ব্যাংক একীভূতকরণ ও অধিগ্রহণ : কী, কেন ও কীভাবে?

একীভূতকরণ একীভূতকরণ বা ‘মার্জার’ হলো দুই বা ততোধিক কোম্পানির একত্রীকরণ। এর ফলে নতুন কোম্পানি সৃষ্টি হতে পারে; আবার আকারে ছোট কোনো কোম্পানি বড় কোম্পানির সঙ্গে একীভূত হলে বড় কোম্পানির সঙ্গে ছোট কোম্পানির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যেতে পারে।

একীভূতকরণ দুই প্রকার হতে পারে। এক. ভার্টিক্যাল একীভূতকরণ। এ ক্ষেত্রে একই ব্যবসায় নিয়োজিত দুটি কোম্পানি একীভূত হয়। যেমন একটি কর্মাশিয়াল ব্যাংকের সঙ্গে সমজাতীয় একটি ব্যাংকের একীভূতকরণ। দুই. হরাইজনটাল একীভূতকরণ। এ ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন ব্যবসায় নিয়োজিত দুটি কোম্পানি একীভূত হয়। যেমন একটি ভোগ্যপণ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানির সঙ্গে একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানির একীভূতকরণ।

আরও এক ধরনের একীভূতকরণ রয়েছে, যাকে বলা হয় অ্যামালগামেশন। ইংরেজি ‘মার্জার’ ও ‘অ্যামালগামেশন’ শব্দদ্বয়কে বাংলা করলে একই অর্থ দাঁড়ায়– একীভূতকরণ বা একত্রীকরণ। কিন্তু মার্জার ও অ্যামালগামেশনের মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে। অ্যামালগামেশন এমন একটি একত্রীকরণ পদ্ধতি, যেখানে দুটি সমমানের কোম্পানি এক হয়ে নতুন একটি কোম্পানির অস্তিত্ব সৃষ্টি করে।

ব্যাংক একীভূতকরণ ও অধিগ্রহণ

এ ক্ষেত্রে সৃষ্ট নতুন কোম্পানির শেয়ার অ্যামালগামেটেড কোম্পানিগুলোর শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। তারা সবাই নতুন কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার। দুই বা ততোধিক কোম্পানি যখন অ্যামালগামেশন পদ্ধতিতে একীভূত হয়, তখন তাদের সমুদয় সম্পদ ও দায় নতুন কোম্পানির আর্থিক বিবরণীতে স্থানান্তর করা হয়। উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক সমমানের দুটি কোম্পানি ক এবং খ। এই দুটি কোম্পানি অ্যামালগামেটেড হলে নতুন কোম্পানি কখ (ক+খ) হয়ে যাবে। পক্ষান্তরে ‘মার্জার’ হলো এমন একটি একত্রীকরণ পদ্ধতি, যেখানে ছোট একটি কোম্পানি বড় কোম্পানির সঙ্গে একত্রিত হয়। এর ফলে নতুন একটি কোম্পানি সৃষ্টি হতে পারে; আবার বিদ্যমান কোম্পানি অপরিবর্তিত থেকে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে কোম্পানির আকার বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। তবে যে কোম্পানি অন্য কোনো কোম্পানিকে এ পদ্ধতিতে একীভূত করে নেয়, তার আকারই বড় থাকে। আর সম্পদ ও দায় একীভূত কোম্পানির সঙ্গে একত্র (কনসলিডেট) করা হয়।

একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। ‘খ’ একটি ছোট এবং দুর্বল ব্যাংক। ‘ক’ একটি সবল ব্যাংক। এ ক্ষেত্রে ‘ক’ যদি ‘খ’-কে একীভূত করে নেয়, ‘ক’ ব্যাংক বিদ্যমান থেকেই ‘খ’ ব্যাংকের সম্পদ ও দায় একত্র করে নিতে পারে; আবার ইচ্ছা করলে একটি নতুন নামেও আবির্ভূত হতে পারে।

