ভাবসম্প্রসারণ : গাইতে গাইতে গায়েন, বাজাতে বাজাতে বায়েন

গাইতে গাইতে গায়েন,
বাজাতে বাজাতে বায়েন

মূলভাব : মানুষ একদিনেই কোন কাজে দক্ষ হয়ে উঠে না। তার দক্ষতা লাভের পেছনে রয়েছে দীর্ঘদিনের অভ্যাস ও অনুশীলন। অধ্যবসায় মানুষকে সাফল্যের দিকে নিয়ে যায়। কোন কাজে সাফল্য লাভের জন্য বারবার চেষ্টা করার মহৎ প্রবৃত্তি থাকা প্রয়োজন। এ প্রবৃত্তির বলে মানুষ অসাধ্যকে সাধন করতে পারে। অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে। অধ্যাবসায় সহকারে ধীরে ধীরে অগ্রসর হলে মানুষ একদিন না একদিন সফল হবেই। পরিশ্রম ও উদ্যম ছাড়া কোন কাজে সফলতা লাভ করা যায় না। বিজ্ঞানী নিউটন বলতেন, “আমার আবিষ্কারের কারণ প্রতিভা নয়, বহু বছরের নিরবচ্ছিন্ন সাধনা ও পরিশ্রম।” সবকাজেই আমাদেরকে ধৈর্য ও অধ্যবসায় সহকারে বার বার চেষ্টা করতে হবে। দুচার দিনের চেষ্টায় মানুষ গাইতেও পারে না বাজাতেও পারে না, কিন্তু গাইতে গাইতে এক দিন সফল গায়ক হওয়া যায়। অধ্যবসায়ই সফলতার চাবিকাঠি। পরিশ্রম, পর্যবেক্ষণ ও সহিষ্ণু সাধনার কাছে কোন কিছুই অসম্ভব নয়।

একথা সহজেই বলা যায়, অনুশীলন ও অধ্যবসায়ই মানুষকে তার ইস্পিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়।


এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো


মানুষের নিকট কোনো কিছুই আসাধ্য নয়। বারবার অনুশীলন করলে যে কোনো বিষয়েই বুৎপত্তি লাভ করা সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন সেই বিষয়ের প্রতি নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়। আবার মানুষ এক দিনেই কোনো কাজে দক্ষ হয়ে উঠে না। তার দক্ষতা লাভের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ দিনের অভ্যাস ও অনুশীলন। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই এ কথাটি প্রযোজ্য। দীর্ঘদিন সঙ্গীত চর্চা করলে যেমন কেউ যথার্থ সঙ্গীত শিল্পী হতে পারেন, তেমনি দীর্ঘদিন বাদ্যযন্ত্র নিয়ে চার্জ করলে কেউ যথার্থ বাদ্যযন্ত্রী হতে পারেন। শিল্পী, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী ইত্যাদি বিশেষণ নিয়ে মানুষ জন্মগ্রহণ করে না। এগুলো অর্জন করতে হয়। সাহিত্য, শিল্প, বিজ্ঞান বা অন্য বিষয়ে আজ যারা সাফল্য অর্জন করেছেন, একদিনেই সে সাফল্য অর্জিত হয়নি। তাদের এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে ঐকান্তিক আগ্রহ ও নিরলস প্রচেষ্টা। নিষ্ঠাভরে অনুশীলন করেছেন বলেই আজ তারা শিল্পী, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী অভিধায় অভিহিত হতে পেরেছেন। সুতরাং একথা সহজেই বলা যায়, অনুশীলন ও অধ্যবসায়ই মানুষকে তার ঈপ্সিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়।


এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো


মূলভাব : যেকোনো কাজে সাফল্যলাভ করতে হলে, দক্ষ হতে হলে তা যথাযথভাবে চেষ্টা করা প্রয়োজন। কারণ চেষ্টা ভিন্ন কোনো কাজে সাফল্য অর্জন করা যায় না। চেষ্টার মাধ্যমে অপটু মানুষও যেকোনো কাজে দক্ষতা অর্জন করে পারদর্শী হয়ে উঠতে পারে। 

সম্প্রসারিত ভাব : পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষই প্রকৃত চেষ্টা ও অনুশীলনের মাধ্যমে পরিপূর্ণতা অর্জন করে। পৃথিবীতে কেউই শিল্পী বা গায়ক হয়ে জন্মগ্রহণ করে না। চেষ্টার মধ্য দিয়েই একজন শিল্পকাজে উৎকর্ষ লাভ করে। গায়ক বা শিল্পী যে-ই হওয়ার চেষ্টা করুক না কেন তাকে প্রতিনিয়তই অনুশীলন করতে হবে। পৃথিবীতে সকল মানুষই কর্মক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হয়। এ বাধাই মানুষকে সাফল্যপ্রত্যাশী করে তোলে। দৃঢ় মনোবল ও অজেয় মনোভাব মানুষকে সব বাধা অতিক্রমণ করতে সাহায্য করে। কোনো কাজে অকৃতকার্য হয়ে ঘরে বসে থাকলে সাফল্য কখনোই ধরা দেবে না। প্রবল আত্মশক্তি নিয়ে পুনরায় আবার কাজে ফিরে আসতে হবে। জটিল ও কঠিন কাজে প্রথম চেষ্টায় সফল না হলে পুনরায় ধৈর্যের সঙ্গে চেষ্টা করতে হবে। প্রতিনিয়ত চেষ্টার মধ্য দিয়েই একমাত্র সফলতা আসতে পারে। জীবনের সর্বক্ষেত্রে মানুষের এ চেষ্টা প্রয়োজন। অনেকক্ষেত্রে প্রকৃতি তাকে এ শিক্ষা দিয়ে থাকে; শিশুকালে বারংবার হাঁটার প্রচেষ্টার মধ্য দিয়েই শিশু নিজের পায়ে হাঁটতে শেখে। ছাত্রজীবনেও কঠিন থেকে কঠিনতর বিষয় আয়ত্ত করতে বারবার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়। পৃথিবীর সকল ক্ষেত্রেই জীবনবাধাকে অতিক্রম করে মানুষ সফলতা অর্জন করেছে। কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করেছিলেন স্বীয় চেষ্টা দ্বারা। এভাবে সব আবিষ্কারক সব বিজ্ঞানীই চেষ্টার মধ্য দিয়ে লক্ষ্যকে অর্জন করতে সমর্থ হয়েছেন। মানুষের জীবনে প্রতিযোগিতা লেগেই থাকে এবং প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়েই সে সাফল্য অর্জন করে। বারবার চেষ্টায় নিজের সকল অক্ষমতাকে দূর করা যায়। পৃথিবীতে আজকে সভ্যতার যে অগ্রগতি তার পেছনে রয়েছে মানুষের নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টা। চেষ্টার গুণেই মানুষ তীক্ষ্ণবুদ্ধি, বিদ্যা, স্মৃতিশক্তি ও অন্যান্য বিচার ক্ষমতার অধিকারী হয়। চেষ্টাই মানুষকে নিয়ে যায় সাফল্যের স্বর্ণশিখরে।

মন্তব্য : যেকোনো কাজে সফলতার মূলমন্ত্রই হলো অনুশীলন; বারবার অনুশীলনে সফলতা এলে অন্তরে আত্মবিশ্বাস জাগে। এক্ষেত্রে একটি উক্তি আমাদের প্রাতঃস্মরণীয়, 'সুন্দর দিন সবার জন্য অপেক্ষা করে, কেউ চেষ্টায় আনে কেউ আনে না।'

1 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post