সাধারণ জ্ঞান : বাংলাদেশের সকল জাতীয় দিবস

শুধু বাংলাদেশের নিজস্ব দিবসগুলোকে “বাংলাদেশের দিবস” বলা হচ্ছে। এই দিবসগুলো শুধু বাংলাদেশে পালিত হয়। অবশ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত প্রবাসি বাঙালিরাও এই দিবসগুলো পালন করে থাকেন।

১০ই জানুয়ারি : বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

বাংলাদেশের স্বাধীনতর ঘোষক যুদ্ধকালীন রাষ্ট্রপতি এবং মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানে প্রায় ১০ মাস কারাভোগের পর ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ১০ই জানুয়ারি স্বদেশ ফিরে আসেন। এই উপলক্ষ্যে প্রতিবছর ১০ই জানুয়ারি দিবসটি পালিত হয়।

১৯ শে জানুয়ারি : জাতীয় শিক্ষক দিবস

বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজকে যথাযোগ্য মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার অঙ্গীকার নিয়ে ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে ১৯ শে জানুয়ারি এ দিবসটি চালু করে। ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে প্রতি বছর ৫ই অক্টোবর বিশ্ব ব্যাপী বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়ে থাকে। ইউনেস্কোর মতে, বিশ্ব শিক্ষক দিবস শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পালন করা হয়। এই দিবসটি পালনে এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল ও তার সহযোগী ৪০১টি সদস্য সংগঠন মূল ভূমিকা রাখে।

২০ শে জানুয়ারি : শহীদ আসাদ দিবস

আসাদুজ্জানের শাহাদাত দিবসের স্মরণে শহীদ আসাদ দিবস পালন করা হয়। আসাদুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দের ২০ জানুয়ারি ছাত্র সংগ্রাম কমিটির ১১ দফা আদায়ের মিছিলে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তাঁর মৃত্যু ঊনসত্তরের ছাত্র-গণআন্দোলনের গোটা অবয়বকেই পাল্টে দেয় এবং তা আইয়ুব খানের শাসন ও নিপীড়নমূলক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে। প্রসঙ্গত, তিনি ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দের গণ-আন্দোলনে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তনের তিন শহীদদের একজন, অন্য দু’জন হচ্ছেন- শহীদ রস্তম ও শহীদ মতিউর।

২৪ শে জানুয়ারি : গণঅভ্যুত্থান দিবস

২৪ শে জানুয়ারি গণঅভ্যুত্থান দিবস। ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র-জনতা প্রতিরোধ গড়ে তোলার লক্ষ্যে অদম্য মিছিল বের করে। মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণে নিহত হন নবম শ্রেণীর ছাত্র মতিউর রহমান। সেই গণঅভ্যুত্থানের স্মরণে দিবসটি পালিত হয়।

২৫ ষে জানুয়ারি : কম্পিউটারে বাংলা প্রচলন দিবস

১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ শে জানুয়ারি প্রবাসী প্রকৌশলী সাইফুদ্দাহার শহীদ অ্যাপলের ম্যাকিন্টোশ কম্পিউটারে লন্ডনে মায়ের উদ্দেশে কম্পিউটারে বাংলায় টাইপ করা একটি চিঠি লিখেন। তিনি কম্পিউটারের এই বাংলা প্রোগ্রামের নাম দিয়েছিলেন শহীদলিপি। বর্তমানে শহীদলিপির ব্যবহার না থাকলেও শহীদলিপি দিয়ে বাংলা লেখার দিন অর্থাৎ ২৫ জানুয়ারিকে ‘কম্পিউটারে বাংলা ভাষার প্রচলন দিবস’ হিসেবে উদ্্যাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, বিজয় বাংলা সফটওয়্যারের শুরু হয় ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই মে এবং কিবোর্ড আবিষ্কৃত হয় ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর আনন্দ কম্পিউটার্সের মাধ্যমে। আনন্দ কম্পিউটার্সের প্রতিষ্ঠাতা এবং স্বত্বাধিকারী মোস্তফা জব্বার। কম্পিউটারে বাংলা লেখার ক্ষেত্রে আরেকটি বাংলা সফটওয়্যার হচ্ছে অভ্র। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে মার্চ এটির উন্নয়ন করা হয়। এটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওমিক্রনল্যাব। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী ছিলেন মেহেদী হাসান খান।

