আমার জীবনের লক্ষ্য / তোমার জীবনের লক্ষ্য
( আদর্শ শিক্ষক হবো )
ভূমিকা : জীবন গতিময় এবং এই গতি স্বভাবতই এক অনন্য গন্তব্য প্রত্যাশী। গতিকে প্রবাহমান রেখে প্রার্থিত গন্তব্যে পৌঁছাতে হলে শুরুতেই সুনির্দিষ্টভাবে স্থির করে নিতে হয় জীবনের লক্ষ্য। না হয় পদে পদে ব্যাহত হয় জীবনের গতি; আর শেষে নৈরাশ্যপীড়িত ব্যর্থতায় ভরা এক জীবন নিয়ে মধুময় এই ধরণী থেকে বেদনাদায়ক বিদায় নিতে হয় মানুষকে। কোনো চিন্তাশীল সজীব মানুষ জীবনের এমন করুণ পরিণতির কথা ভাবতেই পারেন না। তারা স্ব-স্ব জীবন বিকাশের সুন্দরতম ভাবনায় থাকেন সদাবিভোর। আর এই ভাবনাকে সাফল্যমণ্ডিত করে তোলার জন্যে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখেই শুরু করে জীবন সাধনা। তারা জানেন, লক্ষ্য নির্দিষ্ট থাকলে শক্ত হাতে জীবনের হাল ধরেই জীবন সমুদ্রে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়।
জীবনের লক্ষ্য সম্পর্কে আমার ভাবনা : চিন্তাশীল সজীব মানুষ হিসেবে আমারও আছে জীবন বিকাশের এক বর্ণিল স্বপ্ন। সেই স্বপ্নের সফল বাস্তবায়নের অভিপ্রায়ে আমি স্থির করে নিয়েছি জীবনের লক্ষ্য। আমার সেই লক্ষ্য হলো একজন আদর্শ শিক্ষক হওয়া। জানি, শিক্ষকতার জীবনে বিত্ত-বৈভব জমকালো প্রাচুর্য নেই। নেই কোনো সামাজিক ও রাষ্ট্রিক প্রতিপত্তি। যেমন রয়েছে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আমলা ও নেতাদের জীবনে। এও জানি, মানব জীবনে বিত্তের প্রয়োজন আছে, প্রয়োজন আছে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আমলা ও আরো অনেকের। কিন্তু সর্বাগ্রে প্রয়োজন মানবিক মূল্যবোধের। এই মূল্যবোধের উন্মেষ এবং চর্চা ব্যতীত মানব জীবনে সকল সুখের আয়োজন ব্যর্থ হয়ে যায়, বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে মানবিক সংগঠন- পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্বব্যবস্থার মূল বুনিয়াদ, ঘুচে যায় মানুষে আর পশুতে প্রভেদ। মানুষের মহত্তম বিকাশ সাধনে তাই মূল্যবোধের জাগরণই প্রথম এবং প্রধান শর্ত। ব্যক্তি ও সামাজজীবনে এই মূল্যবোধের জাগরণে ও নিরন্তর অনুশীলনে নিবেদিত-প্রাণ আদর্শ শিক্ষকের বিকল্প নেই।
লক্ষ্য নির্বাচনের সঠিক সময় : আমি পড়েছি, ছাত্রজীবনেই ভবিষ্যৎ জীবনের বীজ বপনের সময়। এ সময়ে স্বপ্ন ও কল্পনার যে বীজ বপন করা হয় তাই ভবিষ্যতে ফুল-ফলে বিকশিত হয়ে ওঠে। কিন্তু কেবল স্বপ্ন ও কল্পনার বীজ বপন করলেই চলে না; শ্রম, নিষ্ঠা, সাধনা, অধ্যবসায় ও দৃঢ় একাগ্রতা দিয়ে তাকে লালন, বর্ধন ও বিকশিত করতে হয়। তাই ভবিষ্যৎ জীবনের লক্ষ্য উপনীত হওয়ার জন্যে আমাকেও এখনই জীবনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নির্বাচন করতে হয়েছে।
পাঠ্যক্রম নির্বাচন : নতুন পাঠ্যক্রম অনুসারে মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরেই পাঠ্যক্রম নির্বাচনের সুযোগ আমরা পেয়েছি। আমি শিক্ষকতাকে জীবনের লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে মানবিক শাখাকেই বিশেষভাবে পছন্দ করেছি। আমার ধারণা, বিজ্ঞান শিক্ষা মানুষের মানসিকতাকে কিছুটা যান্ত্রিক ও তথ্যপ্রবণ করে তোলে, বাণিজ্য শিক্ষায় প্রাধান্য পায় লাভ-ক্ষতির বিচার-বিবেচনা। সেই তুলনায় ভবিষ্যতে শিক্ষক হতে ইচ্ছুক একজনের মননশীল মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ার ক্ষেত্রে মানবিক বিদ্যার ভূমিকাই প্রধান। আর তাই আমি মানবিক বিদ্যা চর্চাকেই বর্তমান শিক্ষাক্রম হিসেবে বেছে নিয়েছি।
লক্ষ্য নির্বাচনের কারণ : আমার সমাজজীবনে একদিকে অজ্ঞতা, কুসংস্কার, ধর্মান্ধতার বেড়াজাল কাটে নি, অন্যদিকে ভোগবিলাসিতা, পরিভোগপ্রবণতা ও স্বার্থসর্বস্বতার প্রভাব সমাজে বাড়ছে। তার মধ্যে আজ খুব দরকার দেশব্রতী, সমাজব্রতী, মানবব্রতী শিক্ষার প্রসার। কারণ, এ ধরনের শিক্ষা ছাড়া সমাজের নৈতিক অধঃপতনের অধোমুখী প্রবল ধারাকে ঠেকানো যাবে না। সেদিক থেকে আজকের দিনে যথার্থ শিক্ষকতা একটা চ্যালেঞ্জ। পারিপার্শ্বিক নানা প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতা মোকাবেলা করে চালাতে হবে মানবব্রতী শিক্ষা কার্যক্রম।
শিক্ষা ও শিক্ষকতার ক্ষেত্রে বিরাজমান বাস্তবতা : আজকাল শিক্ষকদের নিবেদিতপ্রাণ ভূমিকারও অবসান হতে চলেছে। শিক্ষাঙ্গণে আজ জ্ঞানব্রতী ছাত্রের দেখা মেলে খুব কম। অধিকাংশই যেনতেন প্রকারে সার্টিফিকেট অর্জনে প্রত্যাশী পরীক্ষার্থী। শিক্ষকগণও এখন আর নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক নন, তাঁদের একটা বড় অংশ হয়ে বসেছেন অর্থপাগল ‘টিউটর’। এ অবস্থায় প্রকৃত শিক্ষকের ব্রত পালন অত্যন্ত কঠিন। তবু আমি ভবিষ্যৎ জীবনে একজন ব্রতী শিক্ষক হতে চাই। পারিপার্শ্বিক প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতা মোকাবেলা করে তারুণ্যকে শিক্ষা-সাধনায় উজ্জীবিত করার দৃঢ় প্রত্যাশা রাখি।
আমার দৃষ্টিভঙ্গি : আমি জানি বর্তমান যুগে শিক্ষা এত বেশি বিষয়ভিত্তিক ও বিশেষায়িত হয়ে গেছে যে তাতে শিক্ষার্থীকে সঠিকভাবে শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচিভিত্তিক বিষয়ে শিক্ষাদান করাই আমার মুখ্য উদ্দেশ্য হবে না, আমি চাইব প্রধানত শিক্ষার্থীদের আত্মশক্তির উদ্বোধন ঘটাতে, নৈতিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত করতে, দেশব্রতী হওয়ার প্রণোদনা প্রদান করতে। কারণ, আত্মশক্তির উদ্বোধন ছাড়া মুক্তি ও উন্নতি সম্ভব নয়।
