ভূমিকা : বিশ্বায়ন মূলত একটি সর্বব্যাপী ও সার্বক্ষণিক চলমান প্রক্রিয়া। তথ্যপ্রযুক্তি ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ব্যাপক প্রসারের ফলে পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি মানুষই একটি একীভূত বিশ্বব্যবস্থায় মিলিত হচ্ছে। ক্রমেই লীন হচ্ছে ভৌগোলিক সীমারেখা ও চিন্তার ভিন্নতাসূচক স্বাতন্ত্র্যবোধ। মানুষ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বসবাস করলেও প্রত্যেকে প্রত্যেকের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে উন্নত যোগাযোগ নেটওয়ার্কের ফলে। তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রবাহের এ যুগে উন্নত যোগাযোগ নেটওয়ার্কের ফলে। তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রবাহের এ যুগে উন্নত সংস্কৃতি দুর্বল সংস্কৃতিকে গ্রাস করবে কি-না এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিশ্বব্যাপী। আমাদের সংস্কৃতি নিঃসন্দেহে অনেক গৌরবময় ঐতিহ্যের অধিকারী কিন্তু তা সত্ত্বেও বিশ্বায়ন আমাদের সংস্কৃতিতে কি প্রভাব বিস্তার করবে, সুদূরপ্রসারী কি পরিবর্তন ঘটবে তা এখনই ভেবে দেখার বিষয়।
বিশ্বায়ন : নব্বই-এর দশকের শুরুতেই সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর পরিবর্তিত বিশ্বব্যবস্থায় সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আলোচিত একটি বিষয় হলো বিশ্বায়ন। মার্শাল ম্যাকলোহান-এর মতে ‘গ্লোবাল ভিলেজ’-এর অন্য একটি রূপই হচ্ছে বিশ্বায়ন। একে অভিহিত করা হয় এমন একটি প্রক্রিয়া হিসেবে, যা রাষ্ট্র ও সম্প্রদায়ের পুরোনো কাঠামো ও সীমানাকে অবলুপ্ত করেছে। বিশ্বায়নকে বলা হচ্ছে একটি সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক জীবনের ক্রমবর্ধমান পরাজাতীয়করণ (Transnationalization), যার ফলে সৃষ্টি হয়েছে এক বিশ্ব সীমানা, এক বিশ্ব সম্প্রদায়। এটি এমন একটি সর্বব্যাপী অভিজ্ঞতা যে আমাদের জীবনের অধিকাংশ দিকই এর আওতাভুক্ত হয়ে পড়েছে।
গিডেন্স (Giddens) বিশ্বায়ন প্রসঙ্গে বলেন, ‘স্থানিক অভিজ্ঞতার মূলসূত্রই বদলে গেছে, নৈকট্য ও দূরত্ব পরস্পরের সাথে এমনভাবে একত্র হয়েছে যার তুলনা অতীত থেকে মেলা ভার।’
সংস্কৃতি : সংস্কৃতি শব্দটির অর্থ অত্যন্ত জটিল। সংস্কৃতির সাথে জীবনের নিগূঢ় সম্পর্ক আছে। সংস্কৃতিকে সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় না। সংস্কৃতি হলো মানুষের আচরণের সমষ্টি। মানুষের জাগতিক নৈপুণ্য ও কর্মকুশলতা, তার বিশ্বাস, আশা-আকাঙ্ক্ষা, কলা ও নৈতিকতা, রাজনীতি, ভাষা, মূল্যবোধ সবকিছুই সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত। সংস্কৃতি হচ্ছে সমাজের মানুষের অর্জিত জ্ঞান, বিশ্বাস, কলা, নীতি, নিয়ম, সংস্কার ও অন্যান্য যে কোনো বিষয়ে দক্ষতার জটিল সমাবেশ। মোতাহের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘সংস্কৃতি মানে সুন্দরভাবে বিচিত্রভাবে বাঁচা।’
কালটাজার গ্রাসিয়ান বলেন, ‘মানুষ জন্মায় বর্বর হয়ে, সংস্কৃতিই তাকে করে সুসভ্য।’
সুতরাং এক কথায় বলা যায়, সংস্কৃতি হলো চলমান জীবনের দর্পণ অর্থাৎ মানুষের দৈনন্দিন জীবন প্রণালীর গ্রহণযোগ্য চর্চা বা প্রথা যা কোনো সমাজের মানুষের পরিচয় বহন করে।
