‘পাড়ায় পাড়ায় পাঠাগার গড়ে তোলা’ শীর্ষক আলোচনা সভার একজন বিশেষ বক্তা
হিসেবে একটি মঞ্চভাষণ তৈরি কর।
‘পাড়ায় পাড়ায় পাঠাগার গড়ে তোলা’
‘পাড়ায় পাড়ায় পাঠাগার গড়ে তোলা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ২০১৮-এর শ্রদ্ধেয়
সভাপতি, প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, আলোচকবৃন্দ, উপস্থিত সুধীমণ্ডলী আসসালামু
আলাইকুম। পাঠাগার প্রতিষ্ঠার মতো একটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আমাকে কিছু
বলার সুযোগ দেওয়ার জন্য আজকের অনুষ্ঠানের আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই ।
সুধীমণ্ডলী,
আমি বিশ্বাস করি এবং জানি যে, আজকে এখানে এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমরা যারা কথা বলছি,
আমাদের নানা অভিজ্ঞতা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি, এর চেয়ে অনেক বেশি অভিজ্ঞতা
আপনাদের আছে। জগতে যত বড় বড় কাজ হয়েছে তার সিংহভাগই হয়েছে শ্রোতাদের দ্বারা,
বক্তাদের দ্বারা নয়। আপনারা জানেন যে, মানুষ হয়ে জন্ম নিলেই প্রকৃত মানুষ হয়ে
ওঠা যায় না। মানুষকে মনুষ্যত্ব অর্জন করতে হয়, জ্ঞানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে
হয়। কেননা বিশ্বজগতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পরিচয় লাভের ক্ষেত্রে জ্ঞানের বিকল্প নেই।
আর জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে পাঠাগারের বিকল্প নেই। পাঠাগার মানুষের জ্ঞানসমুদ্র।
প্রিয় সুধী,
আমাদের জীবনের উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই
শিক্ষার জন্য বই পড়ার বিকল্প নেই। শিল্প-সাহিত্য, সমাজ-রাষ্ট্র, জ্ঞান-বিজ্ঞানের
নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের প্রচুর বই পড়তে হবে। কিন্তু কোনো
ব্যক্তিবিশেষের পক্ষে এত বই কেনা এবং তা সংরক্ষণ করা সহজ কাজ নয়। অথচ এই কঠিন
কাজটিই পাঠাগার স্থাপন করে অতি সহজে করা সম্ভব।
জীবনের বহুমুখী জিজ্ঞাসার পরিতৃপ্তি সাধনে পাঠাগারের ভূমিকা অপরিসীম। পাঠাগার
হচ্ছে সুশিক্ষিত, সজ্জন এবং জ্ঞানের আলোয় আলোকিত মানুষ তৈরির কেন্দ্রস্থল।
পাঠাগার মানুষকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলে।
প্রিয় সুধী,
আমরা যদি সমাজদেহে বিরাজমান দুর্নীতিকে রোধ করতে চাই, যদি জ্ঞানে-বিজ্ঞানে,
দর্শনে-সাহিত্যে ও শিল্পকলায় নিজেদের সমৃদ্ধ করে তুলতে চাই, আমরা যদি আগামী
প্রজন্মের জন্য সুস্থ, সুন্দর পৃথিবীর অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে চাই তাহলে অবশ্যই
আমাদের পাঠাগার গড়ে তুলতে হবে। পাড়ায় পাড়ায় পাঠাগার গড়ে উঠলে সুস্থ সুন্দর
মানবীয় সমাজও গড়ে উঠবে। কেননা পাঠাগার জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার
জ্ঞানতীর্থ। আমরা সেই তীর্থের যাত্রী হব। সেই প্রত্যাশায় শেষ করছি।