শিক্ষকতা পেশায় সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য : আমাদের দেশে শিক্ষক পেশাধারী লোকের অভাব নেই। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কতজন প্রকৃত শিক্ষক বলা মুশকিল। বেশির ভাগই শিক্ষকতার চাকরি করছেন। কিন্তু শিক্ষকতা একটা সামাজিক দায়বদ্ধ মহৎ পেশা। নানা কারণে শিক্ষকের পেশায় মহৎ আদর্শ এখন ক্ষয়িষ্ণ। এই ক্ষয়িষ্ণু অবস্থার অবসান ঘটিয়ে আবার শিক্ষকের পেশায় নতুন চেতনার প্রসার ঘটানোর ক্ষেত্রে শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে শিক্ষকতা সুদূরপ্রসারী ফলাফল রাখতে পারে তাই আমি শিক্ষার বিষয় হিসেবে শিক্ষাবিজ্ঞান পড়তে চাই এবং পেশা হিসেবে শিক্ষক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে শিক্ষকতাকে বেছে নিতে চাই। এই লক্ষ্য স্থির রেখেই আমি অগ্রসর হবার প্রত্যাশা রাখি।
উপসংহার : একুশ শতকের তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার্থী আমরা। যে পেশাই বেছে নিই না কেন জাতীয় অগ্রগতি সাধন, আন্তর্জাতিক সৌভ্রাতৃত্ব অর্জন ও মানবব্রতী ভূমিকা পালনই হবে আমাদের চরম লক্ষ্য। বর্তমানে আমাদের দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দালান নির্মিত হচ্ছে, শিক্ষার জন্যে বরাদ্দ বাড়ছে। কিন্তু শিক্ষার মান কমছে। তাই একুশ শতকের নবচেতনাসম্পন্ন নতুন মানুষ গড়ে তোলার জন্যে আমাদের চাই গ্রামে গ্রামে আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আর সেগুলোতে চাই দেশব্রতী, মানবব্রতী অগণিত আদর্শ শিক্ষক। আমি যদি আমার মেধা ও শক্তিকে সাধ্যমতো এ কাজে লাগাতে পারি তাহলেই আমি জীবনকে সার্থক মনে করব। আমি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি, পরিভোগে সুখ নেয়, মানবব্রতী, দেশব্রতী ভূমিকাতেই আমি প্রকৃত সুখ খুঁজে পাব।
আমার জীবনের লক্ষ্য / তোমার জীবনের লক্ষ্য
আদর্শ শিক্ষক হবো
এর PDF Download করুন
[ একই প্রবন্ধ অন্য বিষয়ে আবার সংগ্রহ করে দেয়া হলো ]
আমার জীবনের লক্ষ্য / তোমার জীবনের লক্ষ্য
( সুদক্ষ কৃষক হবো )
‘সংসার সিন্ধুতে ধ্রুবতারা সমস্থির লক্ষ্য চাই,
লক্ষ্যবিহীন জীবনতরণী কূল নাহি কভু পায়।’
জীবনে লক্ষ্য স্থির করার প্রয়োজনীয়তা : জীবনে সার্থকতা লাভ করতে হলে একটি দৃঢ় সংকল্প চাই। মানব-জমিনে সোনা ফলাতে হবে। এ জন্যে যথাসময়ে বীজ বপন এবং আনুষঙ্গিক পরিশ্রম ও সাধনার দরকার। তেমনি জীবনের উদ্দেশ্যকে সার্থক করে তুলতে হলে প্রয়োজন সাধনার, প্রয়োজন একনিষ্ঠ শ্রমের। ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে,
‘An aimless life is like a boat without a rudder.’
তাই জীবনের চলার পথে চাই নির্দিষ্ট এবং সুপরিকল্পিত পথরেখা। সেই পথরেখাই সফলতার তোরণ-দুয়ারে উপনীত করবে। সেজন্যই জীবনের সূচনাতেই লক্ষ্য স্থির হওয়া উচিত।
ছাত্রাবস্থায়ই লক্ষ্য স্থির করার উপযুক্ত সময় : ছাত্রজীবন পরিণত-জীবনের প্রস্তুটিপর্ব। ছাত্রাবস্থার স্বপ্ন ও কল্পনা পরিণত-জীবনে বাস্তবের মাটিতে ফুলে-ফলে সুশোভিত হয়ে সার্থক হয়। কিন্তু স্বপ্ন কেবল স্বপ্ন হলেই, কিংবা কল্পনা, অবাস্তব ও উদ্ভট হলেই চলে না; পরিণত জীবনের লক্ষ্যবাহী হওয়া চাই। সেজন্য ছাত্রাবস্থাতেই জীবনের লক্ষ্য স্থির করতে হয়। সে লক্ষ্যকে সমানে রেখে অগ্রসর হতে হয় শ্রম, নিষ্ঠা, অধ্যবসায় ও একাগ্রতার সাথে।
মানুষের কর্মজীবন বিকশিত হতে পারে বিচিত্র পথে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাধনা, চিকিৎসা-সেবা দান, শিল্প-কলকারখানা স্থাপন, ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা পালন- নানাভাবে মানুষ কর্মজীবনে ভূমিকা রাখতে পারে। পেশা হিসেবে কেউ বেছে নিতে পারে চাকরি, কেউ হতে পারে আইনজ্ঞ, কেউ হতে পারে প্রকৌশলী, কেউ-বা ব্রতী হতে পারে শিক্ষকতার মহান পেশায়, কেউ-বা বেছে নিতে পারে কৃষি উন্নয়ন। যে যাই হতে চাক না কেন বৃত্তি নির্বাচন অনেকাংশে নির্ভর করে শারীরিক সামর্থ্য, শিক্ষাগত, আর্থিক স্বচ্ছলতা ও উপযুক্ত পরিবেশের উপর। অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ বৃত্তি বা পেশা গ্রহণের জন্য সুনির্ধারিত পাঠক্রম অধ্যয়নের প্রয়োজন হয। সে জন্য জীবনের লক্ষ্য ঠিক করার সাথে সাথে সেই অনুযায়ী পাঠক্রম ঠিক করতে হয়।