২৭ শে জানুয়ারি : সলঙ্গা দিবস

১৯২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ শে জানুয়ারি তরুণ নেতা মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশের নেতৃত্বে তৎকালীন পাবনা জেলার সিরাজগঞ্জ মহকুমার সলঙ্গা হাটে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে। ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে ২৭ শে জানুয়ারি শুক্রবার ছিল বড়ো হাট। মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশের নেতৃত্বে অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনের কর্মীরা বিলেতি পণ্য ক্রয় বিক্রয় বন্ধ করার জন্য হাটে নামে। আন্দোলনকারীদের দমনের জন্য ছুটে আসেন পাবনার জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আর. এন. দাস, জেলা পুলিশ সুপার ও সিরাজগঞ্জ মহকুমা প্রসাশক এসকে সিংহ-সহ ৪০ জন সশস্ত্র পুলিশের একটি দল। তারা কংগ্রেস অফিস ঘেরাও দিয়ে মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশকে গ্রেফতার করে। সঙ্গে সঙ্গে জনতা মিছিল বের করে। ম্যাজিষ্ট্রেট, জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য পুলিশকে গুলি চালানোর নির্দেশ দেয়। সেদিন ৪০টি রাইফেলের মধ্যে মাত্র একটি রাইফেল থেকে কোনো গুলি বের হয়নি। ওই রাইফেলটি ছিল একজন বাঙালী পুলিশের। ওই দিন প্রায় ১২০০ প্রতিবাদী মানুষ ব্রিটিশ পুলিশ বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারায়। এই পৈশাচিক হত্যাকান্ডে হতাহতের সরকারি সংখ্যা ৪৫০০ দেখানো হলেও বেসরকারি মতে ১০০০০-এর অধিক বলে জানা যায়। প্রতিবছর ২৭ শে জানুয়ারি সেসব শহীদদের স্মরণ করে “সলংগা দিবস” পালিত হয়।

৫ই ফেব্রুয়ারি : গ্রন্থাগার দিবস

প্রতি বছর ৫ই ফেব্রুয়ারি গ্রন্থাগার দিবস পালিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ শে অক্টোবর এই দিনটিকে ‘গ্রন্থাগার দিবস’ অনুমোদন করা হয়, অবশ্য প্রস্তাব ছিল ২২ শে মার্চ।। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই ফেব্রুয়ারি জাতীয় গ্রন্থাগারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এ কারণে ৫ই ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। তৎসঙ্গে একুশে ফেব্রুয়ারির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দিবস পালনের জন্য ফেব্রুয়ারি মাস নির্ধারণ করা হয়।

১৪ই ফেব্রুয়ারি : সুন্দরবন দিবস

সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কার্যকর প্রচার ও জন সচেতনতা সৃষ্টি দিবসটি পালনের উদ্দেশ্য। ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের আওতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রূপান্তর ও পরশের উদ্যোগে এবং দেশের আরও ৭০টি পরিবেশবাদী সংগঠনের অংশগ্রহণে প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণা করা হয়। ২০০১ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের আওতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৭০টি পরিবেশবাদী সংগঠনের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলনে দিবসটিকে সুন্দরবন দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

২১ শে ফেব্রুয়ারি : শহীদ দিবস / আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিসব

১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে কয়েকজন তরুণ শহীদ হন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো রফিক, জব্বার, শফিউল, সালাম, বরকত-সহ অনেকেই। তাদের ত্যাগের বিনিময়ে বাংলা পায় রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা। তাই এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি : জাতীয় ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস

১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে ড. মো. ইব্রাহিমের উদ্যোগে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই এই দিনটিকে ডায়াবেটিস সচেতনতা তৈরিতে উপজীব্য করা হয়। এছাড়াও প্রতি বছরই ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হয়। ডায়াবেটিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪২ দশমিক ৫ কোটি। অথচ ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ৩ কোটি।

২রা মার্চ : জাতীয় পতাকা দিবস

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় প্রথম লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলন করেন ছাত্রনেতা আ স ম আবদুর রব। ২রা মার্চ বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা প্রথম উত্তোলন করা হয়েছিল, তাই এই দিন জাতীয় পতাকা দিবস পালন করা হয়। পরদিন ৩রা মার্চ বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মোহাম্মদ শাজাহান সিরাজ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম নিজ হাতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ২৩ শে মার্চ ধানমন্ডিতে তাঁর নিজ বাসভবনে। বিদেশের মাটিতে সর্বপ্রথম বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় ১৮ এপ্রিল ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনে।

৬ই মার্চ : জাতীয় পাট দিবস

২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ শে জানুয়ারি প্রতিবছর ৬ই মার্চ জাতীয় পাট দিবস পালনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয় এবং ৬ই ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করে। অভ্যন্তরীন ও আন্তর্জাতিক বাজারে সোনালি আঁশ পাটের আগ্রহ এবং উন্নতমানের পাট উৎপাদনে প্রেরণা সৃষ্টি দিবসটির লক্ষ্য। দিবসটির প্রথম প্রতিপাদ্য বিছয় ছিল : ‘সোনালি আঁশের সোনার দেশ/পাট পণ্যের বাংলাদেশ’।

