নুরুল মোমেন
নুরুল মোমেন কবে জন্মগ্রহণ করেন? — ২৫শে নভেম্বর, ১৯০৬ সালে।
তিনি কোথায় জন্মগ্রহণ করেন? — বুড়োইচ গ্রাম, যশোর।
তিনি মূলত কী ছিলেন? — নাট্যকার।
তিনি কোন ধরনের নাট্যচরিত্র অঙ্কন করে খ্যাতি অর্জন করেন? — সামাজিক সঙ্কটের পটভূমিকায় অন্তর্দ্বন্দ্ব–মূলক নাট্যচরিত্র।
তাঁর রচিত নাটকগুলোর নাম কী? — 'রূপান্তর' (১৯৪৭), 'নেমেসিস' (১৯৪৮), 'যদি এমন হতো' (১৯৬০), 'নয়া খান্দান' (১৯৬২), 'আলোছায়া' (১৯৬২), 'শতকরা আশি' (১৯৬৭), 'আইনের অন্তরালে' (১৯৬৭), 'যেমন ইচ্ছা তেমন' (১৯৭০) ইত্যাদি।
'নেমেসিস' উল্লেখযোগ্য কেন? — এক চরিত্র বিশিষ্ট এমন নাটক বাংলা সাহিত্য কম বলে।
'নেমেসিস' নাটকের পরিচয় দাও।
— নুরুল মোমেনের শ্রেষ্ঠ নাটক 'নেমেসিস' ১৯৩৯–৪৩ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নুরুল মোমেন ১৯৪৪ সালে নাটকটি লেখেন এবং 'শনিবারের চিঠি' (সম্পাদক : সজনীকান্ত দাস) পত্রিকায় তা প্রকাশিত হয়। গ্রন্থাকারে প্রকাশ পায় ১৯৪৮ সালে। নাটকটি স্কুল মাস্টার সুরজিত নন্দী নামের এক চরিত্র বিশিষ্ট। অদৃশ্য চরিত্র হিসেবে আছে নৃপেন বোস, তার কন্যা সুলতা, ম্যানেজার অসীম, অমল বাবু, ইয়াকুব প্রমুখ। নেমেসিস (Nemesis) গ্রিক দেবী। এই দেবী প্রতিহিংসার এবং মানব নিয়তি তার হাতে। মানুষ ইচ্ছা করেও তা অতিক্রম করতে পারে না। না নাটকে সুরজিত ইচ্ছা করেও ভাগ্য অতিক্রম করতে পারে নি। সুরজিতের মধ্যে ট্রাজেডির নায়কের দ্বন্দ্ব সংঘাত কার্যকার। শেষে সে মৃত্যুবরণ করে। এ নাটকে সমকালীন দুর্ভিক্ষ, মজুতদারদের পিশাচবৃত্তি ও নিরন্নদের হাহাকার বাস্তব চিত্র।
নুরুল মোমেনের নাটক 'নয়া খান্দান' সম্পর্কে লিখ।
— 'নয়া খান্দান' নাটকটি ১৯৬১ সালে রচিত হয় এবং তা ১৯৬২ সালে প্রকাশিত হয়। বংশমর্যাদা ও এ নিয়ে আভিজাত্যের প্রতি শ্লেষ ব্যক্ত হয়েছে এ নাটকে। নাট্যকার দেখিয়েছেন আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিতদের কাছে বংশমর্যাদার চেয়ে সুরুচিই বরং কাম্য। এই সুশিক্ষাই বর্তমান যুগের নতুন বা নয়া খান্দান (আভিজাত্য) হিসেবে বিবেচিত। এটি একটি কমেডি নাটক।
নুরুল মোমেনের 'আলোছায়া' নাটক সম্পর্কে লিখ।
— 'আলোছায়া' ১৯৬২ সালে প্রকাশিত একটি কমেডি নাটক। ভালোমন্দের প্রতীক হলো আলোছায়া৷ ভালোমন্দোর দ্বন্দ্ব ছিল এবং আছে। এর মধ্য ভালো বা আলোর প্রভাব যার মধ্যে সে–ই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কালো ছায়ার প্রাধান্যকারীরা স্মরণীয় হবেন না –এটাই নাটকের মূল বিষয়। হাম্মাদ জামিল, জাহানারা, সুলতান, পারভীন উল্লেখযোগ্য চরিত্র।
তিনি আর কী রচয়িতা হিসেবে প্রসিদ্ধ ছিলেন? — রম্যসাহিত্য রচয়িতা হিসেবে।
তাঁর রচয়িত রম্য সাহিত্যগুলো কী কী? — 'বহুরূপ' (১৩৬৫), 'নরসুন্দর' (১৯৬১), 'হিংটিং ছট (২ খণ্ডের) ১৯৭০।
তাঁর রচিত নাটকের জন্য তিনি কী পুরস্কার লাভ করেন? — বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬১)।
তিনি কী কী পদক লাভ করেন? — সিতারা ই ইমতিয়াজ পুরস্কার (১৯৬৭), বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক একুশে পদক (১৯৭৮)।
তিনি কবে মৃত্যুবরণ করেন? — ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৯০ সালে।