মধুমতি নদীতে হাবুডুবু খাওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করো।
প্রবাদে আছে মানুষ দেখে শেখে আর ঠেকে শেখে। এগুলো কিছু কিছু মানুষের ভবিষ্যতে
চলার পথ সুন্দর করতে সাহায্য করে। কিছু বিষয় আছে যা দেখে বুঝা যায়না ঠেকেই
শিখতে হয়। আমি তখন অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ি। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়
গিয়েছি বন্ধু চিনময়দের বাড়িতে বেড়াতে। ওদের বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে
মধুমতি নদী। এক সকালে গিয়েছি নদীতে স্নান করতে। চিনময় কে বললাম, এ নদী সাঁতরে
পার হওয়া যায়? ও বলল, না। বললাম আমি পারবো। ও বলল যদি পারো তবে ১০০০ টাকা বাজি।
আমি ভাবতাম সাঁতারে আমার জুড়ি নেই। সেটা ভুল প্রমাণিত হলো নদীতে নেমে। গ্রামের
পাশের চিত্রা নদীর সাথে এর অনেক তফাৎ সেটা পরে বুঝেছিলাম। আমি উত্তেজনার বশবর্তী
হয়ে সাঁতার দিলাম। এখানে নদীটি ৩০০ মিটার এর অধিক প্রশস্ত। ভেবেছিলাম স্রোতের
অনুকূলে ভাসতে ভাসতে ওপারে পৌঁছানো যাবে। কিন্তু নদীতে যে ঘূর্ণি স্রোত আছে তা
জানতাম না। মাঝ নদী বরাবর যাওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। সমস্ত
শরীর ভারী হয়ে আসছিল। আমি যেন আর ভেসে থাকতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল কে যেন
আমাকে জলের নিচে টেনে নিয়ে যেতে চাইছে। আমি খানিকটা ভীত হয়ে পড়েছিলাম। উপায়
না দেখে চিনময় কে চিৎকার করে ডাকলাম। কোন বিপদ বুঝতে পেরে যতক্ষণে নৌকা নিয়ে
আমার কাছে গিয়ে পৌঁছলো ততক্ষনে আমার হাবুডুবু খেয়ে পেট ভরে গেছে মধুমতির জলে। ও
আমাকে টেনে নৌকাই তুলল। তারপর থেকে সবচেয়ে কোন নদী পার হওয়ার সাহস দেখায়নি।
কিন্তু চিনময় এত বড় পাষণ্ড, কলেজের ঘটনা টি জানিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বাজির
টাকাটা আমার খরচ করিয়েই ছাড়লো।