সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘর পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা

সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘর পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা কর।



ঢাকা-চট্টগ্রান সড়কে কাঁচপুর ব্রিজ পেরুলেই সোনারগাঁও। বাস থেকে নেমে সোনারগাঁওয়ের মাটিতে পা রাখতেই মনটা খুশিতে ভরে উঠল। সোহেল স্যার সবাইকে একত্র করে বললেন, সোনারগাঁও প্রাচীন বাংলার ঐতিহাসিক স্থান। ঢাকার আগে সোনারগাঁও ছিল দক্ষিণ পূর্ব বাংলার রাজধানী। ইতিহাস প্রসিদ্ধ ঈশা খাঁ ছিলেন এই অঞ্চলের শাসনকর্তা। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ঐকান্তিক আগ্রহ ও প্রচেষ্টায় ১৯৭৫ সালে সোনারগাঁওয়ে লোকশিল্প জাদুঘর ও লোকশিল্প গ্রাম প্রতিষ্ঠিত হয়। একটি দেশের শিল্প সংস্কৃতি, ইতিহাস ঐতিহ্যের যাবতীয় নিদর্শন জাদুঘরে সংরক্ষিত থাকে। আমরা সবাই সারিবদ্ধভাবে সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘরে প্রবেশ করলাম। জাদুঘরের প্রবেশপথটি অপূর্ব সুন্দর কারুকাজ করা। আমাদের গ্রামীণ মানুষের তৈরি জিনিসপত্রকে বলে লোকশিল্প। লোকশিল্প জাদুঘরে কত জিনিস যে আছে দেখার এবং শেখার! কাঠের তৈরি জিনিস, মুখোশ, মৃৎপাত্র, মাটির পুতুল, বাঁশ লোহা কাঁসার তৈরি জিনিস, অলংকার প্রভৃতি দেখে বিস্মিত হলাম।

বাংলাদেশের মানুষ কত জিনিসিই না কত সুন্দর করে তৈরি করতে জানে! কত বিচিত্র জিনিস আমরা ব্যবহার করি! কী সুন্দর জামদানি শাড়ি আর কী বাহার ওই নকশিকাঁথার! আমাদের বাংলা শিক্ষক সত্যিই বলেছেন, যে দেশের মানুষের মন সুন্দর, রুচিবোধ আছে, তারাই এমন জিনিস তৈরি করতে পারে। শিল্পী জয়নুল আবেদিনের সংগ্রহশালাটি মুগ্ধ হয়ে দেখলাম। সত্যি, কত বড় শিল্পী তিনি! কী চমৎকার ছবি তাঁর, তাঁর ছবিই বলে তিনি বাংলাদেশকে কত ভালোবাসতেন, খুব ভালোবাসতেন এ দেশের মানুষকে। তিনিই তো এই জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা। আমাদের সবার এমনই মোহাবিষ্টতা কাটিয়ে সোহেল স্যার ঘোষণা করলেন, 'এবার চলো, সোনারগাঁওয়ের সবচেয়ে সমৃদ্ধ এলাকা পানামা নগরটা দেখে আসি। নগরের মধ্যে আরেক নগর!' নতুনের, বিস্ময়ের, রহস্যের উন্মোচন রোমাঞ্চে আমরা পানামা নগরের দিকে ছুটে চললাম।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post