“গুঁড়ো দুধ নয়, মায়ের দুধ-ই শিশুদের জন্য শ্রেষ্ঠ” এ বিষয়ে মায়েদের সচেতন
করতে একটি ভাষণ তৈরি কর।
গুঁড়ো দুধ নয়, মায়ের দুধ-ই শিশুদের জন্য শ্রেষ্ঠ
অনুষ্ঠানের সম্মানিত সভাপতি, প্রধান অতিথি, অতিথিবৃন্দ এবং উপস্থিত সুধীমন্ডলী
আস্সালামু আলাইকুম।
আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তারাই একদিন হবে আদর্শ নাগরিক, সরকারপ্রধান,
রাষ্ট্রপ্রধান, দেশের কর্ণধার। তাই এ শিশুদের সুস্থ সবলভাবে বেড়ে ওঠার পরিবেশ
আমাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে।
সুধীমন্ডলী,
শিশু জন্মের পর প্রথম অধিকার হলো মায়ের বুকের ‘শাল দুধ পান কর’। এই দুধে রয়েছে
শিশুর রোগপ্রতিরোধের সকল উপাদান। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো অনেক মা আছেন যারা
শিশু জন্মের পর শিশুকে বুকের দুধ পান করতে দেন না। এতে শিশুরা নানাবিধ রোগে
আক্রান্ত হয়। তাদের দেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা লোপ পায়। তাই সকল মায়েরই উচিত
শিশুকে বুকের শাল দুধ পান করানো। শিশুর জন্য মায়ের দুধ আল্লাহ প্রদত্ত অন্যতম
শ্রেষ্ঠ নেয়ামত। এ দুধে সকল পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। ছয় মাস বয়স পর্যন্ত
একমাত্র মায়ের দুধই যথেষ্ট। অন্য কোনো খাবারের প্রয়োজন নেই। অথচ এ যুগের
মায়েরা শিশুকে বুকের দুধ না দিয়ে গুঁড়ো দুধ খাওয়ান। এ গুঁড়ো দুধ কৃত্রিম,
অসম খাদ্য উপাদান সমৃদ্ধ এবং নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থে তৈরি। এ দুধে মিশ্রিত
মেলামাইন শিশুর কিডনিকে আক্রান্ত করে কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ফলে শিশু রোগে
জীর্ণশীর্ণ হয়ে বড় হয়, অপুষ্টিতে ভোগে। বুকের দুধ খেলে শিশু এসব রোগ থেকে
রক্ষা পায়। তাই গুঁড়ো দুধ নয়, মায়ের দুধই শিশুদের জন্য শ্রেষ্ঠ।
উপস্থিত মাতৃবৃন্দ,
আপনারা শিশুকে বুকের দুধ থেকে বঞ্চিত করবেন না। কারণ বুকের দুধ শিশুদের জন্য সব
রোগের ওষুধ। শিশুর পরিচর্যার জন্য যেমন মায়ের বিকল্প নেই, তেমনি শিশুর সুষম
বৃদ্ধি ও সুস্বাস্থ্যের জন্য মায়ের দুধেরও বিকল্প নেই। বর্তমানে অনেক মা-ই
শিশুকে বুকের দুধ দিতে পছন্দ করেন না। এতে নাকি তাদের দৈহিক সৌন্দর্যহানি ঘটে।
কিন্তু একজন ডাক্তার হিসেবে আমি বলব- এতে আপনাদেরই ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। এক জরিপে
দেখা গেছে, যেসব মা স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের অধিকাংশই শিশুকে
বুকের দুধ খেতে দেননি। তাই শিশুকে গুঁড়ো দুধের পরিবর্তে বুকের দুধ খাওয়ান। এতে
আপনার ও আপনার সন্তান উভয়েরই মঙ্গল। আসুন আমরা সমন্বরে বলি— “গুঁড়ো দুধ নয়,
মায়ের দুধই শিশুদের জন্য শ্রেষ্ঠ।”
সবাইকে ধন্যবাদ।