তোমার ছাত্রাবাস / ছাত্রীনিবাস জীবনের অভিজ্ঞতা জানিয়ে তোমার মাকে পত্র লেখ।
মগবাজার, ঢাকা
১১ অক্টোবর, ২০২২
শ্রদ্ধেয় মা,
প্রথমে আমার সালাম গ্রহণ করবেন। আশা করি, বাড়ির সবাইকে নিয়ে কুশলে আছেন। আমিও
আপনাদের আশীর্বাদে ভালো আছি। গতকাল আপনার হাতের চিঠি পেয়ে বাড়ির সবকিছু জানতে
পারলাম।
মা আপনি তো জানেন হোস্টেল সম্পর্কে বরাবরই আমার একটি ভীতি কাজ করত। তাই বাবা
আমাকে গত মাসের ১ তারিখে হোস্টেলে উঠিয়ে দিয়ে গেলে আমার কেবলই মনে হতে লাগল-
আমি কীভাবে এখানে আপনাদের ছেড়ে থাকব। কিন্তু কিছুদিন না যেতেই আমার সে ভীতি
কেটে গেছে। এখানকার পরিবেশ খুবই ভালো। বিভিন্ন শ্রেণির ছাত্রীরা এখানে থাকে।
সবাই সবার প্রতি খুবই আন্তরিক ও সহানুভূতিশীল ছাত্রীনিবাসের তিনতলার দক্ষিণ
পাশের কক্ষে আমার সিট হয়েছে। রুমে আমরা চারজন থাকি। দুজন আমরা একই শ্রেণির আর
দুজন নবম শ্রেণির। হোস্টেলের নিয়মকানুন সম্পর্কে তারা আমাকে নানা কিছু শিখিয়ে
দিয়েছেন। প্রথম প্রথম যখন বেশি মন খারাপ হতো তখন বড় আপুরা ছাত্রীনিবাসের
মিলনায়তনে সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন, গল্প শোনাতেন। ছাত্রীনিবাসের তত্ত্বাবধায়ক
মেহেরুন্নেসা আপা। হোস্টেলের নিয়ম-শৃঙ্খলা ও পড়াশোনার বিষয়ে তিনি খুবই কঠোর।
সন্ধ্যা সাতটা থেকে সবাই মিলে পড়তে বসি এবং নির্ধারিত সময়ে খাওয়া-দাওয়া
সেরে আবার পড়ার টেবিলে বসি। ইতোমধ্যে আমার ব্লকের অনেক ছাত্রীর সঙ্গেই আমার
পরিচয় হয়েছে। মাঝে মাঝে সবাই মিলে গল্প করি, আড্ডা দিই, কখনো বা ছোট ছোট
উৎসবের আয়োজন করি। প্রথম প্রথম আমার কথায় একটু আঞ্চলিকতার টান ছিল। সেটুকু
এখন কাটিয়ে উঠেছি। সবকিছু মিলে ছাত্রীনিবাসে আমার এখন ভালোই লাগে। সামনে
পরীক্ষা। পরীক্ষা শেষ হলেই বাড়িতে আসব। আমার জন্য কোনো চিন্তা করবেন না। রোহান
কেমন আছে। ওর পড়াশোনার প্রতি বিশেষ নজর রাখবেন। ওকে এবার একটা ভালো স্কুলে
ভর্তি হতেই হবে। বিশেষ আর কি। আজ এখানে শেষ করছি।
ইতি
আপনার স্নেহের
আকাশ