‘সুযোগের সদ্ব্যবহার' শিরোনামে একটি খুদে গল্প রচনা করো :
সুযোগের সদ্ব্যবহার
সকালটা মেঘাচ্ছন্ন ছিল। সকালে ঘুম ভাঙতে তাই একটু দেরি হয়ে যায় মাকসুদ সাহেবের।
তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা। অফিসের দেরি হয়ে যাবে তাই সকালের নাস্তা
না করেই অফিসের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। রাস্তায় নেমে রিকশার জন্য অপেক্ষা
করছিলেন, এমন সময় রাস্তার পাশে মানুষের হইচই শুনতে পান। কী হয়েছে দেখার জন্য
এগিয়ে যান। সবাই মিলে এক লোককে মারছে দেখে তার সাহায্যের জন্য এগিয়ে যান মাকসুদ
সাহেব। লোকটাকে মারের হাত থেকে বাঁচিয়ে তিনি জানতে পারলেন, এই লোকটা পাশের হোটেল
থেকে রুটি চুরি করেছে। মাকসুদ সাহেব লোকটির কাছে জানতে পারলেন, লোকটি এই শহরে
নতুন এসেছে। কোনো কাজ পায়নি এবং দু'দিন ধরে না খেয়ে আছে। তিনি লোকটিকে বললেন,
বাংলাদেশে অনেক মানুষ না খেয়ে থাকে বা আধপেটা খেয়ে দিনের পর দিন অতিবাহিত করে।
তারা তোমার মতো চুরি করে না।
লোকটি খুব লজ্জিত হলো। লোকটি মাকসুদ সাহেবের কাছে প্রতিজ্ঞা করল সে আর কোনোদিন
চুরি করবে না। মাকসুদ সাহেব তাকে একটি রিক্শা কিনে দিলেন। লোকটি খুব খুশি হলো।
মাকসুদ সাহেবকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে লোকটি চলে গেল। দশ বছর পর একদিন মাকসুদ
সাহেব ট্রেনে করে বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎ এক বৃদ্ধ লোক তাকে কদমবুসি করেন। মাকসুদ
সাহেব লোকটিকে চিনতে পরলেন না এবং কদমবুসি করার জন্য বিব্রতকর অবস্থায় পড়লেন।
লোকটি তার নিজের পরিচয় দেয়। বৃদ্ধ লোকটি আরও জানায়, সে রিক্শা চালিয়ে অর্থ
উপার্জন করে। কিছু অর্থ জমিয়ে একটা রিক্শা গ্যারেজ ভাড়া নেয়। এখন তার ১০০টি
রিক্শা অন্যরা ভাড়ায় চালায়। আজ সে বিপুল সম্পত্তির মালিক। মাকসুদ সাহেবের চোখে
আনন্দে জল এসে যায়। নিজের উপকারে একজন মানুষকে স্বাবলম্বী হতে দেখে এবং তা থেকে
আরও একশ মানুষের কর্মসংস্থানের খবর শুনে গর্বে বুক ভরে ওঠে মাকসুদ সাহেবের। তিনি
ভাবতে থাকেন, তাঁর মতো সামর্থ্যবান লোকেরা যদি এভাবে দরিদ্রদের সাহায্যে এগিয়ে
আসে তবে দেশটা অনেক এগিয়ে যাবে।