সূচনা :
“এদেশ পাখির দেশ, কত পাখি আছে এইখানে;
কত রূপ! কত রঙ! কত গান সে পাখিরা জানে।”
নানা রং রূপের বৈচিত্র্যময় পাখিরা বাংলাদেশকে রূপময় করেছে। পাখির ডাকে আমাদের ঘুম ভাঙ্গে। তাইতো বাঙালি কবি পাখির দেশ বলেই তা উক্তরূপে ছন্দাকারে বর্ণনা করেছেন।
প্রকার : বর্ণ, গঠন, আকৃতি, প্রকার মিলিয়ে হরেক রকমের পাখি দেখা যায় এদেশে।
বর্ণনা : বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী এদেশের পাখির বর্ণনা কয়েক প্রকারে করা যায়। তা নিম্নে আলোচনা করা হল:
জাতীয় পাখি : দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখি। দোয়েলের শিষ এবং রং রূপ সবাইকে বিমোহিত করে।
ঝাড়ুদার পাখি : কাককে প্রকৃতির ঝাড়ুদার বলা হয়। কবির বর্ণনায়:
“এঁটো কাঁটা উচ্ছিষ্টের গন্ধ পেয়ে উড়ে আসে কাক,
ভোরবেলা চোখ মেলে শুনি সেই কাকদের ডাক।”
গায়ক পাখি : বসন্ত দূত কোকিল, চড়ুই, বউ কথা কও প্রভৃতি পাখির সুরেলা কণ্ঠ প্রকৃতিকে মুখরিত করে তোলে।
কথা বলা পাখি : ময়না, টিয়া, চন্দনা, কাকাতুয়া সুদর্শন ও কথাবলা পাখি।
শিল্পী পাখি : বাবুই পাখিকে শিল্পী পাখি বলে। একে কারিগর পাখিও বলা হয়। এদের বোনা বাসা সত্যই শৈল্পিক।
খেলার পাখি : ঘুঘু, কাদাখোঁচা, শামুক ভাঙ্গা, সারস, তিতির, বালিহাঁসকে খেলার পাখি বলা হয়।
নিশাচর পাখি : পেঁচা, বাদুর নিশাচর পাখি। রাতে এরা বের হয় এবং খাবার সংগ্রহ করে।
শিকারী পাখি : চিল, বাজ, শকুন, বক হচ্ছে শিকারী পাখি। এরা ছোঁ মেরে শিকার ধরে বলে এদের শিকারী পাখি বলা হয়।
পোষা পাখি : কবুতর, হাঁস, মুরগী, কোয়েল পোষা পাখি। এদের গৃহপালিত পাখিও বলে। তবে ঘুঘু, ময়না, টিয়াসহ বেশ কিছু পাখিকেও মানুষ পোষে।
অন্যান্য : টুনটুনি, বুলবুলি, ময়ূর পাখি আমাদের প্রকৃতিকে সুন্দর করেছে।
উপকারিতা : এরা প্রকৃতির শোভা বর্ধন করে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এদের কতকগুলোর মাংস ও ডিম আমিষের চাহিদা মেটায়। অনেক পাখি ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গ খেয়ে আমাদের ফসলের শত্রু নাশ করে।
অপকারিতা : অনেক সময় কোন কোন পাখি রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটায়। যেমন- বাদুর। কোন কোন পাখি ক্ষেতের ফসল, ফল খেয়ে ফেলে।
উপসংহার: পাখি আমাদের প্রকৃতির এক অনন্য উপাদান। এদের সংরক্ষণ করা আমাদের কর্তব্য। এখনও পাখি আমাদের ঘুম ভাঙ্গায়, সন্ধ্যা ডেকে আনে। তাইতো ছড়াটির সুর হৃদয়ে জাগে -
পাখি সব করে রব
রাতি পোহাইল।