১৭ই মার্চ : শিশু দিবস

১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনটিকে শিশু দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার বিশ্ব শিশু দিবস পালন করা হয় । তবে ১৭ই মার্চ বাংলাদেশে পালন করা হয় জাতীয় শিশুদিবস।

২৩ মার্চ : পতাকা উত্তোলন দিবস

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ শে মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধানমন্ডিতে তাঁর নিজ বাসভবনে সর্বপ্রথম নিজ হাতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এছাড়া একাত্তরের এই দিনেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। রেসকোর্স ময়দানে ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক জনসভার ঘোষণাও দেওয়া হয় এই দিনে। দিনটি স্মরণে প্রতিবছর ২৩ শে মার্চ জাতীয় পতাকা উত্তোলন দিবস পালন করা হয়।

২৬ শে মার্চ : জাতীয় দিবস

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ শে মার্চ রাতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু করে। ২৭ শে মার্চ জিয়াউর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণের ডাক দেন। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ২২ শে জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় এবং সরকারিভাবে এ দিনটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে ২৭ মার্চের এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা ঘটে। এর নয় মাস পর স্বাধীন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়। প্রসঙ্গত, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ মধ্য রাতে শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন। গ্রেপ্তার হবার একটু আগে ২৫শে মার্চ রাত ১২টার পর (২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে) তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন।

৩১ শে মার্চ : জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস

বাংলাদেশে ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে প্রতিবছর ৩১ শে মার্চ দুর্যোগ মোকাবিলা করার প্রস্তুতিস্বরূপ এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস’ পালনের উদ্দেশ্য হচ্ছে আসন্ন দুর্যোগ সম্পর্কে জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ঝুঁকি কমানো ও প্রস্ততিমূলক কার্যক্রমের সামর্থ্য বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্টদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা। বাংলাদেশে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১০ মার্চ দিবসটি পালিত হচ্ছে। এর আগে প্রতিবছর মার্চের শেষ সপ্তাহের বৃহস্পতিবার জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস পালনের সিদ্ধান্ত ছিল। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে স্বাধীনতা দিবস মার্চ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার পড়ে। ফলে একই দিনে দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস পালনে সমস্যা সৃষ্টি হয়। ফলে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ১০ মার্চ দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস পালনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বিশেষ অনুমোদন নিয়ে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে ৩১ মার্চ দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস পালন করা হয়। ওই সময় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ একটি নির্দিষ্ট দিনে এই দিবস পালনের নির্দেশনা দিয়েছিল। এরপরের বছর থেকে ১০ই মার্চ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।

২রা এপ্রিল : জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস

১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে জাতিসংঘের আহ্বানে ৩রা ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধীদিবস হিসেবে বিশ্বজুড়ে পালিত হয়ে আসছে। তবে বাংলাদেশে জাতিসংঘের নির্দেশ অনুসারে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস পালিত হচ্ছে ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে। প্রতিবছরই দিবসটি পালনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য অর্জনের জন্য একেকটি প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়। অটিজমে আক্রান্ত শিশু ও বয়স্কদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তার প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে ২ এপ্রিলকে ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’ হিসেবে পালনের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর থেকে প্রতিবছর এই দিবসটির সঙ্গে মিল রেখে একই সঙ্গে বাংলাদেশে জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস পালন করা হয়।

বাংলা পঞ্জিকার প্রথম মাস বৈশাখের ১ তারিখ। বঙ্গাব্দের প্রথম দিন হিসেবে এদিন বাংলা নববর্ষ। দিনটি সকল বাঙালী জাতির ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণের দিন। দিনটি বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নববর্ষ হিসেবে বিশেষ উৎসবের সঙ্গে পালিত হয়। ত্রিপুরায় বসবাসরত বাঙালিরাও এই উৎসবে অংশ নিয়ে থাকে। গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে বাংলাদেশের প্রতিবছর ১৪ই এপ্রিল এই উৎসব পালিত হয়। বাংলা একাডেমি নির্ধারিত আধুনিক বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে এই দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে চান্দ্রসৌর বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে ১৫ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখ পালিত হয়।