অধিগ্রহণ সহজ সরল ভাষায় অধিগ্রহণ বা ‘অ্যাকুইজিশন’ হলো কোনো সম্পদ, উৎপাদন কেন্দ্র, কোনো কোম্পানির কোনো অংশ বা সম্পূর্ণ কোম্পানি ক্রয় করে নেওয়া। এ ক্ষেত্রে যে কোম্পানি অন্য একটি কোম্পানিকে ক্রয় করতে আগ্রহী, সেটাকে বলা হয় ক্রেতা কোম্পানি। যে কোম্পানি বিক্রয় হবে, তাকে বলা হয় টার্গেট কোম্পানি। অধিগ্রহণ পদ্ধতিতে ক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রেতা কোম্পানি টার্গেট কোম্পানির শেয়ার বা সম্পদ ক্রয় করতে পারে। নগদ টাকা, ক্রেতা কোম্পানির সিকিউরিটিজ বা অন্য কোনো সম্পদ বিনিময়ের মাধ্যমে টার্গেট কোম্পানির মূল্য পরিশোধ করা যায়। এই অধিগ্রহণের ক্ষেত্রেও ভার্টিক্যাল ও হরাইজনটাল শ্রেণীকরণ প্রযোজ্য। ‘এম অ্যান্ড এ’ করপোরেট দুনিয়ায় একত্রীকরণ ও অধিগ্রহণ অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের বাহন। এই পরিবর্তনে অনেক বাধা (রেজিস্ট্যান্স) আছে। এসব দূরীকরণে এ বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। তবেই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সচেতনতা, প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনা তৈরি করা সম্ভব।

তবে একত্রীকরণের মধ্যে ইতিবাচক ইঙ্গিত আছে; অধিগ্রহণের মধ্যে আছে নেতিবাচক ইঙ্গিত। কারণ অধিগ্রহণকে ‘টেকওভার’ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। ফলে মার্জার ও অ্যাকুইজিশনস শব্দদ্বয়কে ‘এম অ্যান্ড এ’ নামে একটিকে অন্যটির সঙ্গে সম্পৃক্ত করে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে আজকাল করপোরেট রিস্ট্রাকচারিং বা পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে মার্জার বা অ্যাকুইজিশন শব্দ দুটিকে আলাদা নামে না ডেকে ‘এম অ্যান্ড এ’ নামেই ডাকা হয়।

প্রায়োগিক ও আইনগত দিক একীভূতকরণ ও অধিগ্রহণ একটি ব্যবসায়িক কৌশল। সঠিক ব্যবসায়িক কৌশল গ্রহণ ও বাস্তবায়নে ব্যবসায়িক কৌশল পরিকল্পনা অত্যাবশক। কারণ চিন্তা, পরিকল্পনা ও কার্যকরকরণ– এই তিনটি শিরোনামের অধীনে ব্যবসা পরিকল্পনায় উদ্যোক্তারা খুব কার্যকরভাবে লাভবান হন। দক্ষ নির্বাহী ও উদ্যোক্তারা সব সময়ই তাদের ব্যবসায় রেভিনিউ এবং মার্কেট শেয়ার বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৌশলগত বিকল্প খুঁজে বের করতে সচেষ্ট থাকেন। এই বিকল্প মূলত দুই ধরনের– অভ্যন্তরীণ (অর্গানিক) ও বাহ্যিক (ইনঅর্গানিক)।


একীভূতকরণ ও অধিগ্রহণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক যুক্তি অনুসরণ করে ব্যবসা সম্প্রসারণ হলো বাহ্যিক বিকল্প। সুতরাং একীভূতকরণ ও অধিগ্রহণ সারাবিশ্বের করপোরেট জগতে অনুসৃত একটি ব্যবসায়িক কৌশল। কোনো নতুন ব্যবসা বা চলমান কোনো ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য নতুন করে সবকিছু শুরু থেকে নির্মাণ না করে চলমান অন্য কোনো সম্পূর্ণ বা আংশিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান একীভূত বা অধিগ্রহণ করে অল্প সময়ে কম খরচে ব্যবসা সম্প্রসারণ সম্ভব। এ ক্ষেত্রে টার্গেট কোম্পানি এবং ক্রেতা বা একীভূত হওয়া কোম্পানি উভয় পক্ষই লাভবান হতে পারে। এতে মূলধন সংক্রান্ত খরচ হ্রাস পায়, প্রতিযোগিতার তীব্রতা কমে, মূল কর্মদক্ষতা (কোর কম্পিট্যান্স) বৃদ্ধি পায়, উৎপাদনের ক্ষেত্রে সিনারজিস্টিক বা বহুগুণ ফল পাওয়া যায়। সর্বোপরি দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও কর্মী গড়ে ওঠে।

পথনকশা বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের ব্যাংক শিল্পে প্রয়োজনীয় সংস্কারের অংশ হিসেবে একীভূতকরণ বা অধিগ্রহণের ব্যাপারে যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা অবশ্যই সময়োপযোগী এবং প্রশংসার দাবি রাখে। দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি ব্যাংক শিল্পকে সচল রাখতে বর্তমান অবস্থায় কৌশল হিসেবে একীভূতকরণ বা অধিগ্রহণের বিকল্প নেই। অ্যাসেট কনসলিডেশন এবং রিসোর্স অপটিমাইজেশনের মাধ্যমে ব্যাংক শিল্পের শক্ত অবস্থান ধরে রাখতে হবে।

