‘মোবাইল ফোনে সময় নষ্ট করার পরিণাম' শিরোনামে একটি খুদে গল্প রচনা করো।
অথবা, প্রযুক্তির অভিশাপ শিরোনামে একটি খুদে গল্প রচনা করো।
অথবা, প্রযুক্তির অভিশাপ শিরোনামে একটি খুদে গল্প রচনা করো।
মোবাইল ফোনে সময় নষ্ট করার পরিণাম
রাত ১২টা বেজে ৪৫ মিনিট। আগামীকাল রবিবার সৈকতের কলেজে নির্বাচনি পরীক্ষা শুরু।
কিন্তু সৈকতের হাতে বইয়ের পরিবর্তে দামি ‘স্মার্টফোন। আজকাল ফোনটাই যেনো তার
নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে। দিন-রাত নাওয়া-খাওয়া ভুলে সৈকত সারাদিন গেমস
খেলায় ব্যস্ত থাকে। তার প্রিয় খেলা ‘ক্ল্যাশ অব ক্ল্যানস।' ক্লাসের পড়ায় তার
মন নেই। প্রতিদিন নতুন নতুন গেমস ডাউনলোড করা আর বেশি স্কোর করাই তার প্রধান কাজ।
রসায়ন বইটা পড়ে আছে পাশে। তবুও পড়ার প্রতি কোনো আগ্রহ তার নেই। মনে মনে যদিও
সে চিন্তিত আগামীকালকের পরীক্ষা নিয়ে কিন্তু কোনোভাবেই সে খেলা বন্ধ করতে পারছে
না।
হঠাৎ করে দরজার ওপাশে আম্মুর পায়ের আওয়াজ পাওয়া গেলো, মোবাইলটা বালিশের নিচে
রেখেই বইটা হাতে নিলো যে, মুহূর্তেই তার মনে হলো কিছুই পড়া হয়নি তার। চেষ্টা
করলো সহজভাবে পড়া মনে রাখার। কিন্তু সে পড়ায় কোনো ভাবেই মন বসাতে পারছে না।
একটু পর পর ফেসবুকে নোটিফিকেশন আসছে, টিং-টং শব্দ করে। তাই মনটাও ফেসবুকেই ঢুকে
আছে। এমন করে করে রাত ২টা বেজে গেল। অথচ বইয়ের দুই চাপ্টারও ঠিকমতো পড়া হয়নি।
সৈকত বই নিয়ে ঘরে এপাশ থেকে ওপাশে হাঁটাহাঁটি করতে লাগলো। পড়া আর মাথায় ঢুকছে
না। কারণ সে আগে তো কিছুই পড়েনি। রাত বেশি হয়ে যাওয়ায় সে একটু পর ঘুমিয়ে
পড়লো। পরদিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠলো সে। কিন্তু উঠেই সে ফোন হাতে নিল। এক লেভেল
গেম খেলতে খেলতে যে কীভাবে ২ ঘণ্টা সময় কেটে গেল, সেটা সে বুঝতেই পারলো না।
কিছুক্ষণ পরে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো সকাল ৮টা বাজে। তাড়াতাড়ি খাওয়া-দাওয়া
শেষ করে পরীক্ষার হলের উদ্দেশ্যে রওনা হলো। পরীক্ষার হলে প্রশ্ন দেখেও তার তেমন
কিছু লাভ হলো না। কোনো কিছুরই উত্তর লিখতে পারলো না সে। পরীক্ষার ফলাফল দেয়ার
সময়ও দেখা গেল রসায়নে ফেল করেছে সে। অধিক মোবাইল ফোনে আসক্ত হওয়ায় এই ফলাফল
দেখা গেল। মোবাইল ফোনে বেশি সময় নষ্ট করার পরিণাম হাতে নাতে পেল সৈকত ৷