ জট। কতক্ষণ আটকে থাকতে হবে কে জানে? গাড়ি যখন স্টার্ট করল তখন প্রায় দশটা বাজে। মগবাজার মোড়ে এসে আবার জটের মুখে। জটে থামলেই আমি ফোনে কথা বলতে শুরু করি। বন্ধুকে জানিয়ে রাখলাম আমি মগবাজারে আটকে আছি। দশ মিনিট পর গাড়ি ওপারে গেলেও এগুচ্ছে খুব ধীরে। হাতিরঝিল পৌঁছাতেই এগারোটা বেজে গেল। এরপর দ্রুত গুলশান পার হয়ে গাড়ি নতুন বাজার দিয়ে এয়ারপোর্টের দিকে এগিয়ে চলল। কিন্তু এয়ারপোর্টের কাছে এসে থেমে গেল। লম্বা যানজট। দশ মিনিটের পথ, অথচ সময় লাগল পঞ্চাশ মিনিট। ঠিক বারোটায় বন্ধুর অফিসে ঢুকে বসে পড়লাম। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে হালকা মনে হলো। বন্ধু এসে সান্ত্বনা দিল কাজটা হবে বলে। মনে শান্তি পেলাম।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post