"রক্তদান কর্মসূচি" উপলক্ষে একটি খুদে গল্প রচনা করো।
রক্তদান কর্মসূচি
মহান শহীদ দিবসে শহীদ মিনারের পাদদেশে রক্তদান কর্মসূচি চলছে। শহীদ মিনারে
শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়ে ড. সেলিম সেখানে উপস্থিত হলেন। তিনি দেখেন বেশকিছু
তরুণ ব্যানার টানিয়ে তাঁবু বানিয়ে রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করেছে। তিনি জানার
চেষ্টা করেন তাদের এমন উদ্যোগের নেপথ্য কাহিনী। ‘সেবা মানবিক ফাউন্ডেশন' নামে
একটি প্রতিষ্ঠানের তরুণরা এ কাজে নিয়োজিত আছে। তাদের সংগঠনটির মূল লক্ষ্য হলো
জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলোতে জনকল্যাণমূলক কাজ করা। বিগত বছরগুলোতেও তারা এমন
উদ্যোগ নিয়েছিল। রাহাত এই ফাউন্ডেশনের প্রধান উদ্যোক্তা। গরিব ঘরের সন্তান হলেও
তার মাঝে মানুষের প্রতি কর্তব্যবোধের কমতি নেই। শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসা অজস্র
মানুষকে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে সে কাছে টেনে নেয়। অনেকেই রক্ত দিতে ভয় পায়।
রাহাত ও তার স্বেচ্ছাসেবী সহযোগীরা তাদেরকে বোঝায়। রক্ত দিলে শরীরের কোন ক্ষতি
হয় না, বরং একজনের রক্তের মাধ্যমে অনেক অসহায় মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে।
আট-দশজন লোকের গ্রুপ করে করে তারা এসব বিষয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে তোলে রাহাত
মনে করে ভাষা আন্দোলনের জন্য সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ যারা জীবন দিয়েছে তারা
দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণেই আত্মত্যাগ করেছে। এই শহীদ মিনারের পাদদেশে ভাষা
আন্দোলনের দানা বেঁধেছিল। এ দেশের ছাত্র-জনতা সকল ভয়কে তুচ্ছ করে ভাষার
অধিকারে-বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। পুলিশ গুলি করে তাদের বুকের তাজা রক্তে রঞ্জিত
করেছিল এই এলাকা। সেই রক্তদান ছিল স্বদেশের কল্যাণে, ভাষার স্বাধীনতার জন্য।
তাদের সেই চেতনাকে ধারণ করে শহীদ মিনারের পাদদেশে রক্তদান তাই অত্যন্ত গুরুত্ব
বহন করে। রাহাত ও তার বন্ধুরা এ রক্ত নিয়ে সংরক্ষণ করে। অনেক মুমূর্যু রোগী
প্রায়ই রক্তের জন্য মারা যায়। তারা সে সকল লোকদের বিনামূল্যে এ রক্ত পৌছে দেয়।
ড. সেলিম সাহেব তাদের এমন মহৎ উদ্যোগে অনুপ্রাণিত হন। তিনি নিজেই তখন রক্তদান
করেন এবং ‘সেবা মানবিক ফাউন্ডেশনের' জন্য এক লক্ষ টাকা অনুদান ঘোষণা করেন। তার
এমন উদ্যোগে রক্তদানে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষেরাও সন্তুষ্ট হন। সেখানে উপস্থিত সকলে
শপথ করেন তারা যতদিন বাঁচবেন মানুষের কল্যাণে নিজেদের সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করে
যাবেন।