পাঠক্রম নির্বাচন : আমাদের দেশে সাধারণত মাধ্যমিক পর্যায়েই পাঠক্রমকে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে সাধারণ শিক্ষা পাঠক্রমকে প্রধানত তিনটি শাখায় বিভক্ত করা হয়েছে- ১। বিজ্ঞান শাখা, ২। মানবিক শাখা, ৩। ব্যবসায় শিক্ষা শাখা। এই শাখাগুলোর অন্তর্গত এমন অনেক শাখা-উপশাখাভিত্তিক বিষয় রয়েছে যেগুলোর কোনো একটির অধ্যয়ন ও গবেষণার পরিসর অনেক বিশাল এবং সেগুলোকে কেন্দ্র করে উচ্চতর শিক্ষার ব্যাপক পাঠক্রম গড়ে উঠেছে। পাঠক্রম নির্বাচনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর ইচ্ছাকেই গ্রহণ করতে হয়। যার যে বিষয়ে আগ্রহ আছে তাকে সে বিষয়ে পড়তে দেওয়াই যুক্তিসংগত। শুধু আগ্রহ থাকলেই চলে না, তা বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীকে ঘনিষ্ঠ অধ্যয়নের প্রয়োজন হয়। কেননা এমন অনেক বিষয আছে যেগুলোর জন্য তীক্ষ্ণ মেধা ও পড়াশোনা প্রয়োজন হয়। যেমন- কম্পিউটার বিজ্ঞান, চিকিৎসা বিজ্ঞান, প্রকৌশল বিজ্ঞানের কোনো শাখায় অধ্যয়নের জন্য শিক্ষার্থীকে কেবল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অসাধারণ ভালো ফলাফল করলেই চলে না, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায়ও কৃতিত্ব প্রদর্শন করতে হয়।
আমার জীবনের লক্ষ্য : আমার জীবনের লক্ষ্য আমি একজন সুদক্ষ কৃষক হব। আমার লক্ষ্য জেনে অনেকে হয়ত আমাকে উপহাস করবে। কিন্তু আমার জীবনের স্থির লক্ষ্যই হল কৃষক হওয়া। আমার লক্ষ্যকে অনেকে সামান্য এবং দীন মনে করতে পারে। যারা এ রকম মনে করে, আমি তাদের দোষ দিই না। কারণ দোষ তাদের নয়, দোষ তাদের দৃষ্টির সংকীর্ণতার। এবং উন্নত বিশ্ব ও কৃষির উন্নয়নের সঙ্গে দেশ ও জাতির উন্নয়ন যে জড়িত সে সম্পর্কে অজ্ঞতা। কৃষক বললে, সবাই আমাদের দেশের গতানুগতিক ধারার মান্ধাতার আমলের সেই কৃষক, যাদের শিক্ষা নেই, স্বাস্থ্য নেই, দুই বেলা দুই মুঠো পেট ভরে খাওয়ারও সংস্থান নেই, আর্থিক স্বচ্ছলতা নেই তাদের কথা ভেবে থাকে। আমি যে-রকম কৃষক হওয়ার কথা ভাবছি না। আমি আধুনিক যুগের শিক্ষিত, সুদক্ষ, বিজ্ঞাননির্ভর প্রগতিশীল কৃষক হতে চাই। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো আজ বৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষ-আবাদ করে কৃষিক্ষেত্রে এনেছে বিপুল পরিবর্তন। দেশের অর্থনীতিকে সুদৃঢ় করেছে। দারিদ্রকে চির-বিদায় দিয়েছে। সোনার বাঙলায় আবার সোনার ফসলে ভরে দিতে চাই। চাই এদেশের দরিদ্রতর অভিশাপ থেকে আমাদের দেশের শতকরা আশি জন কৃষককে মুক্তি দিতে। এদেশে ঘটাতে চাই কৃষিবিপ্লব। এই মুহূর্তে মনে পড়ে বঙ্কিমচন্দ্রের অবিস্মরণীয় পুঙক্তিগুলো,
এরকম লক্ষ্য স্থির করার কারণ : বন্ধুমহলের কেউ হতে চায় ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ ম্যাজিস্ট্রেট, কেউ-বা অর্থনীতিবিদ। সকলে চাকরিকেই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হিসেবে স্থির করেছে। বাংলাদেশে এই চাকরিপ্রিয়তা এত বৃদ্ধি পেয়েছে যে, তার পলে সমস্ত দেশে কৃষি বিমুখতা দেখা দিয়েছে। যে কৃষি আমাদের দেশের অর্থনীতির মূল উৎস এবং যে কৃষি নানা উপায়ে আমাদের দেশে লোকসংখ্যার অধিকাংশের জীবিকার আয়োজন করে দেয়, তার পরিচালনার দায়িত্ব মুষ্টিমেয় নিরক্ষর, রুগ্ন, পরিবর্তন বিমুখ, দরিদ্র কৃষকদের হাতে তুলে দিয়ে আমরা নিশ্চিন্ত হয়ে বসে আছি। এটা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, দুঃখের বিষয়, লজ্জার বিষয়! আমাদের শিক্ষিত যুবসমাজের কেউ কি সেই মাটির ডাকে সাড়া দেবে না? কবিগুরুর আহ্বানকে কি কেউ শুনবে না?-
ছাত্রাবস্থায়ই লক্ষ্য স্থির করার উপযুক্ত সময় : ছাত্রজীবন পরিণত-জীবনের প্রস্তুটিপর্ব। ছাত্রাবস্থার স্বপ্ন ও কল্পনা পরিণত-জীবনে বাস্তবের মাটিতে ফুলে-ফলে সুশোভিত হয়ে সার্থক হয়। কিন্তু স্বপ্ন কেবল স্বপ্ন হলেই, কিংবা কল্পনা, অবাস্তব ও উদ্ভট হলেই চলে না; পরিণত জীবনের লক্ষ্যবাহী হওয়া চাই। সেজন্য ছাত্রাবস্থাতেই জীবনের লক্ষ্য স্থির করতে হয়। সে লক্ষ্যকে সমানে রেখে অগ্রসর হতে হয় শ্রম, নিষ্ঠা, অধ্যবসায় ও একাগ্রতার সাথে।
মানুষের কর্মজীবন বিকশিত হতে পারে বিচিত্র পথে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাধনা, চিকিৎসা-সেবা দান, শিল্প-কলকারখানা স্থাপন, ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা পালন- নানাভাবে মানুষ কর্মজীবনে ভূমিকা রাখতে পারে। পেশা হিসেবে কেউ বেছে নিতে পারে চাকরি, কেউ হতে পারে আইনজ্ঞ, কেউ হতে পারে প্রকৌশলী, কেউ-বা ব্রতী হতে পারে শিক্ষকতার মহান পেশায়, কেউ-বা বেছে নিতে পারে কৃষি উন্নয়ন। যে যাই হতে চাক না কেন বৃত্তি নির্বাচন অনেকাংশে নির্ভর করে শারীরিক সামর্থ্য, শিক্ষাগত, আর্থিক স্বচ্ছলতা ও উপযুক্ত পরিবেশের উপর। অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ বৃত্তি বা পেশা গ্রহণের জন্য সুনির্ধারিত পাঠক্রম অধ্যয়নের প্রয়োজন হয। সে জন্য জীবনের লক্ষ্য ঠিক করার সাথে সাথে সেই অনুযায়ী পাঠক্রম ঠিক করতে হয়।
পাঠক্রম নির্বাচন : আমাদের দেশে সাধারণত মাধ্যমিক পর্যায়েই পাঠক্রমকে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে সাধারণ শিক্ষা পাঠক্রমকে প্রধানত তিনটি শাখায় বিভক্ত করা হয়েছে- ১। বিজ্ঞান শাখা, ২। মানবিক শাখা, ৩। ব্যবসায় শিক্ষা শাখা। এই শাখাগুলোর অন্তর্গত এমন অনেক শাখা-উপশাখাভিত্তিক বিষয় রয়েছে যেগুলোর কোনো একটির অধ্যয়ন ও গবেষণার পরিসর অনেক বিশাল এবং সেগুলোকে কেন্দ্র করে উচ্চতর শিক্ষার ব্যাপক পাঠক্রম গড়ে উঠেছে। পাঠক্রম নির্বাচনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর ইচ্ছাকেই গ্রহণ করতে হয়। যার যে বিষয়ে আগ্রহ আছে তাকে সে বিষয়ে পড়তে দেওয়াই যুক্তিসংগত। শুধু আগ্রহ থাকলেই চলে না, তা বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীকে ঘনিষ্ঠ অধ্যয়নের প্রয়োজন হয়। কেননা এমন অনেক বিষয আছে যেগুলোর জন্য তীক্ষ্ণ মেধা ও পড়াশোনা প্রয়োজন হয়। যেমন- কম্পিউটার বিজ্ঞান, চিকিৎসা বিজ্ঞান, প্রকৌশল বিজ্ঞানের কোনো শাখায় অধ্যয়নের জন্য শিক্ষার্থীকে কেবল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অসাধারণ ভালো ফলাফল করলেই চলে না, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায়ও কৃতিত্ব প্রদর্শন করতে হয়।
