নৌকা বাইচ
নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রাচীন গ্রাম্য প্রতিযোগিতামূলক উৎসবগুলোর মধ্যে নৌকা বাইচ অন্যতম। নৌকা বাইচকে উপলক্ষ করে নদী পারে বসে গ্রাম্য মেলা। শ্রাবণের শেষের দিকে যখন নদী পানিতে টইটম্বুর থাকে তখন এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। সাধারণত ৪-১০টি বাইচের নৌকা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। নৌকাগুলো দেখতে লম্বা (৬০-১০০ হাত) এবং চওড়ায় ৩-৪ হাত। সম্মুখ এবং পশ্চাতে সরু। দাঁড় বাওয়ার জন্য অংশগ্রহণ করে ৪০-৬০ জন মাঝি। মাঝিদের এক সাথে দাঁড় বাওয়ার জন্য একজন তালে তালে ঘণ্টা বাজান। যাকে বলা হয় চড়নদার। চড়নদারের ঘণ্টার তালে তালে মাঝিরা যখন এক সাথে ঝুপ ঝুপ শব্দে বৈঠা ফেলে নদীর বুক চিরে নৌকা নিয়ে এগিয়ে যায়, তখন অসাধারণ দৃশ্যের অবতারণা ঘটেছে। নৌকাবাইচে সময় মাল্লারা সমবেত কণ্ঠে সারিগান গেয়ে মাঝিদের উৎসাহ ও শক্তি যোগায়। নৌকা বাইচকে উৎসাহ প্রদান ও ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রতিবছর বাংলাদেশে জাতীয় নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। তবে বর্তমান নানা প্রতিকূলতার কারণে প্রতিযোগিতামূলক এই উৎসবটি আমাদের দেশ থেকে বিলুপ্তির পথে।