‘নিরাপদ সড়ক চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় উপস্থাপনের জন্য একটি ভাষণ তৈরি কর।
নিরাপদ সড়ক চাই
শ্রদ্ধেয় সভাপতি, মাননীয় প্রধান অতিথি, সম্মানিত বিশেষ অতিথি ও আমার সাথি
আলোচকবৃন্দ আস্সালামু আলাইকুম।
সুধীমণ্ডলী,
‘নিরাপদ সড়ক চাই’– এ দাবি সময়ের দাবি। এ দাবি অনেক দিনের। যখন থেকে আমরা
সড়কপথের ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি, যান্ত্রিক যানবাহনের ওপর ভরসা করছি,
তখন থেকেই ‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর দাবি অব্যাহত রয়েছে। কেননা সড়ক এখন মৃত্যুফাঁদ,
যান্ত্রিক যান এখন তার ইন্ধন, আর যারা যানচালক তারা মৃত্যুদূত।
শ্ৰোতামণ্ডলী,
একসময় আমাদের দেশে ছোটবড় নদী-নালা, খাল-বিল জালের মতো ছড়িয়ে ছিল। গ্রাম থেকে
গ্রামে বা গ্রাম থেকে শহরে যেতে হলে নৌকাই ছিল একমাত্র মাধ্যম। ঝড় ছাড়া সে সময়
নৌকাডুবি হতো না। কিন্তু এখন খাল-বিল শুকিয়ে গেছে, নদী-নালার অবস্থাও শোচনীয়।
যে কারণে যাতায়াতের সুবিধার জন্য তৈরি হয়েছে জালের মতো সড়কপথ। সড়কপথে চলছে
নানা রকম অসংখ্য যানবাহন। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে দুর্ঘটনা। প্রতিদিন নিহত
বা আহত হচ্ছে শত শত মানুষ। উপার্জনক্ষম মানুষকে হারিয়ে বহু পরিবার অসহায়
ভিক্ষুকে পরিণত হচ্ছে। শিশু ও নারী মৃত্যুর কারণে পরিবারে নেমে আসছে হাহাকার।
হতাশ ও দুর্বিষহ পরিবেশে পরিবার সক্ষমতা হারিয়ে ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। সড়কপথের
চরম নিরাপত্তাহীনতার কারণেই আজ মানুষ সোচ্চার হয়েছে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনে।
বন্ধুগণ,
আমাদের দেশের অধিকাংশ সড়ক পর্যাপ্ত চওড়া নয়। সড়কে রয়েছে ভুতুড়ে বাঁক। আর
এমন সড়কে প্রশিক্ষণবিহীন বা স্বল্প প্রশিক্ষিত চালকরা অসহায় কথহায় ও
অকালমৃত্যু কারও কাম্য নয়। ট্রাফিক ব্যবস্থার অপ্রতুলতা এবং ট্রাফিকের অবহেলাও
দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। সংশ্লিষ্ট দফতর কখনো কখনো ব্যবস্থা নিচ্ছে, কিন্তু তা
যথাযথ ও পর্যাপ্ত নয়।
সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে নানাভাবে। কিন্তু তারপরও ঘটছে ভয়াবহ
দুর্ঘটনা। কাজেই সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার আর উপায় নেই।
মৃত্যুর দৃশ্য দেখতে দেখতে আর মৃত্যুর সংবাদ পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার উপক্রম হবে। অর্থাৎ নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি আমরা সবাই। এর
জন্য সামাজিক সচেতনতা দরকার। আসুন, গ্রামে-গঞ্জে, দফতরে, সরকারি মহলে সোচ্চার
দাবি উত্থাপন করি ‘নিরাপদ সড়ক চাই’।
আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।