আমার জীবনের লক্ষ্য : আমার জীবনের লক্ষ্য আমি একজন সুদক্ষ কৃষক হব। আমার লক্ষ্য জেনে অনেকে হয়ত আমাকে উপহাস করবে। কিন্তু আমার জীবনের স্থির লক্ষ্যই হল কৃষক হওয়া। আমার লক্ষ্যকে অনেকে সামান্য এবং দীন মনে করতে পারে। যারা এ রকম মনে করে, আমি তাদের দোষ দিই না। কারণ দোষ তাদের নয়, দোষ তাদের দৃষ্টির সংকীর্ণতার। এবং উন্নত বিশ্ব ও কৃষির উন্নয়নের সঙ্গে দেশ ও জাতির উন্নয়ন যে জড়িত সে সম্পর্কে অজ্ঞতা। কৃষক বললে, সবাই আমাদের দেশের গতানুগতিক ধারার মান্ধাতার আমলের সেই কৃষক, যাদের শিক্ষা নেই, স্বাস্থ্য নেই, দুই বেলা দুই মুঠো পেট ভরে খাওয়ারও সংস্থান নেই, আর্থিক স্বচ্ছলতা নেই তাদের কথা ভেবে থাকে। আমি যে-রকম কৃষক হওয়ার কথা ভাবছি না। আমি আধুনিক যুগের শিক্ষিত, সুদক্ষ, বিজ্ঞাননির্ভর প্রগতিশীল কৃষক হতে চাই। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো আজ বৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষ-আবাদ করে কৃষিক্ষেত্রে এনেছে বিপুল পরিবর্তন। দেশের অর্থনীতিকে সুদৃঢ় করেছে। দারিদ্রকে চির-বিদায় দিয়েছে। সোনার বাঙলায় আবার সোনার ফসলে ভরে দিতে চাই। চাই এদেশের দরিদ্রতর অভিশাপ থেকে আমাদের দেশের শতকরা আশি জন কৃষককে মুক্তি দিতে। এদেশে ঘটাতে চাই কৃষিবিপ্লব। এই মুহূর্তে মনে পড়ে বঙ্কিমচন্দ্রের অবিস্মরণীয় পুঙক্তিগুলো,
“দেশের মঙ্গল কাহার মঙ্গল? তোমার আমার মঙ্গল দেখিতেছি, কিন্তু তুমি আমি কি দেশ? তুমি আমি দেশের কয়জন? আর এই কৃষিজীবী কয়জন? তাদের ত্যাগ করিলে দেশে কয়জন থাকে? হিসাব করিলে তাহারাই দেশ-দেশের অধিকাংশ লোকই কৃষিজীবী।”
এরকম লক্ষ্য স্থির করার কারণ : বন্ধুমহলের কেউ হতে চায় ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ ম্যাজিস্ট্রেট, কেউ-বা অর্থনীতিবিদ। সকলে চাকরিকেই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হিসেবে স্থির করেছে। বাংলাদেশে এই চাকরিপ্রিয়তা এত বৃদ্ধি পেয়েছে যে, তার পলে সমস্ত দেশে কৃষি বিমুখতা দেখা দিয়েছে। যে কৃষি আমাদের দেশের অর্থনীতির মূল উৎস এবং যে কৃষি নানা উপায়ে আমাদের দেশে লোকসংখ্যার অধিকাংশের জীবিকার আয়োজন করে দেয়, তার পরিচালনার দায়িত্ব মুষ্টিমেয় নিরক্ষর, রুগ্ন, পরিবর্তন বিমুখ, দরিদ্র কৃষকদের হাতে তুলে দিয়ে আমরা নিশ্চিন্ত হয়ে বসে আছি। এটা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, দুঃখের বিষয়, লজ্জার বিষয়! আমাদের শিক্ষিত যুবসমাজের কেউ কি সেই মাটির ডাকে সাড়া দেবে না? কবিগুরুর আহ্বানকে কি কেউ শুনবে না?-
‘ফিরে চল ফিরে চল মাটির টানে’
আমি কবিগুরুর আহ্বানে মাটির কোলেই ফিরে যেতে চাই। আমি পেতে চাই। আমি পেতে চাই নজরুলের বন্দনা-
‘শ্রম-কিণাঙ্ক-কঠিন যাদের নির্দয় মুঠি-তলে
ত্রস্তা ধরণী নজরানা দেয় ডালি ভরে ফুলে ফলে।
……
তারই তরে ভাই গান রচে যাই, বন্দনা করি তারে।’
দেশের অবস্থার সঙ্গে আমার লক্ষ্যের যোগসূত্র : আজ আমাদের শিল্পবিধ্বস্ত-কৃষি অত্যন্ত দুর্দশাগ্রস্ত। দিনের পর দিন শোষক-শাসকেরা এ দেশকে কামধেনুর মতো দোহন করে নিয়ে গেছে। ক্ষমতার অতিরিক্তে উৎপাদন করে বাংলাদেশের কৃষি আজ সর্বস্বান্ত। অথচ স্বাধীনতা লাভের পর আমাদের লক্ষ্য ছিল- ‘ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা’ একটি সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার। স্বপ্নের বাঙলাকে বাস্তবিক সোনার বাঙলা হিসেবে দড়ে তুলতে আমার লক্ষ্যের বিকল্প নেই।
সার্থকতা : আমাদের দেশের কৃষক ভোঁতা লাঙ্গল, রুগ্ন হাল-বলদ ও নিকৃষ্ট বীজ নিয়ে সারহীন জমিতে যথাসম্ভব স্বল্প পরিমাণ ফসল ফলিয়ে চলতে। সেচের জল তারা ঠিকমত পায় না। আমি নতুন উদ্যমে এই হতাশাক্লিষ্ট কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে চাই। উন্নত সারের ব্যবহার সম্পর্কে আজও তারা অজ্ঞ। উন্নত বীজ সংগ্রহে এখনও তাদের উদাসীনতা। আজও অভাব, দরিদ্র্যের এক নিষ্করুণ চিত্র। তার ওপর অশিক্ষার অন্ধকার। কুসংস্কারের আনুগত্য। রোগ-মহামারীর অভিশাপ। বস্তুত কৃষকদের উন্নতি ব্যতীত কৃষিপ্রধান এই দেশের সামগ্রিক উন্নতি সম্ভব নয়। তাই আমি কৃষি সেবার মাধ্যমে যতটুকু সাধ্য দেশ সেবা করে যাব। আর এর মাঝেই আমার জীবনের স্বপ্ন ও লক্ষ্যের সার্থকতা নিহিত বলে আমি মনে করি।
উপসংহার : কৃষিসাধনাই দেশের সমৃদ্ধি সাধনার মূল চাবিকাঠি। কৃষিই দেশের সকল উন্নয়নের রুদ্ধদ্বার খুলে দিবে। মানুষের মুখে হাসি ফোটাবে। আমার বিশ্বাস, যদি আমার চেষ্টায় কোনো ক্রটি না থাকে এবং মনের একাগ্রতা অটুট থাকে, তবে আমি এ বিষয়ে নিশ্চয়ই সফল হব। ‘মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন।’ -এ শপথ বাক্য আমাকে সাফল্যের সিংহদ্বারে পৌঁছে দেবে, আমার প্রাণে নতুন উদ্যম ও নতুন প্রেরণা জোগাবে। স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি-