আমাদের সংস্কৃতির ঐতিহ্য : সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হলো মানুষের দীর্ঘদিনের আচার-আচরণ, কাজকর্ম, কথাবর্তা প্রভৃতির মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য কোনো প্রথা বা উপাদান। আমাদের সংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মধ্যে ধর্মীয় রীতিনীতি, উৎসব, লোকসাহিত্য, সংগীত, ঋতুভিত্তিক উৎসব, বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, সামাজিক প্রথা, খেলাধুলা প্রভৃতি অন্তর্ভুক্ত। আমাদের সংস্কৃতি হাজার বছর ধরে তামাটে বাঙালিদের জীবন বোধের উপর গড়ে উঠেছে। জীবন ধারণের জন্য কৃষিকাজ, ঈশ্বর বিশ্বাসে ধর্ম-কর্ম, স্নেহ মাখা পারিবারিক বন্ধন, গ্রামীণ কবি সাহিত্যিকদের সৃষ্ট লোকসাহিত্য, গ্রামীণ সংগীত, জীবনঘনিষ্ঠ হরেক রকম উপাদান আমাদের সংস্কৃতিকে করেছে বৈচিত্র্যময়।
বিশ্বায়ন ও আমাদের সংস্কৃতি : বিশ্বায়নের তোড়ে আন্তঃব্যক্তিক ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় যোগাযোগ বৃদ্ধির কারণে সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। সাংস্কৃতিক যোগাযোগের ব্যাপকতায় পৃথিবীর বিভিন্ন সংস্কৃতির আদান-প্রদানও অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু ডিজিটাল ডিভাইড ও সুযোগের অভাবে পৃথিবীর অনেক সংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় উন্নত বিশ্বের সংস্কৃতির কাছে মার খাচ্ছে এবং সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য হারিয়ে বিদেশী সংস্কৃতির মাঝে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। এ দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে বিশেষত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো কারণ, নিজস্ব সংস্কৃতিকে তুলে ধরার যথেষ্ট সুযোগ না পাওয়ায় এসব দেশে অবাধেই বিদেশী সংস্কৃতির চর্চা হচ্ছে। বাংলাদেশও এ পরিস্থিতির শিকার। আমাদের শিশু ও যুবকদের মাঝে দেশীয় সংস্কৃতির প্রতি অবজ্ঞা আর বিদেশী সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণের যে সর্বনাশা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে তা তাদেরকে উদ্দেশ্যহীন এক দুর্গম পথের যাত্রীতে পরিণত করেছে। ফলে ভেঙে যাচ্ছে হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সামাজিক প্রতিষ্ঠান, মূল্যবোধ। আর নীতি-নৈতিকতার অবক্ষয়ে সমাজ কাঠামো আজ ধ্বংস প্রায়। বস্তুবাদী আর ভোগবাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রসার মানবিকতাবোধ ও বিচারকে ক্ষতবিক্ষত করেছে প্রতিনিয়ত। বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাবে আমাদের সংস্কৃতি আজ বিপদাপন্ন।
বিশ্বায়নের ক্ষতিকর প্রভাব : বিশ্বায়ন আমাদের সংস্কৃতিকে এমনভাবে আঘাত করছে যে, এর প্রতিরোধহীন অবিরাম স্রোতে আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির নাভিশ্বাস উঠেছে। পশ্চিমা চটকদার সংস্কৃতি আমাদের হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মূলে কুঠারাঘাত করেছে। ফলে আমরা আমাদের স্বকীয়তা হারিয়ে ক্রমেই সাংস্কৃতিক দৈন্যের দিকে ধাবিত হচ্ছি। ফলে এর প্রভাব পড়েছে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে। নিচে বিশ্বায়নের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