১৭ই এপ্রিল : মুজিবনগর দিবস

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার পর ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১০ই এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম প্রবাসী সরকার, গঠিত হয়। যা মুজিবনগর সরকার নামে পরিচিত। ১৭ই এপ্রিল মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলা (বর্তমান উপজেলা মুজিবনগর) গ্রামের আমবাগানে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করেছিলো। শেখ মুজিবুর রহমান এই সরকারের রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হন। ওই দিনটিকে স্মরণ এবং কুশীলবদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয় এই দিবসে।

২৮ শে এপ্রিল : জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস

শ্রমিকের সুস্থতা ও নিরাপদ কর্মপরিবেশের সঙ্গে উৎপাদনশীলতা নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। বিশ্ববাণিজ্যের তীব্র প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সক্ষমতা সৃষ্টির বিষয়ে সর্বজনীন সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিবছর ২৮ শে এপ্রিল দিবসটি পালন করা হয়।

১লা মে : মহান মে দিবস

এটি মহান মে দিবস বা বিশ্ব শ্রমিক দিবস নামেও পরিচিত। শ্রমিকদের ১৮ ঘণ্টা কাজ করতে হতো। ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা উপযুক্ত মজুরি আর দৈনিক আট ঘন্টা কাজের দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। ওই বছর ১লা মে শ্রমিকরা ধর্মঘট আহবান করে। প্রায় তিন লাখ মেহনতি মানুষ ওই সমাবেশে অংশ নেয়। পুলিশ গুলি চালালে ১১ জন শ্রমিক নিহত হয়। আহত ও গ্রেফতার হন আরো অনেক শ্রমিক। পরবর্তীকালে প্রহসনমূলক বিচারের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃত শ্রমিকদের মধ্য থেকে ছয়জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়। কারাগারে বন্দিদশায় এক শ্রমিক নেতা আত্নহননও করেন। এতে বিক্ষোভ আরো প্রকট আকারে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার। ১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ই জুলাই ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে ১ মে শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরবর্তী বছর অর্থাৎ ১৮৯০ সাল থেকে ১ মে বিশ্বব্যাপী পালন হয়ে আসছে ‘মে দিবস’ বা ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’। বর্তমানে মে দিবসের সম্মানার্থে বাংলাদেশেও ১ মে সরকারী ছুটির দিন। এদিন শ্রমিকরা মহা উৎসাহ ও উদ্দীপনায় পালন করে মে দিবস।

১৬ই মে : ফারাক্কা লংমার্চ দিবস বা ফারাক্কা দিবস

ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাধাপ্রাপ্ত জলপ্রবাহের নিমিত্ত বাংলার মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ডাকে লাখ লাখ মানুষ ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের সংগ্রামে ফারাক্কা অভিমুখে মিছিলে অংশ নিয়েছিল। সেই দাবিকে বারে বারে উত্থাপনের লক্ষ্যেই প্রতি বছর দিবসটি পালিত হয়। ফারাক্কা লং মার্চ ১৯৭৬ সংগঠিত ও পরিচালিত হয়েছিল ফারাক্কায় বাঁধ দিয়ে ভারত কর্তৃক একতরফা গঙ্গার জল অপসারণের মাধ্যমে পদ্মা নদীকে জলশূন্য করে ফেলার বিরূদ্ধে। বাংলাদেশের তৎকালীন সরকার এই লঙ মার্চ আয়োজনে সহায়তা দিয়েছিল। ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দের ২১শে এপ্রিল এই বাঁধ চালু করার কয়েক মাসের মধ্যে এর ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয। বাংলাদেশের পরিবেশে ফারাক্কার সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে মাওলানা ভাসানী এর বিরূদ্ধে প্রতিবাদের জন্য জাতির প্রতি আহবান জানান। এইরই প্রেক্ষাপটে ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই মে পদ্মা নদীর তীরবর্তী বিভাগীয় শহর রাজশাহী থেকে ফারাক্কা বাঁধ অভিমুখী এই অভিযাত্রা শুরু করা হয়। যদিও মাওলানা ভাসানী সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের অভ্যন্তরে ফারাক্কা পর্যন্ত পদযাত্রার ঘোষণা দিয়েছিলেন তবু সরকারের পরামর্শে এই পদযাত্রা ১৭ই মে অপরাহ্নে ভারতীয় সীমান্তের কাছে কানসাটে গিয়ে শেষ করা হয।