‘তোমার পতাকা যারে দাও
তারে বহিবার দাও শকতি।’
-আমাকে শক্তি দাও, সামর্থ্য দাও, প্রাণে আর মনে দাও স্বপ্ন সাধনার অপরাজেয় উৎসাহ।
আমার জীবনের লক্ষ্য / তোমার জীবনের লক্ষ্য
সুদক্ষ কৃষক হবো
এর PDF Download করুন
[ একই প্রবন্ধ অন্য বিষয়ে আবার সংগ্রহ করে দেয়া হলো ]
আমার জীবনের লক্ষ্য / তোমার জীবনের লক্ষ্য
( মানব দরদী ডাক্তার হবো )
সেদিন পড়াতে পড়াতে স্যার হঠাৎ বললেন, “উদ্দেশ্যবিহীন জীবন চালকবিহীন নৌকার মত।” ব্যাখা করে বুঝালেন, “চালক যদি না থাকে নৌকার পরিণাম হবে অনিশ্চিত। ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভেসে কোন্ আ-ঘাটায় সে ভেসে যাবে কে জানে? ঝড়-ঝাপটার ঘাঁয়ে হয়ত ভেঙে গুড়িয়ে যাবে- হয়ত তলিয়ে যাবে জলের অতলে। মানুষের জীবনের ক্ষেত্রেও তাই। জীবনে যদি কোন উদ্দেশ্য না থাকে তাহলে জীবনের পরিণামও হবে ভয়াবহ। অন্যদিকে দুঃখ-বেদনা আঘাত যতই আসুক না কেন চালকের মতই এই উদ্দেশ্য জীবনের লক্ষ্যে আমাদের পৌঁছে দেবে।”
শুনতে শুনতে কেমন যেন চমকে উঠলাম। তাইত, এমন ত কোন দিন ভাবিনি! বলেওনি কেউ কোনদিন! সত্যই ত, আমার জীবনের লক্ষ্য কি, সে নিয়ে ত কোনদিন মাথা ঘামাইনি! নিজেকে শুধোই -কি হব আমি? শিক্ষক? ইঞ্জিনিয়ার? সরকারী অফিসের বড় চাকুরে? না কি বড় ব্যবসাদার? না আরও বড় কিছু? ভেবে ভেবে থৈ পেলাম না। একবার ভাবলাম শিক্ষকই হব- স্যারের মত দরদ দিয়ে পড়িয়ে আমার গ্রামের ছেলে-মেয়েদের মানুষ করে তুলব। আবার ভাবলাম- না, বড় ব্যবসাদারই হতে হবে আমাকে। কেননা কথায় বলে “বাণিজ্য বসতে লক্ষ্মী।” কিংবা চিকিৎসক হওয়াও ত মন্দ না। বড় খাটুনীর জীবন হলেও সম্মানের জীবন। আহা কি সকৃতজ্ঞ দৃষ্টিতে লোকে তাকিয়ে দেখে। দেখবেই ত। মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরিয়ে আনে যে। আবার ভাবি, আচ্ছা মন্ত্রী কিংবা উপমন্ত্রী কি হওয়া যায় না? সঙ্গে সঙ্গে মন থেকে কে যেন হুঁশিয়ার করে দেয় -ওরে, সে বড় ভাগ্যের ব্যাপার। না, সে ভাগ্য সাথে করে আসেনি, -অতএব চিন্তা করেও কাজ নেই।
বস্তুত কি যে হব- অনেক ভেবেও স্থির করে উঠতে পারছি না। চঞ্চল প্রজাপতির মত মন কেবল এক প্রসঙ্গ থেকে অন্য প্রসঙ্গে ঘুরে ফিরে মরছিল।
ভেবে ভেবে মন যখন অস্থির, ঠিক এমকি সময় বিচিত্র এক ঘটনা ঘটল। না, বিচিত্র বললে ঠিক হবে না- মর্মান্তিক বলাই সঙ্গত। একটি ঘটনার আঘাত আমার চেতনাকে যেন নতুন এক জগতে নিয়ে গেল।
সেদিন সকালে বই নিয়ে বসে যখন তাতে মন বসাবার চেষ্টা করছি, তখন হঠাৎ করে বুকফাটা আর্তনাদে চমকে উঠলাম। কে কাঁদে এমন করে? আমাদের রূপার মা না? বই-টই ফেলে ছুটে এলাম বাইরে। ততক্ষণে বাড়ির আর সবাইও কাজ ফেলে ছুটে এসেছেন। “কি হয়েছে গো? কাঁদছ কেন এমন করে?” রূপার মা যা বলল তা হল এই -ক’দিন ধরে রূপার খুব জ্বর হচ্ছিল। গত রাত থেকে খুব বাড়াবড়ি যাচ্ছে। হাঁ, ডাক্তারের কাছেও গিয়েছেন -ও পাড়ার গোপাল ডাক্তার। কিন্তু চাহিদা মত পয়সা দিতে অপারগ হওয়ায় তিনি আসতে রাজি হননি। গরীব মানুষ -দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন জোটানোই দুষ্কর। ডাক্তারের ‘ফি’-এর টাকা দেবে কোত্থেকে! এদিকে রূপার অবস্থাও সঙ্গীন। তাই ছুটে এসেছে আমাদের বাড়ি, ভাব খানা যদি আমরা কিছু ব্যবস্থা করি।
আমি অবাক হয়ে শুনছিলাম। মানুষ এত হৃদয়হীন, এত অর্থপিশাচ হতে পারে? একটা অসহায় শিশু মরতে বসেছে জেনেও মন এতটুকু বিচলিত হয় না? এটা হয় কি করে? মাও এতক্ষণ নীরবে শুনছিলেন। আমাকে ডেকে বললেন, “খোকা, যা ত তুই, ডাক্তারকে গিয়ে বল, আমরাই ফি দিব। দেরি না করে এখ্খুনি যেন তিনি আসেন।”
মুহূর্তমাত্র বিলম্ব না করে ছুটলাম। পেছনে পেছনে রূপার মাও কাঁদতে কাঁদতে ছুটল। ডাক্তারবাবুকে তার চেম্বারেই পেলাম। মার কথা বললাম। শুনে অপ্রসন্ন মনে তিন উঠলেন। সব গুছিয়ে নিয়ে চললেন আমাদের সাথে।
বাড়ির কাছাকাছি আসতেই রূপার মা ছুটে গিয়ে ঘরে ঢুকল। আমরাও ঢুকব এমন সয় বুকফাটা আর্তনাদে শিউরে উঠলাম। রূপার মা মাথা কুটে হাহাকার করছে -ওরে রূপারে…. লক্ষ্মী সোনা আমার….। তুই কই গেলিরে….।
স্তব্ধ হয়ে শুনলাম। বুঝলামও সব। রূপা এখন সব চিকিৎসার বাইরে চলে গেছে।
কখন কিভাবে বাড়ি ফিরলাম জানি না। ঐ ঘটনা যেন চাবুকের মত ঘা দিয়ে আমাকে সজাগ করে দিল। না, জীবনের লক্ষ্য আমার ঠিক হয়ে গেছে। আমি ডাক্তার হব -হবই। শহরে নয়, ডাক্তার হয়ে এ গাঁয়েই আমি চিকিৎসা করবো রূপার মার মত যারা আর্ত - অসহায় তাদের আমি আশা দেব, ভরসা দেব। অকালমৃত্যুর হাত থেকে ওদের সন্তানদের বাঁচাবার জন্য প্রাণপ্রাত চেষ্টা করব আমি।
আমার জীবনের লক্ষ্য / তোমার জীবনের লক্ষ্য
মানব দরদী ডাক্তার হবো
এর PDF Download করুন
[ একই প্রবন্ধ অন্য বিষয়ে আবার সংগ্রহ করে দেয়া হলো ]
আমার জীবনের লক্ষ্য / তোমার জীবনের লক্ষ্য
( সৎ এ্যাকাউন্ট্যান্ট হবো )