১. সমাজ কাঠামো ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের উপর প্রভাব : বিশ্বায়ন আমাদের সমাজ কাঠামো ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গঠন ও প্রকৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। আবহমান বাংলায় যে সামাজিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ছিল তা এখন প্রায় অচল। বয়ঃজ্যেষ্ঠদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মানবোধ এখন নেই বললেই চলে। বিদেশি সংস্কৃতির স্রোতে ভাসমান আমাদের তরুণের অনেক বেশি স্বাধীনতা চায়। কিন্তু তারা জানে না যতটুকু স্বাধীনতা দরকার তার মাত্রা অতিক্রম করলে পথভ্রষ্ট হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে এবং আমাদের সমাজে তাই হচ্ছে। ফলে আমাদের তরুণ সমাজ আজ পথভ্রষ্ট।
২. পরিবার ব্যবস্থায় প্রভাব : সংস্কৃতির বিশ্বায়নে আমাদের পরিবার ব্যবস্থায় এসেছে বিকৃতি। এখন মানুষ যৌথ সংসারে তৃপ্তি পায় না, চায় স্বামী-স্ত্রীর একক সংসার। পশ্চিমা সমাজের বিবাহহীন অবাধ যৌনাচারের সংস্কৃতি ও পারিবারিক বন্ধনহীন বাউণ্ডুলের জীবনের বিকৃত ধারণা আমাদের হাজার বছরের পুরোনো পারিবারিক জীবনের ধারণাকে প্রায় পরাস্ত করে ফেলেছে।
৩. পোশাক-পরিচ্ছদের উপর প্রভাব : পোশাক-পরিচ্ছদে আমাদের নিজস্ব ঐতিহ্য ছিল। বিদেশী সংস্কৃতির ব্যাপক প্রসার ও চর্চা আমাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক-পরিচ্ছদে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। শাড়ি-লুঙ্গি কিংবা পাজামা-পাঞ্জাবি নয়, জিন্স, টি-শার্ট, স্কার্ট এখন আমাদের ছেলেমেয়েদের খুব প্রিয়।
৪. চলচ্চিত্রের উপর প্রভাব : বিদেশি চলচ্চিত্রের অশুভ প্রভাব পড়েছে আমাদের চলচ্চিত্রে। চলচ্চিত্রে এখন স্বল্প বসনা নারীদের পদচারণা খুব বেশি। শিল্পের ছোঁয়া নেই এসব অভিনয়ে। উত্তেজক দৃশ্যসমূহে শিহরিত হয় দর্শনবৃন্দ। বিদেশি চলচ্চিত্রে তরুণদের বিয়ার খাওয়ার দৃশ্য দেখে আমাদের তরুণেরা মাদকের নেশায় মত্ত। বিদেশি সংস্কৃতির মরণ ছোবল আমাদের যুব সমাজকে অপরাধপ্রবণও করে তুলেছে।
৫. খাদ্যাভ্যাসের উপর প্রভাব : বিজাতীয় সংস্কৃতির প্রভাবে আমাদের খাদ্যাভ্যাসের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। কোনো খাবারের পুষ্টিমান বিবেচনা না করে টেলিভিশন চ্যানেলে খাবারের বিজ্ঞাপন প্রচার আমাদের নতুন প্রজন্ম আগ্রহী হচ্ছে। এমন কি বড়দের ক্ষেত্রেও আত্মীয়স্বজন বেড়াতে এলে রকমারী পিঠা-পায়েস, গুড়-মুড়ির পরিবর্তে নুডুলস, চিপস বা বিজাতীয় সংস্কৃতির কোনো খাদ্য উপাদান দিয়ে আপ্যায়ন করা হচ্ছে।
৬. ধর্মীয় জীবন বোধ ও নৈতিক শিক্ষার উপর প্রভাব : বিদেশী সংস্কৃতি আমাদের জীবনের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিককে চরমভাবে আঘাত করেছে সেটি হলো আমাদের ধর্মীয় জীবনবোধ ও নৈতিক শিক্ষা। পশ্চিমা ভোগবাদী সংস্কৃতির ব্যাপক প্রচারের ফলে আমাদের ধর্মনিষ্ঠা এবং নৈতিকতাবোধ আহত হচ্ছে নিঃসন্দেহে।
৭. উৎসবের উপর প্রভাব : আমাদের সংস্কৃতির ওপর আর এক ভয়ংকর থাবা পড়েছে যা গ্রাস করেছে সম্ভাবনাময় তরুণ্যকে। থার্টি ফার্স্ট নাইট, ভ্যালেন্টইন্স ডে, প্রভৃতি বিজাতীয় সংস্কৃতি তরুণ-তরুণীদের গ্রাস করেছে তাদের সুকুমার বৃত্তিকে করেছে কলুষিত। বাঙালির পয়লা বৈশাখ, পয়লা ফাল্গুন তরুণ-তরুণীদের এতটা আলোড়িত করতে পারছে না।