২৩ শে মে : জাতীয় নৌ নিরাপত্তা দিবস

২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ মে বাংলাদেশের চাঁদপুরের কাছে মেঘনা নদীতে লঞ্চ এমভি লাইটিং সান ডুবে যায়। ফলে লঞ্চটি চার শতাধিক যাত্রীর অধিকাংশই নিহত হয়। দুর্ঘটনার চার দিন পর শেষ উদ্ধারকৃত লাশটি ছিল সুমন শামসের মায়ের। এই ঘটনার পর থেকেই শুরু হয় নিরাপদ নৌ চলাচলের নিশ্চয়তার দাবীতে এবং নদ-নদী দখল-দূষণ রোধে সামাজিক সংগঠন নোঙর-এর কার্যক্রম। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ মে বাংলাদেশের তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর উপস্থিতিতে নৌ নিরাপত্তা বিষয়ক একটি ভাসমান সেমিনারে ২৩ মে জাতীয় নৌ নিরাপত্তা দিবস ঘোষণার দাবী তোলেন নোঙর সভাপতি সুমন শামস, তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানকে জানানো হলে তিনি এই বিষয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেন। এরপর থেকে প্রতিবছর ২৩ শে মে জাতীয় নৌ নিরাপত্তা দিবস পালিত হয়ে আসছে।

২৫ শে মে : বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম-এর জন্মবার্ষিকী

কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় কবি এবং বাংলাদেশের গণ সংগীতের রচয়িতা। প্রতিবছর ২৫ মে তার জন্মবর্ষ পালন করা হয়।

২৮ শে মে : নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস

প্রতিবছর ২৮ শে মেে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস পালন করা হয়। ‘জাতীয় উন্নয়নে মা ও শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষা, গর্ভবতী মা ও নবজাতকের মানসম্মত পরিচর্যা এবং রোগ প্রতিরোধে ব্যাপক কর্মসূচি, নিরাপদ প্রসব নিশ্চিত এবং মাতৃমৃত্যু হ্রাসে মিডওয়াইফরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রভৃতি বিষয়ে কার্যকর সচেতনতা সৃষ্টি দিবসটির লক্ষ্য।

৭ই জুন : ছয় দফা দিবস

পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষণ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ৬ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দের এই তারিখ হাজার হাজার লোক রাস্তায় নেমে আসে। হরতাল চলাকালে পুলিশের গুলিতে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় নিহত হোন অন্তত ১১জন। তাঁদের স্মরণে এবং জাতীয় মুক্তির স্বারকস্বরূপ এই দিবসটি পালিত হয়ে থাকে।

১৩ জুন : নারী উত্ত্যক্তকরণ প্রতিরোধ দিবস বা ইভ টীজিং প্রতিরোধ দিবস

নারী উত্ত্যক্তকরণ প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী ২০১০ খ্রিস্টাব্দের ১৩ই জুন দিবসটি প্রথম পালিত হয়। সে থেকে প্রতিবছর ১৩ই জুন দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।

২৩ শে জুন : পলাশী দিবস

১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ শে জুন পলাশীর আমবাগানের যুদ্ধের আড়ালে প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের কারণে রবার্ট লড ক্লাইভের নেতৃত্বাধীন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে স্বাধীন বাংলার নবাব পরাজিত হয়। ফলে প্রায় ২০০ বছরের জন্য বাংলা স্বাধীনতা হারায়। ঘৃণিত ও কলঙ্কজনক এই প্রাসাদ প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের অধ্যায় সৃষ্টির পেছনে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল জগৎ শেঠ, মীরজাফর, মাহতাব চাঁদ, উমিচাঁদ বা আমির চন্দ, মহারাজা স্বরূপচাঁদ, ইয়ার লতিফ, রায়দুর্লভ, ঘসেটি বেগমের ক্ষমতার লোভ। রাজা রাজবল্লভ, মহারাজ নন্দকুমার, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়, রানী ভবানী প্রমুখের কৌশলী চক্রও এর পেছনে প্রচ্ছন্ন ছিল। যুদ্ধক্ষেত্রে এই স্বার্থান্বেষী ষড়যন্ত্রীদের শিকার ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিপাহসালার নবাব সিরাজউদ্দৌলা এবং তার বিশ্বস্ত সেনাপতি বকসী মীরমদন, প্রধান আমাত্য মোহনলাল কাশ্মিরী ও নবে সিং হাজারী। পলাশীর যুদ্ধে নবাবের পরাজয়ের স্মরণে প্রতিবছর ২৩ শে জুন দিবসটি পালিত হয়।

১লা জুলাই : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস

১৯২১ খ্রিস্টাব্দের ১লা জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একসময় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হিসেবে খ্যাত বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তাই প্রতিবছর ১লা জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হয়।