ভূমিকা : সব মানুষের জীবনেই একটা লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য থাকে বা থাকা উচিত। জীবনের কোন লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য না থাকলে সে জীবনে কখনও প্রতিষ্ঠালাভ করতে পারে না। আর লক্ষ্য থাকলে সে অনুযায়ী এগিয়ে যাওয়া সহজ হয়। অর্থাৎ লক্ষ্য এমন একটি বিষয় বা চিন্তাভাবনা যার উপর বা যাকে ভিত্তি করে বেঁচে থাকা সম্ভব হয় এবং সেই সাথে নিজের সাধ পুরণ করা যায়। দেশ ও দশের কল্যাণ সাধন করা যায়। এই দিকগুলো বিবেচনা করে আমি মনে মনে স্থির করছি আমি একজন সি, এ, অর্থাৎ চার্টার্ড এ্যাকাউন্ট্যান্ট হবো।
কারণ : আমার এ বাসনা প্রকাশের সাথে সাথে প্রশ্ন আসতে পারে কি কারণে আমি এ সিদ্ধান্ত নিলাম। এর কারণগুলো একটু বিশ্লেষণ করা দরকার। প্রথমতঃ এটা আমার সখ। আমাদের পরিবারে এই পেশার কেউ নেই। তাই আমি একটু ভিন্ন রকমের হতে চাই। দ্বিতীয়তঃ এই পেশার উপর নির্ভর করে আমি মোটামুটি স্বাচ্ছন্দে চলতে পারবো। এর আর্থিক দিকটা নিঃসন্দেহে আকর্ষণীয়। তৃতীয়তঃ একজন প্রকৃত সি,এ, এর ভূমিকা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ -তাই।
দৃষ্টিপাত : একজন সি,এ, -কে হতে হবে অত্যন্ত দায়িত্বশীল, ধীমান ও ধীর -স্থির হিসেব নিকাশে পারদর্শী। তাই অবশ্যই সৎ ও উচ্চ মানসিকতাসম্পন্ন হতে হবে। দেশের কল্যাণের স্বার্থে তাকে গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে। সরকারী আমলাদের হাতে আমাদের জনগণ যাতে নাজেহাল না হয়, বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঠেকাতে না পারে সেদিকেও দৃষ্টি রাখতে হবে। এ সব দিকগুলো মনে রেখেই আমি একজন নিষ্ঠাবান একাউন্ট্যান্ট হতে চাই।
একটা বিষয় প্রায়ই লক্ষ্য করেছি যে, বেশীর ভাগ মানুষ তাঁদের কথা ও কাজের সাথে সঙ্গতি রাখতে পারে না বা রাখে না। যেমন অনেকেই ডাক্তারী, ইঞ্জিনিয়ারিং, শিক্ষকতা প্রভৃতি পেশায় যাওয়ার আগে জনসেবা ও দুঃস্থ লোকদের দুর্দশা দূর করার কথা বলে থাকেন, কিন্তু পরবর্তীতে তা করতে দেখা যায় না। প্রত্যেক চিকিৎসকই কিছুদিন গ্রামাঞ্চলে অবস্থানের পর শহরে চলে আসেন এবং সুযোগ পেলেই বিদেশে যাবার পাঁয়তারা করেন। এটা উচিৎ নয়। এতে অসহায় মানুষ বরাবরই দুর্ভাগা রয়ে যায়। আমাদের দেশে অনেক কৃতী চিকিৎসক থাকা সত্বেও পল্লীর জনগণ আশনুরূপ চিকিৎসা পায় না। ফলে জনগণের স্বাস্থ্যের উন্নতিও হয় না। তাই এদিকটা মনে রেখে আমি স্থির সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, কাজে যোগ দেওয়ার পর যেখানেই আমাকে পাঠানো হবে, সেখানেই আমি নির্দ্বিধায় হাসি মুখে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করব।
করণীয় : আমি যদি একাউন্ট্যান্ট হতে চাই, তবে সে অনুযায়ী আমাকে তৈরি হতে হবে। তাই আমি বেশ ভালোমত পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছি। আর গণিত শাস্ত্রে বেশি সময় ব্যয় করছি। অংকটা বরাবরই আমার প্রিয় বিষয়। এ ছাড়া এ বিষয়ে আমার রেজাল্টও ভালো হয়। তবে আমি চেষ্টা করছি আরো ভালো করার জন্য।
উপসংহার : ইচ্ছা থাকলে নাকি উপায় হয়। তাই আমি আমার ঐকান্তিক ইচ্ছার সাথে অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাবো। আমার আশা, আমি সফল হবো। আমি সবার দোয়া প্রার্থী।
আমার জীবনের লক্ষ্য / তোমার জীবনের লক্ষ্য
সৎ এ্যাকাউন্ট্যান্ট হবো
এর PDF Download করুন
[ একই প্রবন্ধ অন্য বিষয়ে আবার সংগ্রহ করে দেয়া হলো ]
আমার জীবনের লক্ষ্য / তোমার জীবনের লক্ষ্য
( দেশপ্রেমি রাজনৈতিক নেতা হবো )
ভূমিকা : প্রত্যেক মানুষের জীবনে একটি লক্ষ্য থাকা একান্ত প্রয়োজন। অন্যথায় মানুষ সাফল্য অর্জন করতে পারে না। হালবিহীন নৌকা যেমন নির্দিষ্ট পথ ধরে গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পারে না, তদরূপ লক্ষ্যবিহীন মানুষ জীবন সংগ্রামে সফলতা লাভ করতে পারে না। সে জন্য প্রত্যেক মানুষকে জীবনের প্রভাতে লক্ষ্য নির্দিষ্ট করে একে বাস্তবায়ন করার জন্য তৎপর হওয়া উচিত।
আমার লক্ষ্য : ছোটবেলা থেকে ইতিহাস পড়তে খুব ভালো লাগত। সুতরাং ইতিহাস পড়তে পড়তে আমি দেশের রজনৈতিক, সামাজিক অবস্থা এবং অতীতে এ রাজনৈতিক অবস্থা কেমন ছিল বর্তমানে কেমন আছে তা জানতে শুরু করলাম এবং তখন থেকে আমার জীবনের লক্ষ্য ঠিক করলাম। দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক খবরাখবর সম্পর্কে ধারণা নিতাম। দেশের এই বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনার কথা মনে করে আমি ভবিষ্যতে রাজনীতিবিদ হওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলাম। দেশের কর্ণধরদের মুখে শোনা যায় আজকের শিশু আগামী দিনের রাষ্টনায়ক। জাতির ভাগ্য গঠন, জাতিকে সঠিক পথে পরিচালনা এবং দুঃখী মানুষের মুখে এক টুকরা হাসি ফোটানোর জন্য আমি একজন রাজনৈতিক নেতা হতে চাই।
লক্ষ্য নির্বাচনের কারণ : অনেক পেশার মধ্যে রাজনীতিকেও একটি পেশা বলে মনে করি। তবে তার মধ্যে যে ব্যতিক্রমধর্মিতা আছে তা আমাকে বিশেষভাবে আকর্ষণ করে। পরোপকারের একটি অনাবিল চেতনা একটি পেশার সংগে সম্পৃক্ত। আর সে সংগে আছে নিজেকে নিঃশেষে উজাড় করে বিলিয়ে দেয়ার সীমাহীন আনন্দ। অন্যান্য পেশার সংগে তুলনা করে একে মূল্যহীন বলে বিবেচনা করার দিন এখন আর নেই। অর্থের মাপকাঠিতে মর্যাদা পরিমাপের সমর্থক আমি নই। বরং আমি মনে করি সকল পেশার মর্যাদার এবং যে যার পেশায় যতটুকু সাফল্য লাভ করে তার ততটুকু কৃতিত্ব জীবনে কৃতিত্ব দেখানোর জন্য উপাদেয় পেশার প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন কেবল সততা ও আন্তরিকতা। পেশার সংগে অর্থের সঙ্গতি সম্পর্কের বিবেচনা করতে একথা সহজেই অনুভব করা যাবে যে, দেশের প্রচলিত ব্যবস্থায় পেশার অর্থমূল্যে জীবনধারণের ন্যূনতম ব্যবস্থা রয়েছে। তা ছাড়া পরম দয়ালু ও দয়াময়ের এতবড় বিশ্বে একটি নগণ্য মানুষের বৈধপন্থায় জীবনযাপনের কী কোনো সুযোগ রাখা হয় নি?