ব্যাংক শিল্পে নানা সমস্যা সমাধানে গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি পথনকশা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে। সেখানে ব্যাংক একীভূত করার বিষয়টিও ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিকল্পনা অনুযায়ী দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত (মার্জার) হওয়ার কথা বলা হয়। পত্রিকান্তরে এই সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় জল্পনা-কল্পনা ও আশঙ্কা। যেমন– উদ্যোক্তাদের কী হবে, আমানতকারীদের কী হবে, ব্যাংক কর্মচারীদের কী হবে ইত্যাদি। অতি সম্প্রতি এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে পদ্মা ব্যাংকের একীভূত হওয়ার খবরটি একীভূতকরণ ও অধিগ্রহণের আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আগেই বলা হয়েছে, একীভূতকরণ ও অধিগ্রহণ একটি ব্যবসা পুনরুজ্জীবিত বা সম্প্রসারণ বা সবল করার কৌশল। মুক্তবাজার অর্থনীতির অনুসারী হিসেবে নিয়মনীতি মেনেই অধিকসংখ্যক ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। এখানে অসুবিধা বা সমালোচনার কিছু নেই। লাইসেন্স দেওয়ার পর যে ব্যাংক টিকে থাকার সক্ষমতা অর্জন করেছে সেটি টিকে থাকবে। যে ব্যাংক ক্রমেই দুর্বল হচ্ছে সেই ব্যাংক সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হবে। এখানে সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট বা যোগ্যতমের বাঁচার অধিকার– এ নীতিই প্রতিফলিত হবে। এখানেও একটি প্রতিযোগী মনোভাব সৃষ্টির সুযোগ থাকে।

সুফল বা কুফল একীভূতকরণ হোক আর অ্যামালগামেশন বা অধিগ্রহণ হোক, যদি তা সঠিক পেশাদারদের অংশগ্রহণে পেশাদারিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়, তবেই সুফল আসবে। এ ক্ষেত্রে সঠিক নেগোসিয়েশন, আর্থিক ডিউডিলিজেন্স, লিগ্যাল ডিউডিলিজেন্স, মানবসম্পদ সংক্রান্ত ডিউডিলিজেন্স, ওয়ারেন্টি ও রিপ্রেজেন্টেশন, সঠিক ও চূড়ান্ত ডিল মেকিং এবং এর পর পোস্ট মার্জার ইন্টিগ্রেশন (পিএমআই)– এ পর্যায়গুলো নিখুঁতভাবে প্রতিপালন করতে হবে। এই পেশাদারিত্ব সম্পর্কে আলাদা একটি নিবন্ধে বিস্তারিত লেখার প্রতিশ্রুতি রইল।

উদ্যোক্তাদের কী হবে সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই মুনাফা অর্জনের মাধ্যমে টিকে থাকার আশা নিয়েই যাত্রা শুরু করে। কোনো উদ্যোক্তাই টিকে না থাকার কথা ভেবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করেন না। তাই বলে শতভাগ উদ্যোগ সফল হবে, তা অবাস্তব। উন্নত দেশেও একই অবস্থা। কোনো কোম্পানি যখন খুব খারাপ অবস্থায় চলে যায়, পাওনাদারদের দায় মেটাতে অক্ষম হয়ে যায়, তখন ওই কোম্পানি অবসায়নের মাধ্যমে বিলুপ্ত হয়ে যায়। ব্যাংক কোম্পানির ক্ষেত্রেও বিলুপ্তির এই পথ খোলা আছে। তবে ব্যাংক কোম্পানি যেহেতু জনসাধারণের অর্থ বা ‘পাবলিক মানি’ নিয়ে কাজ করে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে নিয়ন্ত্রিত আর্থিক সেবা প্রদান করে, তাই অবসায়নের পথে না গিয়ে বিকল্প হিসেবে একীভূতকরণ ও অধিগ্রহণ কৌশলই উত্তম। অবসায়ন হলে উদ্যোক্তাসহ সব স্টেকহোল্ডারেরই অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর অবসায়নের ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের পরিচয়ও বিলুপ্ত হয়ে যায়। একীভূত হওয়ার ফলে দুর্বল ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হলেও ক্ষতির পরিমাণ কমই হবে। ফলে এই বিকল্পটি মেনে নিতে সমস্যা থাকার কথা নয়। এ তো গেল একীভূতকরণ পদ্ধতির কথা। যদি অ্যামালগামেশন কৌশলটি গ্রহণ করা হয়, তবে উদ্যোক্তাদের পরিচয় বিলুপ্ত হবে না। এ ক্ষেত্রে দুই বা ততোধিক দুর্বল ব্যাংক মিলে একটি নতুন ব্যাংক গঠন করতে পারে। আবার দুই বা ততোধিক দুর্বল এবং ভালো ব্যাংক মিলেও একটি নতুন ব্যাংক গঠন করতে পারে। তবে অ্যামালগামেশনের বেলায় সমমানের কোম্পানিগুলোই একীভূত হয়ে নতুন কোম্পানি গঠন করে।