৩ জুলাই/২৩ শে অক্টোবর : জন্ম নিবন্ধন দিবস

১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দে ২রা জুলাই ব্রিটিশ সরকার অবিভক্ত বাংলায় জন্ম নিবন্ধন সংক্রান্ত আইন জারি করে। ২০০১ -২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে ইউনিসেফ- বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে ২৮টি জেলায় ও ৪টি সিটি কর্পোরেশনে জন্ম নিবন্ধনের কাজ নতুন করে শুরু হয়। জন্মের পর সরকারি খাতায় প্রথম নাম লেখানোই জন্ম নিবন্ধন। জন্মসনদ অত্যাবশ্যকীয় করার লক্ষ্যে সরকার নতুন করে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন আইন ২০০৪ প্রণয়ন করে। আইনটি ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দের ৩ রা জুলাই থেকে কার্যকর করা হয়েছে। তাই ওই তারিখ দিবসটি পালন করা হতো। তবে, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ শে অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৬ই অক্টোবর তারিখকে ‘জাতীয় জন্ম নিবন্ধ দিবস’ হিসেবে উদ্যাপন এবং এবং দিবসটিকে গ শ্রেণির দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন।

১৫ই অগাস্ট : জাতীয় শোক দিবস

১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই অগাস্ট বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও বাঙালি জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তাই প্রতিবছর জাতি দিনটিকে শোক দিবস হিসেবে পালন করে।

২৭ আগস্ট : দিঘলিয়ার দেয়াড়া গণহত্যা দিবস

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ শে আগস্ট দিঘলিয়ার দেয়াড়া গ্রামে পাক-হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে নিরীহ ৬০ জন গ্রামবাসী নিহত হন। ওই হৃদয় বিদারক ঘটনার স্মরণে দিবসটি পালন করা হয়।

১৭ই সেপ্টেম্বর : মহান শিক্ষা দিবস

তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান সরকারের গণবিরোধী, শিক্ষা-সংকোচনমূলক শিক্ষানীতি চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে এবং একটি গণমুখী শিক্ষানীতি চালু করার দাবিতে ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দের ১৭ই সেপ্টেম্বর ছাত্র-জনতার ব্যাপক গণআন্দোলন দমাতে ব্যর্থ হয়ে পুলিশ ঢাকার হাইকোর্ট মোড়ে গুলি চালায়। এতে অনেক আন্দোলনকারী হতাহত হয়। ১৭ই সেপ্টেমর ওই দিবসটির স্মরণে মহান শিক্ষা দিবস পালন করা হয়।

১৮ই সেপ্টেম্বর : কৃষ্ণপুর গণহত্যা দিবস

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ই সেপ্টেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হবিগঞ্জের কৃষ্ণপুরে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ১২৭জন পুরুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এরপর আশেপাশের এলাকাগুলোতে হামলা চালিয়ে আরো প্রায় শতাধিক পুরুষকে হত্যা করে। দিবসটির স্মরণে এবং নিহতদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের লক্ষ্যে প্রতিবছর ১৮ই সেপ্টেম্বর দিবস পালিত হয়।

২৩ শে সেপ্টেম্বর : প্রীতিলতার আত্মাহুতি দিবস 

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেত্রী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ২৩ শে সেপ্টেম্বর স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আত্মাহুতি দেন। তাঁর আত্মাহুতির স্মরণে প্রতিবছর দিবসটি পালন করা হয়। প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার-এর ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নারী মুক্তিযোদ্ধা ও প্রথম বিপ্লবী মহিলা শহীদ। ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাব দখলের সময় তিনি ১৫ জনের একটি বিপ্লবী দল পরিচালনা করেন। এই ক্লাবটিতে একটি সাইনবোর্ড লাগানো ছিল যাতে লেখা ছিলো “কুকুর এবং ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ”। প্রীতিলতার দলটি ক্লাবটি আক্রমণ করলে পুলিশ তাদের আটক করে। পুলিশের হাতে আটক এড়াতে প্রীতিলতা ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ২৩ শে সেপ্টেম্বর সায়ানাইড গলাধঃকরন করে আত্মহত্যা করেন। প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই মে মঙ্গলবার চট্টগ্রামের বর্তমান পটিয়া উপজেলার ধলঘাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে আই.এ. পরীক্ষায় মেয়েদের মধ্যে প্রথম এবং সবার মধ্যে পঞ্চম স্থান লাভ করেন। এই ফলাফলের জন্য তিনি মাসিক ২০ টাকার বৃত্তি পান এবং কলকাতার বেথুন কলেজে বি এ পড়তে যান। তিনি ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে ডিসটিংশান নিয়ে বি.এ. পাশ করেন। কিন্তু, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকায় তাঁকে এবং তাঁর সঙ্গী বীণা দাসগুপ্তের পরীক্ষার ফল স্থগিত রাখা হয়। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে ২২ শে মার্চ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে তাদের মরণোত্তর স্নাতক ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

