সাবাস বাংলাদেশ এ পৃথিবী
অবাক তাকিয়ে রয়;
জ্বলে-পুড়ে মরে ছারখার
তবু মাথা নোয়াবার নয়।
মূলভাব : বাঙালি জাতি বীরের জাতি। তারা অন্যায়ের কাছে মাথা নোয়াবার নয়, বরং সকল প্রকার জুলুম-নির্যাতনের সমুচিত জবাব দিয়ে পৃথিবীর বুকে স্থাপন করেছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
সম্প্রসারিত ভাব : বাঙালি জাতি চিরকালই শান্তি প্রিয় ও স্বাধীনচেতা জাতি। বাঙালির প্রাকৃতিক পরিবেশেই আছে তাদের প্রতিবাদের ভাষা। অপরের বশ্যতা সে কোনো কালেই মেনে নিতে পারেনি। বাংলার ধনধান্য পুষ্পের আকর্ষণে তুর্কি, আফগান, পাঠান, মোগলরা এদেশে আসে এবং দীর্ঘকালব্যাপী শাসন করে। এরপরই বাংলার শোষণ ও লুণ্ঠনের জন্য ইংরেজরা আসে। তারা এদেশের কৃষি সমাজের উপর নির্মম শাসন-শোষণ করে এদেশের ধন-সম্পদ লুট করে নিয়ে যায়। বাঙালির তীব্র প্রতিবাদে প্রায়ই দু’শ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। এরপর বাঙালি জাতির উপর চেপে বসে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর অমানবিক শাসন। তারা বাঙালি জাতির রাজনীতিক, অর্থনীতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার হরণ করে। তারা এদেশের মানুষের উপর ব্যাপক জুলুম-নির্যাতন করে। এদেশের গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সব জাগায় আগুন জ্বালিয়ে ছারখার করে ধ্বংস স্তুপে পরিণত করে। বাঙালি জাতিও দমে যাওয়ার পাত্র নয়। তারা ধ্বংস স্তূপের উপর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। জীবন বাজি রেখে প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। এদেশ ও জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করেছে। সমস্ত পৃথিবীকে অবাক করেছে বাঙালি জাতির এ বীরত্ব।
বাঙালি জাতি চিরকালই মুক্তি প্রিয়। তারা দেশ ও জাতির মুক্তির জন্য বিভিন্ন সময় গড়ে তোলে দুর্বার আন্দোলন।