তবে শিক্ষকতার প্রকৃত আনন্দ অন্যত্র। একটি ছোট ফুলের গাছ কিভাবে বিকশিত হয়ে প্রস্ফুটিত ফুলের সৌরভ ছড়ায়, একটি জীবন কিভাবে দিনে দিনে পূর্ণতার দিকে পা ফেলে, একটি মানব সন্তান কি করে যথার্থ মানুষ হয়ে ওঠে এসব একান্ত কাছ থেকে দেখার দুর্লভ আছে শিক্ষকের জীবনে।
আমার কর্তব্য : পাক-ঔপনিবেশিক আমল থেকে আজকের স্বাধীনতা প্রাপ্ত বাংলাদেশে আমি বহু রাজনৈতিক নেতার জীবনাদর্শ ও তাদের কর্মপদ্ধতি পড়াশুনা করছি। তাদের কথা ভেবে দেশ ও দেশের মানুষের কথা ভেবে বাংলাদেশ ও বাঙ্গালীর গৌরব বৃদ্ধির জন্য আমি আমার জীবন বাজি রাখতে চাই। আমি জানি তার জন্য প্রচুর সাধনা ও নিরলস পরিশ্রম প্রয়োজন। কারণ নিজেকে সৈনিক হিসাবে তৈরি না করে যুদ্ধক্ষেত্রে গেলে মৃত্যু অনিবার্য। এ কথা অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে।
পরিকল্পনা : আমি রাষ্ট্রনীতি কিংবা ইতিহাস নিয়ে এম এ পাস করব। ডি, ফিল, অথবা ডি, লিট ডিগ্রীও নেব মৌলিক গবেষণা করে। তারপর প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করব।
উপসংহার : মন্ত্রী হওয়ার বাসনা আমার নেই। ইহা জীবনকে ক্লেদান্ত করে তোলে। আমি চাই ছাত্ররা লেখাপড়া শিখে বড় হোক। আমার রাজনীতি হবে শিক্ষাকে সকল রাজনীতি থেকে মুক্ত রাখা। ছাত্রদের প্রতিষ্ঠিত করার সাথে সাথে দেশপ্রেমিক ও গতিশীল হওয়ার জন্যও চেষ্টা আমার রাজনীতির আর এক মন্ত্র হবে। আমি জানি না আমার এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব কিনা। তবে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাব।
আমার জীবনের লক্ষ্য / তোমার জীবনের লক্ষ্য
দেশপ্রেমি রাজনৈতিক নেতা হবো
এর PDF Download করুন
[ একই প্রবন্ধ অন্য বিষয়ে আবার সংগ্রহ করে দেয়া হলো ]
আমার জীবনের লক্ষ্য / তোমার জীবনের লক্ষ্য
( বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হবো )
ভূমিকা : মানুষ একটি অনুসন্ধিৎসু জীব। সে তার পেশা বাছাই করে নেয়। সে ভবিষ্যৎতে কোন কর্মটি বাছাই করে নেবে সেটি তার জীবনের লক্ষ্য। প্রত্যেক মানুষের জীবনের একটি লক্ষ্য রয়েছে। একজন লক্ষ্যহীন মানুষ একটি দিকদর্শনহীন জাহাজ তূল্য। একটি জাহাজ যেভাবে দিকদর্শন যন্ত্র ছাড়া সমুদ্রে চলতে পারে না, তেমনি মানুষও জীবনের লক্ষ্য স্থির করা ছাড়া জীবন সমুদ্রে সাঁতার দিয়ে কূলের নাগাল পায় না। অর্থাৎ লক্ষ্যহীন ব্যক্তি জীবনে সফলতা লাভ করতে পারে না।
লক্ষ্যের প্রকারভেদ : প্রত্যেক মানুষের একটি লক্ষ্য থাকা উচিত। বহু মানুষের বহু রকমের লক্ষ্য থাকতে পারে। অনেকে বড় অফিসে কর্মকর্তা হতে চায়, অনেকে ডাক্তার হতে চায়, অনেকে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়, অনেকে আইনজীবি হতে চায়, অনেকে সাংবাদিক হতে চায়, অনেকে বি.সি.এস. ক্যাডার হতে চায় আবার কেউ কেউ শিক্ষক, রাজনীতিক, কুটনীতিক হতে চায়। এখনকার সময়ে আবার পাইলট, বৈমানিক, সমরবিদ কিংবা জাহাজের ক্যাপ্টেন হতে চায়। মানুষের জীবনে যেসকল নতুন নতুন ক্ষেত্র আবিষ্কার হচ্ছে তার পাশাপাশি নতুন নতুন পেশারও পরিবর্তন হচ্ছে। অতি দ্রুত গতিতে মানুষের জীবনের লক্ষ্য নির্ধারনের নতুনত্ব আসছে দ্রুত গতিতে।
জীবনের লক্ষ্যে আধুনিক পেশার প্রভাব : বর্তমান আধুনিক যুগে মানুষের বহুমুখী পেশা ও ব্যবসার সূত্রপাত হয়েছে। বহু মানুষ হাঁস-মুরগির খামার, মাছ চাষ, গরু-ছাগলের খামার স্থাপন করে নিজেদের পেশা ও জীবিকা বেছে নিচ্ছে। অনেক মানুষ গামেন্টস প্রতিষ্ঠা করে কর্মসংস্থান তৈরি করে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নিজেদের পেশা বেছে নিয়েছে। কিছু মানুষ আমদানি-রপ্তানি, ট্রলার ব্যবসা, পরিবহন ব্যবসা, জনশক্তি রপ্তানি, আধুনিক কৃষি খামার গঠন করে ফল ফসল পন্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নিজেদের পেশা বেছে নিচ্ছে। বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবসা হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম ব্যবসা।
আমার নিজের লক্ষ্য : আমি একজন ছাত্র। আমি কয়েক বছরের মধ্যে মাধ্যমিক পাশ করবো। আমারও জীবনের একটি লক্ষ্য রয়েছে। আমি ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হতে চাই। এটি আমার জীবনের লক্ষ্য। এ লক্ষ্য অর্জনের পিছনে অনেকগুলো আদর্শিক কারণ রয়েছে। সেগুলো নিচে আলোচনা করা হল। যথা-
