“নিরক্ষরতা দূরীকরণ ও বাংলাদেশ” – বিষয়ে একটি ভাষণ তৈরি কর।
‘নিরক্ষরতা দূরীকরণ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক বক্তৃতা
শ্রদ্ধাভাজন সভাপতি, সম্মানিত অতিথিবৃন্দ, উপস্থিত সুধীবৃন্দ, আসসালামু আলাইকুম ।
প্রিয় সুধী,
‘বাংলাদেশের নিরক্ষরতা দূরীকরণ’ সম্পর্কে কিছু বলার জন্য আমাকে সুযোগ দেওয়ায়
আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই। পৃথিবীর অন্যতম দরিদ্র দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশ নিরক্ষর
দেশগুলোর অন্যতম। নিরক্ষরতা আমাদের জাতীয় জীবনে এক ভয়াবহ অভিশাপ। নিরক্ষরতাই সব
সমস্যার মূলসূত্র। জাতীয় জীবনে দারিদ্র্যতা অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে রয়েছে।
নিরক্ষরতার জন্যই দেশে সমৃদ্ধি আসছে না। সরকারের উন্নয়ন প্রচেষ্টা ব্যর্থতায়
পর্যবসিত হচ্ছে। তথাকথিত তিন-পঞ্চমাংশ স্বাক্ষর লোকের মধ্যে যথার্থ শিক্ষিতের সংখ্যা
কম। ৫ থেকে ১০ বছর বয়সী মোট ছেলেমেয়ের অর্ধেকের সামান্য বেশি প্রাথমিক স্কুলে
পড়তে যায়। প্রথম শ্রেণির ছাত্রসংখ্যার তুলনায় যথাক্রমে উচ্চ শ্রেণিতে
ছাত্রসংখ্যা কমতেই থাকে। তারা নিরক্ষর দলে ভিড়ে যায় এবং সামান্য অক্ষরজ্ঞান
অল্পদিনেই ভুলে যায়। তাই দিন দিন নিরক্ষরের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। অধিকাংশ
গ্রামবাসীই নিরক্ষর।
সুধীমণ্ডলী,
দেশের বিপুলসংখ্যক নিরক্ষর মানুষ জনশক্তি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না। নিরক্ষরতা
জাতীয় প্রগতির প্রতিবন্ধক। শিক্ষার সঙ্গে মাথাপিছু আয়ের সম্পর্ক বিদ্যমান।
উন্নতি ও নিরক্ষরতা দূরীকরণে সরকারি ও বেসরকারিভাবে যদিও কিছুটা উদ্যোগ নেওয়া
হচ্ছে এবং বর্তমানে ব্যবহারিক স্বাক্ষরতার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে, যেখানে স্বাক্ষরতা হচ্ছে কর্মকেন্দ্রিক। এ বিষয়ে আমাদেরকে আরও সচেতন হতে হবে।
উপস্থিত সুধীবৃন্দ,
নিরক্ষরতার ভয়াবহ সমস্যাটি জাতীয় জীবনের অগ্রগতি ব্যাহত করছে এ ব্যাপারে দ্রুত
ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আমাদেরকে পশ্চাৎপদ জাতি হিসেবে মর্যাদাহীন অবস্থায় থাকতে
হবে। তাই দেশে নিরক্ষরতা দূরীকরণের যেসব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে তা সমন্বিত করে
সেসবের বাস্তবায়ন করতে সচেতন মহলকে এগিয়ে আসতে হবে। সকলের সম্মিলিত ও আন্তরিক
প্রচেষ্টাতেই নিরক্ষরতা দূর হতে পারে। এ ব্যাপারে উন্নত দেশসমূহের দৃষ্টান্ত ও
অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে লাগাতে হবে।
সবাইকে ধন্যবাদ ।