মুক্তিযোদ্ধা ও সংবাদপ্রতিবেদকের মধ্যে সংলাপ রচনা করো।
সাংবাদিক : আপনিতো একজন মুক্তিযোদ্ধা। সেই পরিচয়ে আপনার অনুভূতি
কেমন?
মুক্তিযোদ্ধা : আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, এ পরিচয়ে আমি খুবই গর্ববোধ
করি। দেশের জন্যে কিছু করতে পেরেছি এবং তার স্বীকৃতিও পেয়েছি এর চেয়ে আনন্দের
আর কিছু নেই।
সাংবাদিক : কোন বিষয়টি আপনাকে মুক্তিযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করেছিল?
মুক্তিযোদ্ধা : পাকিস্তানি শাসকরা আমাদের পূর্ব পাকিস্তানের লোকদের
খুব অবমূল্যায়ণ করত। তাদের আচার আচরণে মনে হতো আমরা সংখ্যালঘু। পশ্চিম
পাকিস্তানিরা সকল অধিকার ও সুযোগ সুবিধা ভোগ করত আমরা তার কিছুই পেতাম না। মূলত
অধিকার আদায়ের এ চেতনাই আমাকে মুক্তিযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করেছিল।
সাংবাদিক : মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদাররা কেমন তাণ্ডব চালিয়েছে?
মুক্তিযোদ্ধা : সে কথা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। যা দেখেছি তা বলতে
গেলে এখনো বুকের ভেতরটা ডুকরে কেঁদে ওঠে। ওরা আমাদের ঘর-বাড়ি নির্দয়ভাবে
জ্বালিয়েছে, মা-বোনদের চোখের সামনে অপমান করেছে, সারি সারি লোকদের দাঁড় করিয়ে
ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করেছে।
সাংবাদিক : আপনিতো সরাসরি মাঠের যোদ্ধা ছিলেন। আপনাদের প্রতিরোধে
কৌশল কী ছিল?
মুক্তিযোদ্ধা : আমরা সব সময় গুপ্তচর নিয়োগ রাখতাম। তাদের
ক্যাম্পের ভেতরের খবরগুলো খুব দ্রুতই পেয়ে যেতাম। পাক সেনারা কোথায় কখন
অপারেশনে যাবে সে খবর পাওয়ামাত্র সেই স্থানের আশে পাশে আমরা অবস্থান নিতাম।
আমাদের আয়ত্তের মধ্যে আসা মাত্র একযোগে তাদের উপর ঝাপিয়ে পড়তাম। তারা
দিগ্বিদিক ছুটে পালানো ছাড়া পথ পেত না। এভাবেই তাদের নাস্তানাবুদ করে ছাড়তাম।
সাংবাদিক : মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আপনার এখন প্রত্যাশা কী?
মুক্তিযোদ্ধা : আমরা যে শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্যে
যুদ্ধ করেছি। সেটি এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তেমন আমাদের বাংলাদেশ একটি সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠুক এটাই আমার
প্রত্যাশা।
সাংবাদিক : আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।