পত্রিকান্তরে প্রকাশ, ব্যাংক একীভূতকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক বলে দিয়েছে– একীভূত হওয়ার পর দুর্বল ব্যাংকের পরিচালকরা আর পরিচালক থাকতে পারবেন না। আমরা জানি, কোনো ব্যবসা যখন ক্রমাগত ক্ষতির সম্মুখীন হয় তখন ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়াই লাভজনক। সুতরাং দুর্বল ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে একটা ধারণা এখানে পাওয়া যায়।

আমানতকারীদের কী হবে যেহেতু একীভূতকরণ বা অধিগ্রহণ ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং অধিক মুনাফা অর্জনের একটি ব্যবসায়িক কৌশল, সেহেতু এ ক্ষেত্রে আমানতকারীদের আমানত অক্ষত থাকার সম্ভাবনা বেশি। পক্ষান্তরে কোনো দুর্বল ব্যাংক আরও দুর্বল হয়ে যদি অবসায়নের মাধ্যমে বিলুপ্ত হয়ে যায়, তবে আমানতকারীদের ক্ষতির আশঙ্কা অনেক বেশি। একীভূতকরণের মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংকের সম্পদ ও দায় ভালো ব্যাংকের আর্থিক বিবরণীতে কনসলিডেট হয়ে যাবে। আমানতকারীদের তখন ভালো ব্যাংকের আমানতকারী থাকতে বাধা নেই। তা ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক বলেই দিয়েছে, দুর্বল ব্যাংক ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হলে দুর্বল ব্যাংকের খারাপ সম্পদ বা ঋণ সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি কিনে নেবে। ফলে আমানতকারীদের এখানে দুশ্চিন্তার তেমন কারণ নেই।

জনবলের কী হবে অবসায়নের মাধ্যমে কোনো কোম্পানি বিলুপ্ত হলে ওই কোম্পানির জনবলও কর্মহীন হয়ে যায়। কিন্তু একীভূত বা অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে হিউম্যান ক্যাপিটাল ক্যাটেগরির জনবল একীভূতকারী কোম্পানির সঙ্গে আত্তীকরণ করে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী আত্তীকরণের আওতায় আসবেন না, তাদের টার্গেট কোম্পানির চাকরিবিধি অনুযায়ী প্রাপ্ত পরিশোধ করে টার্মিনেট করা হয়। উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক, ‘ক’ একটি দুর্বল ব্যাংক এবং ‘খ’ একটি ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হলো। এ ক্ষেত্রে হিউম্যান রির্সোস ডিউডিলিজেন্সের সময় দক্ষ জনবল চিহ্নিত করে পিএমআই করার সময় দক্ষ জনবল ‘খ’ ব্যাংকের সঙ্গে আত্তীকরণ করে বাকিদের ‘ক’ ব্যাংকের চাকরিবিধি অনুযায়ী তাদের প্রাপ্য পরিশোধ করে টার্মিনেট করা যাবে। এ ক্ষেত্রে নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে একীভূতকরণ স্কিমে বিষয়টি উল্লেখ করা আবশ্যক। এ ব্যাপারে পেশাদার মানবসম্পদ সংক্রান্ত কনসালট্যান্ট ও আইনজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। এখানেও পেশাদারিত্বের বিষয়টি সম্পৃক্ত।

উপরোক্ত আলোচনায় একীভূতকরণ ও অধিগ্রহণের ধারণা, এসবের প্রয়োজনীয়তা এবং সম্প্রতি ভালো ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংকের একীভূত করার বিষয়ে উঠে আসা নানা প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয়েছে। তবে আলোচিত ব্যাংক একীভূতকরণের সফলতা নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিকতা ও সদিচ্ছার ওপর।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post