প্রতিবেদন : সন্ত্রাসী তৎপরতা প্রসারে জনজীবনের বেহাল অবস্থার ওপর প্রতিবেদন

তোমার এলাকার সন্ত্রাসী তৎপরতা দ্রুত প্রসারে জনজীবনের বেহাল অবস্থার ওপর একটি প্রতিবেদন রচনা কর।

নারায়ণগঞ্জের চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস : জনজীবন অতিষ্ঠ

নারায়ণগঞ্জ প্রাচ্যের ড্যান্ডি বলে খ্যাত। নগরসভ্যতা এখানে বেশ প্রাচীন। ব্যবসায়কেন্দ্রিক জীবন ব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার লোক এখানে বাস করে। ফতুল্লা থানা নারায়ণগঞ্জ সদর থানার সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। এখানে গড়ে উঠেছে বিসিক। তাছাড়া ফতুল্লাজুড়ে রয়েছে হাজার জাহার শিল্পকারখানা। অথচ এখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি একদম ভেঙে পড়েছে। এলাকার পাঁচ লক্ষ লোক জিম্মি হয়ে পড়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন এলাকাবাসী জানান, নদু বাহিনীর কাছে এলাকার লোক জিম্মি। নদু বাহিনীর অত্যাচারে এলাকার সাধারণ মানুষ সবসময় আতঙ্কিত। অফিস-আদালত,ব্যবসায়-বাণিজ্য,এমনকি বাসাবাড়িতে পর্যন্ত চাঁদা ধরা হয়। যেকোনো জায়গায় কিছু নির্মাণ করতে চাঁদা দিতে হয়, ছেলে বিয়ে করাতে, মেয়ে বিয়ে দিতে চাঁদা দিতে হয়, চাঁদা দিতে হয় কেউ বিদেশে থাকলেও। সবচেয়ে অবাক করা ঘটনা হচ্ছে গত সপ্তাহে এক কলেজ পড়ুয়া ছাত্র তার বান্ধবীকে নিয়ে ঘুরতে বেড়য়েছিল, তাকেও চাঁদা দিতে হয়েছে। তাদের দুজনকে রিকশা থেকে নামায় নদু বাহিনী পাগলা ছক্কু। পাঁচ হাজার টাকা দাবি করলে মেয়েটি তার গলার স্বর্ণের চেন দিয়ে নিজেদের রক্ষা করে। এ রকম ঘটনা অহরহ ঘটছে সর্বত্র। পান দোকানের মালিক থেকে পাঞ্জাবি উৎপাদনের গার্মেন্টস পর্যন্ত কেউ চাঁদা না দিয়ে পার পায় না গার্মেন্টস, ডাইং, রুলিং মিল তথা সব ধরনের শিল্পকারখানা নদু বাহিনীকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা দিতে বাধ্য। এর আগে এখানে রাজত্ব করেছে রকমত, তার আগে ইস্রাফিল। ইস্রাফিলকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে ভোররাতে বিপক্ষ গ্রুপ মেরে ফেলে। উত্থান হয় রকমতের রাজত্বের অবসান ঘটে নারায়ণগঞ্জ পুলিশের ক্রসফায়ারে। এখন চলছে নদু বাহিনীর রাজত্ব। এখানে সন্ত্রাসীরা ছিল, ভাবখানা এমন যে চিরকাল থাকবে।

নাম প্রকাশ না করে এক গার্মেন্টস ব্যবসায়ী জানান, এ বছর প্রথম দিকে এম এম বাইংয়ের কাছে নদু বাহিনী দশ লাখ টাকা চাঁদা চাইলে মালিকপক্ষ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মালিকের কলেজপড়ুয়া মেয়েকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায় নদু বাহিনী। শেষ পর্যন্ত মালিক মেয়ের জীবন রক্ষার্থে উল্লেখিত টাকা দিয়ে ৬ ঘন্টা পর মেয়েকে উদ্ধার করে।

এরকম ঘটনা এলাকায় অহরহ ঘটছে। চাঁদার জন্য অনেক মায়ের বুক খালি হয়েছে। অনেক স্ত্রী হারিয়েছে স্বামীকে। অনেক মেয়ে হয়েছে ধর্ষিত। নদু বাহিনী এখন খুন-হত্যা, চাঁদাবাজি, ধর্ষণে এক লোমহর্ষক বিভীষিকা।

সরকার এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিলে সন্ত্রাস চাঁদাবাজি নির্মূল কোনো কঠিন কাজ নয়। এ অবস্থা থেকে এলাকাবাসী মুক্তি চায়।

প্রতিবেদক
রবিন রায়হান।

প্রতিবেদনের শিরোনাম : নারায়ণগঞ্জের চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস : জনজীবন অতিষ্ঠ
প্রতিবেদকের নাম : রবিন রায়হান
এলাকার নাম : ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ
প্রস্তুতের সময় ও তারিখ : সকাল ১০টা, ১০জুন, ২০১৮।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post