পরীক্ষার পর বন্ধুকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ গ্রামে অবস্থিত তোমার
বাড়িতে বেড়াতে আসার অনুরোধ জানিয়ে একটি পত্র লেখ।
মগবাজার, ঢাকা
১১ অক্টোবর, ২০২১
তুহিন,
দীন মুহম্মদ, তোমার চিঠি পেয়েছি। গভীর অভিনিবেশ সহকারে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছ
জেনে খুব খুশি হলাম। পরীক্ষার সুফল তোমার জীবনকে ফুলে-ফসলে ভরিয়ে তুলুক, এটাই
আমার কামনা। পরীক্ষা তো হয়ে গেল। এখন তোমাকে অনুরোধ যে, তুমি একবার আমার গ্রামে
বেড়াতে এসো। গ্রামটি অতি সুন্দর। প্রকৃতির নিকেতনই বলতে পার। তাছাড়া এ গ্রাম তো
সুবিখ্যাত। এ গ্রামের প্রকৃতি পরিবেশ ও স্মৃতি-আবহ তোমার চিত্তে বিমল আনন্দ এনে
দেবে।
আমার গ্রামের পাশ দিয়ে কুলকুল রবে বয়ে গিয়েছে স্রোতস্বতি তরঙ্গিনী কপোতাক্ষ
নদ। সে নদীর দু'পাশে আদিগন্ত বিস্তৃত সবুজ গ্রাম। আর তুমি তো জান, এই নদীর
ধারেই আমাদের সাগরদাঁড়ি গ্রাম। এই গ্রামেরই এক জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ
করেছিলেন বাংলা কাব্যের অমর কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত। এখানে কবির অনেক স্মৃতি
আছে। তাছাড়া দেখবে চোখ জুড়ানো প্রাকৃতিক দৃশ্য। নদীতে দূর-দূরান্তে চলে
যাচ্ছে সওদাগরী নৌকা। যতদূর তাকাবে, দেখবে এ নদী সাপের মত এঁকেবেঁকে
দূর-দিগন্তে মিলিয়ে গেছে। এসব দেখে তোমার মন উদাস হয়ে যাবে।শিশির ভেজা সকালে
মাঠের উপর দিয়ে তুমি যখন হেঁটে আসবে, তুমি দেখবে, শিশির তোমার পা দুটি ধুইয়ে
দিয়েছে। নদীতীরে দাঁড়িয়েই তুমি দেখবে সকালের সূর্যোদয়, বিকেলে দেখবে
হেমন্তের পড়ন্ত বিকেল। মাঠের পাকা ধানের রঙের সাথে সে রোদের দেখবে আশ্চর্য
মিল। এ নিসর্গ শোভা দেখে তোমার হৃদয়-মন-প্রাণ ভরে উঠবে। প্রকৃতি ও পরিবেশ
সম্পর্কে তুমি এক গভীর অনুভূতি লাভ করবে। তোমার চিন্তা-চেতনাকে তা উদ্দীপ্ত
করবে।
ঐ সময়ে আমিও বন্ধনমুক্ত থাকব। তোমাকে আমি সঙ্গও দিতে পারব। মধুর হয়ে উঠবে
আমাদের নিসর্গ দর্পণ। আজ এখানেই শেষ করছি। আমি কিন্তু অপেক্ষায় থাকব।
ইতি
তোমারই সানি