(১) একদা আতিউর রহমান বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ছিলেন। তিনি একটি কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছোট বেলায় রাখাল বালক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের বর্তমান সমেয়র শ্রেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ। এজন্য তাকে Cow boy economist বা রাখাল বালক তুল্য অর্থনীতিবিদ বলা হয়। রাখাল বালক থেকে অর্থনীতিবিদ হওয়া আর অর্থনীতিবিদ থেকে বাংলাদেশের একজন শ্রেষ্ঠ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদমর্যাদায় উন্নিত হওযা একটি বিশাল মর্যাদার নিয়ামত বলে মনে করা যায়। তার জীবন আমাকে মুগ্ধ করেছে। তার জীবন থেকে যথেষ্ঠ উৎসাহ উদ্দীপনা বড় হওয়ার আকাঙ্খা লাভের উৎস বলে আমি মনে করি।
(২) আমাদের দেশে প্রচলিত পেশার পাশাপাশি প্রচুর নতুন পেশার উদ্ভাবন হয়েছে। আমাদের বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বিশ্বের দেশ সমূহের সমমর্যাদায় পৌঁছাতে চায়। উন্নত রাষ্ট্রের মর্যাদায় পৌঁছানের পূর্বে বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে চায়। বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে কিংবা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে হলে নতুন আর্থিক ক্ষেত্রে, নতুন পেশার উন্নয়নে নতুন কর্মসংস্থানের প্রশ্নে প্রচুর পরিমাণ আর্থিক সহায়তা দিতে হবে। সেজন্য আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হতে চাই। আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হলে তথ্য প্রযুক্তি, জনশক্তি, গার্মেন্টস, পাট, তুলা, ট্রেকস্টাইল, হাঁস, মুরগি, মাছ, গরু-ছাগলের খামার আমদানি রপ্তানিতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করে কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল করার চেষ্টা করবো। আর তখনি বাংলাদেশ ধীরে ধীরে একটি উন্নত রাষ্ট্রের মর্যাদা অর্জনে সক্ষম হবো।
আমি কীভাবে লক্ষ্য অর্জন করব : বর্তমানে আমি মাধ্যমিকে অধ্যয়নরত। ইচ্ছা আছে বাণিজ্য বিভাগে লেখা পড়া করব। মাধ্যমিকে বাণিজ্য বিভাগে পাশ করার পর আমি উচ্চমাধ্যমিকেও বাণিজ্য বিভাগে পাশ করবো। তারপর দেশের সুনানধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হব। যে কোনো মূল্যে আমাকে বি.বি.এ. ; এম.বি.এ. পাশ করতে হবে। ব্যাংকার হওয়ার নিমিত্তে যে কোনো ব্যাংকে যোগদান করতে হবে। নিজের ব্যাংকিং দক্ষতা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হওয়ার দক্ষতা অর্জন করে নিরলস কাজ করে যেতে হবে। তবেই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হওয়া সম্ভব বলে আমি মনে করি। যদি আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হতে পারি, বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল করার জন্য এবং বাংলাদেশের ঈষ্পিত উন্নয়ন অর্জনে যথেষ্ট ভূমিকা ও অবদান রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাব।
আমার জীবনের লক্ষ্য / তোমার জীবনের লক্ষ্য
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হবো
এর PDF Download করুন
- প্রবন্ধ রচনা : আমার জীবনের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য - [ Visit eNS ]
- Paragraph : My Future Plan in Life - [ Visit eNS ]
- প্রবন্ধ রচনা : জীবনের লক্ষ্য ও পাঠক্রম নির্বাচন
- Essay : Aim in Life
- অনুচ্ছেদ : আমার জীবনের লক্ষ্য
- Letter to friend telling future plan
- Paragraph : My Future Plan
- Dialogue about future plan after graduation
- জীবনের লক্ষ্য সম্পর্কে ছোট ভাইকে পত্র
- তোমার জীবনের লক্ষ্য জানিয়ে বন্ধুর কাছে চিঠি
- Letter to friend about your aim in life
- Paragraph : Ambition
- Email about aim in life
- Letter to someone on your aim in life
রচনার সৌন্দর্য ও মাধুর্যতা যেন দেশের প্রতিটি মানুষের মনে মিশে আছে।রচনা গুলো পড়ে অনেক ভালো লেগেছে ।
ReplyDeleteধন্যবাদ
DeleteThanks
ReplyDeleteWonderful easys I am proud of my country!👨
ReplyDeleteসত্যি আমি মুগ্ধ 😊
ReplyDeleteQuality of these essays is very good. I am really satisfied with these .☺️
ReplyDeletewonderful!💜👍👍
ReplyDeleteMy daughter is very benifited with it. Thanks for such a nice compose
ReplyDeleteWonderful😘😘😘😘😘😘😘😘😘
ReplyDeleteSo nice eassy
ReplyDeleteসবকটিই অসাধারণ!!! এটি খুবই সাহায্য করল আমায়
ReplyDeleteNice and wonderful essays my aim is to become a C.A
ReplyDeleteকবি হতে চাই।।এমন জীবনের লক্ষ্যের জন্য রচনা publish করলে ভালো হয়।।
ReplyDeleteBeautiful
ReplyDeleteIt helped me in assignment
ReplyDeleteআমি কোথাও কোনো মন্তব্য করিনা। কিন্তু আপনাদের লেখনিগুলো এতোটাই ভালো লাগে যে মন্তব্য না করে পারলাম না❤ আমার অনেক উপকারে আসছে এগুলো,অনেক ধন্যবাদ🌸
ReplyDeleteলেখা ভালো হয়েছে ।
ReplyDeleteSuper
ReplyDeleteসত্যি বলতে কি, আপনার লেখা গুলির মধ্যে একটা আলাদাই জিনিস রয়েছে ।
ReplyDeleteযখনই আমার কোন রচনা , গল্প কিংবা
চিঠি লেখার প্রস্তুতির প্রয়োজন পড়ে
তখনই আমি আপনার লেখা পড়ি ,
ও সকলকে আপনার লেখা পড়ার জন্য উপদেশ দেই ।
এই লেখাটা আমার খুব উপকার করেছে
এরকম লেখা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ ।
👍😊💓👌
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Delete