শিক্ষাঙ্গনে ছাত্ররাজনীতির অবসানকল্পে যুক্তি প্রদর্শন করে সংবাদপত্রে
প্রকাশের জন্য সম্পাদককে একটি পত্র লেখ।
২৫.০৭.২০২১
সম্পাদক,
দৈনিক যুগান্তর,
ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড)
বারিধারা, ঢাকা-১২২৯।
বিষয় : ‘রাজনীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গন চাই’ শীর্ষক পত্রখানা প্রকাশের জন্য
আবেদন।
জনাব,
আপনার জনবহুল পত্রিকা ‘দৈনিক যুগান্তর’-এ আমার এ জাতীয় গুরুত্বসম্পন্ন পত্রখানা
ছাপানোর ব্যবস্থা করে কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করবেন।
বিনীত-
সিয়ামুল ইসলাম,
কোনাপাড়া, ডেমরা, ঢাকা।
রাজনীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গন চাই
শিক্ষাঙ্গন হলো ছাত্রদের স্বর্গ, পবিত্রতম স্থান। ব্যক্তির চালিকাশক্তি যেমন
প্রাণ; দেশ ও জাতির কেন্দ্রবিন্দু তেমনি শিক্ষাঙ্গন। কিন্তু আজকের শিক্ষাঙ্গন আর
ছাত্রদের স্বর্গ নয়। এখানে এসে বাসা বেঁধেছে সন্ত্রাস; সৃষ্টি হচ্ছে নৈরাজ্য।
দেশের শিক্ষাঙ্গনগুলোর দিকে তাকালে একটি বেদনাময় চিত্র দৃষ্টিগোচর হয়। একটি চরম
অশান্ত পরিবেশ প্রায় প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই বিরাজ করছে। কলমের পরিবর্তে
শিক্ষার্থীরা হাতে তুলে নেয় অস্ত্র। এজন্য দায়ী সরকারি ও বিরোধী দল। যে
রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসুক, সে দলই তাদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য শিক্ষাঙ্গনে
হানা দেয়। ছাত্রদের দলভুক্ত করে। হাতে তুলে দেয় অস্ত্র। ফলে শিক্ষার্থীরা
বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে যায়। অস্ত্রের খেলা শুরু হয় প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্র
সংগঠনের মধ্যে। মাঝে মাঝে ছাত্রাবাসগুলো বোমা তৈরির কারখানায় পরিণত হয়। ফলে
শিক্ষাঙ্গনে সৃষ্টি হয় বিশৃঙ্খল পরিবেশ।
এ অরাজক অবস্থায় চরম ক্ষতি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। মুষ্টিমেয় বিপথগামী ছাত্রের
জন্য বিনষ্ট হচ্ছে শিক্ষাঙ্গনের লেখাপড়ার পরিবেশ। নিরীহ ছাত্রদের কিছুই করার
থাকে না। অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হচ্ছেন সন্তানদের ভবিষ্যৎ ভেবে। যথার্থ সময়ে কোর্স
শেষ হয় না। সৃষ্টি হয় সেশন জট। ফলে শিক্ষার্থীদের অনেকের জীবনে দেখা দিয়েছে
নৈরাশ্য। এভাবেই জাতির ভবিষ্যৎ হয়ে উঠেছে অন্ধকারাচ্ছন্ন।
দেশের রাজনীতিবিদরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির প্রয়োজনে ছাত্র ও যুবকদের দলে টানছেন
এবং আখের গোছাতে ব্যস্ত রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় তো দূরের কথা,
গ্রামের স্কুলের সরলপ্রাণ ও কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা এসব রাজনৈতিক দলের শিকার
হচ্ছে। তারা নিজস্ব সত্তা হারিয়ে রাজনৈতিক সংগঠনের ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করে।
তারা সন্ত্রাসী হয় অদৃশ্য হাতের ইঙ্গিতে।
ছাত্ররা রাজনীতিসচেতন হোক তাতে ক্ষতি নেই। কিন্তু স্বার্থবাজ রাজনীতিকদের হাতে
পড়ে তাদের মূল্যবান জীবন বিনষ্ট হোক এটি কাম্য নয়। রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি
পরিহার করে জ্ঞানচর্চায় মনোনিবেশ করতে হবে এবং যোগ্য নাগরিকরূপে নিজেদের
প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এবং ম্যানেজিং
কমিটি বা পরিচালনা পরিষদের ভূমিকাও কম নয়। তাঁরা কঠোর হলে শিক্ষাঙ্গনে সুশৃঙ্খল
পরিবেশ তৈরি করতে পারেন।
নিবেদক-
সিয়ামুল ইসলাম,
কোনাপাড়া, ডেমরা, ঢাকা।