৩০শে সেপ্টেম্বর : মাহমুদপুর গণহত্যা দিবস

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ শে সেপ্টেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রাজাকার ও আলবদরদের সঙ্গে নিয়ে মাহমুদপুর গ্রামে হামলা চালায়। এ হামলার ঘটনায় ২৩ জন শহীদ এবং অনেক পঙ্গুত্ব বরণ করেন। এ ঘটনাকে স্বরণ করে রাখতেই এ দিবস পালন করা হয়।

২রা অক্টোবর : পথশিশু দিবস বা সুবিধাবঞ্চিত শিশু দিবস

পথ শিশুদের সুরক্ষা ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতিবছর ২রা অক্টোবর, জাতীয় পথ শিশু দিবস পালন করা হয়।

৫ই অক্টোবর : শিক্ষক দিবস

১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে প্রতি বছর ৫ই অক্টোবর বিশ্বব্যাপী বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়ে আসছে। একই সঙ্গে এটি বাংলাদেশের জাতীয় দিবস হিসেবেও পালিত হয়। এই দিবসটি শিক্ষকদের অবদানকে স্মরণ করার জন্য পালন করা হয়। ইউনেস্কোর মতে, বিশ্ব শিক্ষক দিবস শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পালন করা হয়।

১১ই অক্টোবর : কন্যা শিশু দিবস

২০০০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে দিবসটি পালিত হচ্ছে। জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী সারা বিশ্বে ২৯ সেপ্টেম্বর পালিত হয় ‘শিশু অধিকার দিবস’। কন্যা শিশুর যথাযথ শিক্ষা, পুষ্টি, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ তথা সুষ্ঠু বিকাশকে সামনে রেখেই “জাতীয় কন্যাশিশু দিবস’’ পালন শুরু হয়। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ ডিসেম্বর তারিখে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবসের প্রস্তাব গৃহীত হয়। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ১১ অক্টোবর প্রথম আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বছরের একটি দিন জাতীয় কন্যা শিশু দিবস পালন করা হচ্ছে। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ সেপ্টেম্বর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এক পত্রে জানায়, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ শে সেপ্টেম্বর “জাতীয় কন্যা শিশু দিবস, ২০১৮” উদ্যাপন করা হবে।

২২ শে অক্টোবর : নিরাপদ সড়ক দিবস

চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে গড়ে উঠা ‘নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’ ২৩ বছর ধরে সড়ককে নিরাপদ করার লক্ষ্যে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ২২ অক্টোবরকে ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস’ ঘোষণা করা হয়। কারণ ২২ শে অক্টোবর ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। তার স্ত্রী ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দের ২২ অক্টোবর কাঞ্চনের শুটিং দেখতে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। স্ত্রী জাহানারার মৃত্যুর পর তিনি নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন গড়ে তুলেন। সমাজসেবায় তার এই অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করেন।

১লা নভেম্বর : জাতীয় যুব দিবস

প্রতিবছর ১লা নভেম্বর জাতীয় যুব দিবস পালন করা হয়। যুব ও যুব মহিলাদের আত্মকর্ম উদ্যোগে উৎসাহিত করা, সৃজনশীল কাজে উদ্দীপ্ত করার মাধ্যমে জাতীয় কল্যাণে অবদান রাখার প্রেরণা সৃষ্টিই দিবসটি পালনের উদ্দেশ্য।

১০ই নভেম্বর : নূর হোসেন দিবস বা স্বৈরাচার বিরোধী দিবস

১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দের ১০ই নভেম্বর এরশাদবিরোধী আন্দোলনে শহাদাত বরণকারী নূর হোসেনের স্মরণে প্রতিবছর ১০ই নভেম্বর দিনটি পালন করা হয়। নূর হোসেন পেশায় একজন অটোরিকশা চালক ছিলেন। আন্দোলনের সময় তিনি বুকে “স্বৈরাচার নিপাত যাক” এবং পিঠে “গণতন্ত্র মুক্তি পাক” স্লোগান লিখে মিছিলে যোগ দেন এবং একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। দিনটিকে প্রথমে “ঐতিহাসিক ১০ নভেম্বর” হিসেবে পালন করা হলেও, আওয়ামী লীগ দিনটিকে “নূর হোসেন দিবস” হিসেবে পালন করতে শুরু করে।

২১ নভেম্বর : সশস্ত্রবাহিনী দিবস

১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ২১ শে নভেম্বর বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীসহ আপামর বাঙালি সর্বদিক দিয়ে একত্রে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদারদের উপর আক্রমণ করে। এই বিশেষ দিনটিকে স্মরণ রেখেই সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন করা হয়।

