“ইভটিজিং প্রতিরোধে ছাত্রসমাজের ভূমিকা” — শীর্ষক সেমিনারে বক্তা হিসেবে একটি
ভাষণ রচনা কর।
অথবা, “ইভটিজিং প্রতিরোধে ছাত্রসমাজের ভূমিকা” শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপনের জন্য প্রধান বক্তা হিসেবে একটি মঞ্চভাষণ প্রস্তুত কর।
অথবা, “ইভটিজিং প্রতিরোধে ছাত্রসমাজের ভূমিকা” শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপনের জন্য প্রধান বক্তা হিসেবে একটি মঞ্চভাষণ প্রস্তুত কর।
ইভটিজিং প্রতিরোধে ছাত্রসমাজের ভূমিকা
“ইভটিজিং প্রতিরোধে ছাত্রসমাজের ভূমিকা” শীর্ষক সেমিনারের শ্রদ্ধেয় সভাপতি,
সম্মানিত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, উপস্থিত সুধীজন আসসালামু আলাইকুম।
প্রিয় সুধী,
আপনারা জানেন, ইভটিজিং মানে নারীদের বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করা। সাধারণত মেয়েদের
উদ্দেশ্যে ছুড়ে দেওয়া কিশোর-তরুণদের বিভিন্ন মন্তব্য, শিস বাজানো, চোখে ইশারা
করা, ওড়নার আঁচল ধরে টান দেওয়া, ভিড়ের মধ্যে ধাক্কা দেওয়া, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি
করা ইত্যাদিকে বলা হয় ইভটিজিং। আধুনিক প্রযুক্তির উন্নয়ন সাধনের ফলে মোবাইলে
ছবি তুলে বিরক্ত করা, মিসকল বা আপত্তিকর মেসেজ পাঠানো এবং ই-মেইল বা ফেসবুকের
মাধ্যমে মেয়েদের টিজ করাও ইভটিজিংয়ের পর্যায়ভুক্ত। এ অবস্থাকে কেন্দ্র করে
দেশে আত্মহননের ঘটনা দিন দিন আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলছে। অবিলম্বে এর প্রতিরোধে
কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সুধীবৃন্দ,
নারীর প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিই ইভটিজিংয়ের মূল উৎস। কাজেই ইভটিজিং প্রতিরোধে
নারীর প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পরিহার করে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করা
উচিত। এই ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে আমাদের ছাত্রসমাজ। তারা নিজেরা
সচেতন হয়ে অন্যদের সচেতন করে একটি সুন্দর সমাজ কাঠামো গড়ে তুলতে পারে। এক্ষেত্রে
আমি তাদের অতীত ঐতিহ্য ও সুনামের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। ছাত্ররাই এদেশের
ভাষা, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র প্রভৃতি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সবার আগে এগিয়ে
গিয়েছেন, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়েছেন, সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাদের
অফুরন্ত প্রাণশক্তির প্রয়োগে আমাদের সমাজদেহ থেকে ইভটিজিংই শুধু নয়, যেকোনো
বিষবাষ্প দূর হওয়া সম্ভব।
সুধীমণ্ডলী,
ছাত্রসমাজ দেশের ভবিষ্যৎ, জাতির আগামী দিনের কর্ণধার। জাতির সমৃদ্ধি, সম্মান আর
মর্যাদার সঙ্গে আজকের ছাত্রসমাজ একদিন সম্পৃক্ত হবে। জাতির গৌরব বৃদ্ধির সুমহান
দায়িত্ব একদিন তাদের ওপর বর্তাবে। তাদের কৃতকর্মের সফলতার ওপরই নির্ভর করবে
জাতির ভবিষ্যৎ। ইভটিজিং একটি গুরুতর সামাজিক সমস্যা। কাজেই জাতীয় স্বার্থে
ইভটিজিং প্রতিরোধে ছাত্রদের এগিয়ে আসা উচিত।
আমরা সবাই মিলে একটি সুন্দর ও শান্তিময় দেশ গড়ে তুলতে চাই। এ আশাবাদ ব্যক্ত করে
আমার বক্তব্য শেষ করছি। বন্ধ হোক ইভটিজিং, জয় হোক তারুণ্য শক্তির, জয় হোক
ছাত্রসমাজের। সবাইকে ধন্যবাদ।