বিশ্বায়নের ইতিবাচক প্রভাব : বিশ্বায়নের এ যুগে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে দরজা বন্ধ করে ঘরে বসে থাকার কোনো উপায় নেই। অর্থনৈতিক রাজনৈতিক, সামাজিক দিকের মতো সাংস্কৃতিক দিক থেকেও আন্তর্জাতিক সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মতো উপযোগী করে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের দ্বার বন্ধ করে ভ্রমরটাকে রোখার আগে দেখতে হবে খোলা জানালার বাইরে আমাদের জন্য কল্যাণের অনেক কিছুই আছে। সংস্কৃতি এমন কোনো জিনিস নয় যার কোনো পরিবর্তন করা যাবে না, বরং সমাজ ও জীবনের পরিবর্তন এবং সময়ের ধারায় এ সংস্কৃতি পরিবর্তিত হতে পারে। এমন কি অন্য কোনো সংস্কৃতির সংস্পর্শে এসে পারস্পরিক বিনিময়ের মাধ্যমে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পারে।
বিশ্বায়ন আমাদের সংস্কৃতিকে বিদেশী সংস্কৃতির সংস্পর্শে যেমন নিয়ে গেছে, তেমনি এর ফলে আমাদের সংস্কৃতিও বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার সুযোগ হয়েছে। এর মধ্যেই আমাদের বেশ কয়েকটি স্যাটেলাইট চ্যানেল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কারণে আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে অনেক সম্প্রসারিত হয়েছে।
আমাদের করণীয় : বর্তমানে এক পৃথিবীর বাসিন্দা হিসেবে বিশ্ব সাম্রাজ্যের বাইরে যাওয়ার কোনো উপায় আমাদের নেই। তাই এর মধ্যে থেকেই নিজেদের স্বনন্ত্র অস্তিত্ব আর স্বার্থকে বাঁচিয়ে রেখে চলতে হবে। আর জটিল এ বিশ্বব্যবস্থায় চলতে হলে আমাদের আরো বেশি কুশলী হতে হবে। সেজন্য-
১. বিদেশী সংস্কৃতির দরজা বন্ধ করে নিজেদেরকে আরো বেশি প্রতিযোগিতার উপযোগী করে তুলতে হবে।
২. দেশীয় সংস্কৃতিকে লালন আর বিদেশী সংস্কৃতির মোকাবেলায় টিকে থাকার জন্য দেশিয় সংস্কৃতিকে যুগোপযোগী করে তুলতে হবে।
৩. বিদেশী সংস্কৃতির অনুসরণ ও অনুকরণের ক্ষেত্রে আরো বেশি সজাগ হতে হবে।
৪. আমাদের সংস্কৃতিকে বিশ্বের সমগ্রপ্রান্তে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য স্যাটেলাইট চ্যানেলের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ অনুষ্ঠান সম্প্রচারে বৈচিত্র্য আনয়ন করতে হবে।
৫. বিদেশি সংস্কৃতির নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে আমাদের সচেতন হতে হবে। সেজন্য বিভিন্ন সংস্কৃতির উপযোগিতা সম্পর্কে সূক্ষ্মতিসূক্ষ্ম বিচার বিবেচনার পর তা দেশে সম্প্রচারের অনুমোদন দিতে হবে।
৬. সংস্কৃতি রক্ষার জন্য সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বৃদ্ধি করতে হবে।
উপসংহার : বিশ্বায়নের এ বিশ্বব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার অর্থ হলো নিজেকে সভ্যতা থেকে আলাদা করে রাখা। এটা কোনো জাতির জন্যই সুখকর নয়। এখন প্রশ্ন জাগে, তাহলে কি নিজস্ব সমাজ, সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে উপেক্ষা করেই বিশ্বাব্যবস্থার সাথে তাল মিলাতে হবে? যদি তাই হয়, তাহলে এটাও অস্তিত্বের জন্য একটি মারাত্মক হুমকি। কেননা, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার সুযোগ উন্নত দেশগুলো অনেক আগেই গ্রহণ করেছে। এবার তাদের সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পালা। সুতরাং তাদের উপেক্ষা করা অসম্ভব হলেও নিজের অস্তিত্বের খাতিরে, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনে সাংস্কৃতিক স্বকীয়তা বজায় রাখার ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।