৩০ শে নভেম্বর : জাতীয় আয়কর দিবস

জাতীয় আয়কর দিবস। ২০০৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে এই দিবস বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে পালিত হয়ে আসছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে ৩০ নভেম্বরকে আয়কর দিবস ও ব্যক্তিশ্রেণীর রিটার্ন জমার শেষ দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে ৩০ নভেম্বর আয়কর দিবস পালন করা হচ্ছে। আগে প্রতি বছর ১৫ সেপ্টেম্বর আয়কর দিবস উদযাপিত হলেও ২০১৬ সাল থেকে ৩০ নভেম্বর আয়কর দিবস পালন করছে এনবিআর।

১লা ডিসেম্বর : মুক্তিযোদ্ধা দিবস

প্রতিবছর ১লা ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা বেসরকারীভাবে মুক্তিযোদ্ধা দিবস হিসেবে পালন করে থাকেন। নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস চেতনা পৌঁছে দেয়ার উদ্দেশ্যে মুক্তিযোদ্ধারা এই দিনটিকে সরকারীভাবে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবী জানিয়েছেন।

৬ই ডিসেম্বর : স্বৈরাচার পতন দিবস

১৯৯০ খ্রিস্টাব্দের ৬ই ডিসেম্বর সম্মিলিত বিরোধী দলের প্রচণ্ড আন্দোলনের মুখে সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদ সরকারের পতন হয়েছিল। ওই দিনকে স্মরণ করার জন্য প্রতিবছর ৬ই ডিসেম্বর দিবসটি পালন করা হয়। অন্যেিদক, এরশাদের রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টি এই দিনটিকে ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ হিসেবে পালন করে।

৮ই ডিসেম্বর : জাতীয় যুব দিবস

প্রতিবছর ৮ই ডিসেম্বর দিবসটি পালিত হয়। যুবদেরকে তাদের শক্তির অপরিমেয়ে প্রচণ্ডতা এবং তা জাতি গঠনের কাজে লাগানোর বিষয়ে প্রাণিত করাই দিবসটির উদ্দেশ্য।

৯ই ডিসেম্বর : রোকেয়া দিবস

রোকেয়া দিবস বাংলাদেশে সরকারিভাবে পালিত একটি জাতীয় দিবস। বেগম রোকেয়া ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দের ৯ই ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার অর্ন্তগত পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের ৯ ডিসেম্বর মারা যান। তাঁর কবর উত্তর কলকাতার সোদপুরে অবস্থিত যা পরবর্তীকালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক অমলেন্দু দে আবিষ্কার করেন ।বাঙালি লেখক, শিক্ষাবিদ, বাংলাদেশে নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার অবদানকে স্মরণ করে তাঁর জন্ম ও মৃত্যুদিন, ৯ই ডিসেম্বর, “রোকেয়া দিবস” পালন করা হয়।

১৪ই ডিসেম্বর : শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশে পালিত একটি বিশেষ দিবস। প্রতিবছর বাংলাদেশে ১৪ই ডিসেম্বর দিনটিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১০ থেকে ১৪ই ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির সকল বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। এ দিনটি পালনের মাধ্যমে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করা হয়।

১৬ই ডিসেম্বর : বিজয় দিবস

বিজয় দিবস বাংলাদেশে বিশেষ দিন হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশের সর্বত্র পালন করা হয়। প্রতিবছর ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশে দিনটি বিশেষভাবে পালিত হয়। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ২২ শে জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করার ঘোষণা এবং সরকারীভাবে এ দিনটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়। ৯ মাস যুদ্ধের পর ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীর প্রায় ৯১,৬৩৪ সদস্য বাংলাদেশ ও ভারতের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। এর ফলে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামে একটি নতুন স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। এ উপলক্ষে প্রতি বছর বাংলাদেশে দিবসটি যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য এবং বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে পালিত হয়।

১৯ শে ডিসেম্বর : বাংলা ব্লগ দিবস

দিবসটি প্রথমবার পালিত হয় ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে। ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে ইন্টারনেটে প্রথম বাংলা ব্লগিং-এর সূচনা হয়। মূলত ব্লগিং, বিশেষ করে বাংলায় ব্লগিং-এ আগ্রহী করতেই ব্লগাররা দিবসটি পালন করে থাকেন। ইন্টারনেটে বাংলা ভাষায় ব্লগ লেখার চর্চাকে আরও ব্যাপক এবং পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে দিতে ১৯ ডিসেম্বরকে বাংলা ব্লগ দিবস হিসেবে পালন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন ১৩৬টি দেশ থেকে বাংলায় ব্লগ চর্চা হচ্ছে।

1 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post