খুদে গল্প : শিশু নির্যাতন

‘শিশু নির্যাতন' শিরোনামে একটি খুদে গল্প লেখো।

শিশু নির্যাতন

শিশু নির্যাতন বাংলাদেশে বেড়েই চলছে। এ নিয়ে সচেতন সমাজ— “মানবতার হাত বাড়াও, নির্যাতিতের পাশে দাঁড়াও” স্লোগান দিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। তারা ছোটো ছোটো কাগজে এসব স্লোগান লিখে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে থাকে এবং তুলে ধরে এমন কিছু শিশুর গল্প যারা নির্যাতনের শিকার, এমনই একজন শিশু হচ্ছে জরিনা। ছোটোবেলায় মা-বাবা ঝগড়া করে আলাদা হয়ে যাওয়ায় আজ তার এই দশা। খুব ছোটোবেলায় জরিনার বাবা তার মাকে তালাক দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করে। তখন ছোটো জরিনাকে নিয়ে তার মা অথৈ সাগরে পড়ে। কি করবে ভেবে পায় না। জরিনার মা সিদ্ধান্ত নেয় জরিনাকে তার নানীর কাছে রেখে মানুষের বাড়িতে কাজ করবে। জরিনার বয়স যখন আট তখন তার মাও মারা যায়। জরিনার নানী জরিনাকে শহরে একজনের বাড়িতে কাজ করতে পাঠায়। কারণ জরিনার খরচ বহন করা এখন যথেষ্ট। কষ্টের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যথারীতি জরিনা শহরে কাজ করার জন্য আসে। যে বাড়িতে কাজ শুরু করে সেখানে তাকে শুরু থেকে স্বাগত জানানো হয়নি। ছোটোখাটো বিষয়ে ভুলভ্রান্তি হলে গায়ে হাত তোলা ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। জরিনা তার কষ্টের কথা কাউকে বলতে পারতো না। একা একা বসে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতো। একদিন বিকেলে গৃহকর্ত্রী শাড়ি ইস্ত্রি করতে দেয় জরিনাকে। জরিনা ইস্ত্রি করতে করতে দেয় জরিনাকে। জরিনা ইস্ত্রি করতে অন্যমনস্ক হয়ে শাড়ি পুড়িয়ে ফেলে। বাড়ির গৃহকর্ত্রী খুব রেগে যায়। জরিনার উপর নেমে আসে অকথ্য নির্যাতন। মার খেতে খেতে একপর্যায়ে জরিনার হাত ভেঙ্গে যায়। বাড়ির কর্তা জরিনাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে জরিনার সাথে দেখা হয় একজন মানবাধিকার কর্মীর। তিনি জরিনার গায়ে মারের চিহ্ন দেখে জরিনাকে জিজ্ঞেস করেন কি হয়েছে? জরিনা সব খুলে বলে। জরিনা বলে তার সাথে ঘটে যাওয়া সব অত্যাচারের কথা বলতে বলতেই হুঁ হুঁ করে কেঁদে ওঠে সে। মানবাধিকার কর্মীটি জরিনাকে তার সাথে নিয়ে যেতে চায়। জরিনার গৃহকর্তা আটকলে মানবাধিকার কর্মীটি জানান, জরিনার উপর নির্যাতনের কারণে তিনি ওই গৃহকর্তা ও গৃহকর্তীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন। এরপর মানবাধিকার কর্মীটি জরিনাকে ‘শিশু সদন' নামক আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসে। সেখানে জরিনা অন্যান্য শিশুদের সাথে হেসে খেলে দিন কাটাতে শুরু করে।

1 Comments

  1. হাসপাতালে দুই দিন

    ReplyDelete
Post a Comment
Previous Post Next Post