বইপড়া
বইয়ের পাতার কালো অক্ষরে অমর হয়ে থাকে মানুষের চিরন্তন আত্মার দ্যুতি। বইয়ের পৃষ্ঠায় সঞ্চিত থাকে হাজার বছরের মানুষের জ্ঞান। বই হলো জ্ঞানের আধার। তাই বইপড়া জ্ঞান অর্জনের একটি প্রধান উপায়। এ ছাড়া বইপড়ার মাধ্যমে মানুষ সত্য, সুন্দর, কল্যাণ ও ন্যায়ের শাশ্বত রূপের সাথে পরিচিত হতে পারে এবং এসব গুণ নিজের চরিত্রে ধারণ করতে পারে। বই মানুষের চোখ খুলে দেয়। বইয়ের মাধ্যমে আমরা ঘরে বসে না দেখা অনেক বস্তু দেখতে পারি, অনেক রহস্যের জাল উন্মোচন করতে পারি। বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, লোকাচার, রীতিনীতি সম্পর্কে জানতে পারি। বই পড়ে মানুষ বিশ্বজগৎ ভ্রমণ করার আনন্দ পেতে পারে। বই পড়ে মানুষ বিশ্বজগৎ ও মহাকাশের অজানা রহস্য সম্পর্কে জানতে পারে। একটি ভালো বই মানুষের বিশ্বস্ত বন্ধুর মতো। এতে মনের প্রসার ঘটে। মানুষ তাই যুগে যুগে বই পড়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করেছে, নিজের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে স্প্রসারিত করেছে। মানুষের মনের খোরাক মেটায় বই। বইপড়ার মধ্য দিয়ে মানুষের মনোজগৎ পরিপূর্ণতা লাভ করে। বই পড়ে যেমন মানুষ বিশ্ব সম্পর্কে জানতে পারে ঠিক তেমনি বই পড়লে মানুষ মানুষের মনস্তাত্ত্বিক নানা ব্যাপার বুঝতে পারে। বইপড়ার মধ্যদিয়ে মানুষের অন্তরে এক ভূবন সৃষ্টি করা যায়। দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেল মনে করেন, “বই পড়ে মানুষের মনের ভেতর অনেকগুলো আনন্দময় ভুবন তৈরি করা যায় এবং সেই আনন্দময় ভুবনে ডুব দিয়ে সংসারের নানা জটিলতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।” এ সম্পর্কে ফরাসি দার্শনিক আনাতোল ফ্রাঁস বলেছেন, “বইপড়ার মাধ্যমে আমরা মাছির মতো মাথার চারদিকে অজস্র চোখ ফুটিয়ে তুলতে পারি। সেই চক্ষুপুঞ্জ দিয়ে একসঙ্গে পৃথিবীর অনেক কিছু দেখে নিতে পারি।” বই পড়েই মানুষের হৃদয় হয়ে উঠতে পারে ঐশ্বর্যমণ্ডিত ও আলোকিত। মানুষের ব্যক্তিত্ব গঠনের ক্ষেত্রেও বইয়ের ভূমিকা আছে। সুতরাং প্রতিটি মানুষের জন্য বই পড়া অতীব গুরুত্বপূর্ণ।