একজন মুক্তিযোদ্ধার মুক্তিযুদ্ধকালীন দিনলিপি লেখ।
৩১ আগস্ত,১৯৭১।
কাল রাতে পাকিস্তানি সেনারা ঢাকা শহরের ২২টি মুক্তিযোদ্ধা আশ্রয় বাড়িতে হামলা
চালিয়েছে। এলিফ্যান্ট রোডের বাড়ি থেকে রুমি ও জামীদের ধরে নিয়ে গেছে। আজাদের বাড়ি
থেকে ধরে নিয়ে গেছে আজাদ, জুয়েল, বাশার, মনোয়ার, সেকান্দার, চঞ্চলকে। আজাদের খালাতো
ভাই জায়েদ ও টগর গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আজাদের বাসায় আমিও ছিলাম। পাকিস্তানি মেজরের
সঙ্গে ধস্তাধস্তি করেতার মেশিনগান ছিনিয়ে নিয়ে আত্মরক্ষা করেছি। সেখান থেকে দিলু
রোডের বাসায় এসে আশ্রয় নিয়েছি। আমরা ঢাকার গেরিলা যোদ্ধারা যেভাবে পরিকল্পনা
করেছি, সেভাবেই এগিয়ে চলছি। পাকিস্তানিদের অতর্কিত এ হামলা আমাদের মনোবল নষ্ট করতে
পারবে না। আমরা আজাদ রূমীদের উদ্ধারের অভিযান চালাব। এরই মধ্যে আমরা ঢাকার চারটি
পাওয়ার স্টেশনের দুটি উড়িয়ে দিয়েছি। আমাদের স্ট্রিট ফাইট অব্যাহত। ঢাকাবাসীর
মনোবল ফিরে এসেছে। ভয়টা এখন পাকিস্তানি আর্মির। তবু প্রিয় সতীর্থের মুখ বারবার
চোখের সামনে ভেসে উঠছে। আমার প্রিয় আজাদ, প্রিয় জুয়েল, রমী এখন কেমন আছে? সারাদিন
অস্থিরতার মধ্যে পার করলাম।
কাজী কামাল
দিলু রোড, ঢাকা।